পররাষ্ট্র দপ্তরে ব্যাপক পরিবর্তন, থাকবে না গণতন্ত্র ও মানবাধিকার ব্যুরো
Published: 20th, April 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তাব করা হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের খসড়া এক নির্বাহী আদেশে। এতে আফ্রিকায় দেশটির প্রায় সব কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়া এবং এই মহাদেশে থাকা দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলো বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।
খসড়া নির্বাহী আদেশে জলবায়ু পরিবর্তন ও শরণার্থী নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরে কাজ করা দপ্তরগুলোর পাশাপাশি গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা দপ্তরগুলোও বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে এই নির্বাহী আদেশে সই করতে পারেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ১৬ পৃষ্ঠার খসড়া আদেশটির একটি অনুলিপি নিউইয়র্ক টাইমসের হাতে এসেছে। এই অনুলিপি অনুযায়ী, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুশৃঙ্খল পুনর্গঠন নিশ্চিত করা এবং অপচয়, জালিয়াতি ও অপব্যবহার কমিয়ে এর কাজের প্রক্রিয়া সহজতর ও গতিশীল করা নির্বাহী আদেশটির লক্ষ্য।’ আগামী ১ অক্টোবর নাগাদ পররাষ্ট্র দপ্তর এই পরিবর্তন আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পরিকল্পনার বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন কয়েকজন সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, নির্বাহী আদেশটি সইয়ের পাশাপাশি পররাষ্ট্র কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত পেশাদার কূটনীতিক এবং অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদেরও ছাঁটাইয়ের চেষ্টা করা হবে। এসব কর্মকর্তা সাধারণত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়াশিংটন সদর দপ্তরে কাজ করে থাকেন। এই মন্ত্রণালয় বিপুলসংখ্যক কর্মীকে বেতনসহ ছুটিতে পাঠানো এবং বরখাস্তের নোটিশ পাঠানো শুরু করতে পারে বলেও সাবেক এই মার্কিন কর্মকর্তারা জানান।
খসড়া নির্বাহী আদেশে নিয়োগপ্রত্যাশী কূটনীতিকদের পররাষ্ট্র দপ্তরে নিয়োগের পরীক্ষা নেওয়া বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘প্রেসিডেন্টের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে মতের মিল থাকা’— এ ধরনের নতুন কিছু মানদণ্ড ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।
খসড়া আদেশে বলা হয়েছে, নথিপত্র তৈরিতে সাহায্য করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার অবশ্যই ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে। ‘নীতি প্রণয়ন ও পর্যালোচনা এবং বাস্তবায়নযোগ্য পরিকল্পনা’ গ্রহণ করতে হবে।
প্রেসিডেন্ট সই করার আগে নির্বাহী আদেশের বিষয়বস্তুতে পরিবর্তনও আসতে পারে। গতকাল রোববার দিনের শুরুতে তাৎক্ষণিক এই নির্বাহী আদেশের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি পররাষ্ট্র দপ্তর কিংবা হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পর্ষদ।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পরর ষ ট র কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমাদের রাজনীতিতে ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে’
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ছিলেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে কখনো আপস করেননি। দুঃসময়েও তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও ন্যায়বিচারের পক্ষে দৃঢ়তার সঙ্গে অবস্থান নিয়েছিলেন। দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়ে তিনি সংগ্রাম করেছিলেন। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিতে হবে।
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় সমাজকল্যাণ ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এভাবেই স্মৃতিচারণা করেন। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী সবার ভেতর আলো জ্বেলেছেন—এমন মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হলো। কিন্তু এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা কাজে লাগাতে পারিনি। তাঁদের সুস্থ করতে পারিনি। মুক্তিযোদ্ধাদের খালি হাতে খালি পায়ে গ্রামে ফিরে যেতে হয়েছিল। দেশটাও গত ৫০ বছরে গড়েই উঠল না। গণতন্ত্র, সাম্য, সমাজতন্ত্র, ন্যায়বিচার—সবই আড়ালে থেকে গেল। আমাদের রাজনীতি নিশ্চয় ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেই রাজনীতি ভুল ছিল বলেই চব্বিশ ঘটেছে।’
শারমীন এস মুরশিদ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংস্কৃতি বিরাজমান, সেটির পরিবর্তন ঘটেনি। তরুণদের এই শিক্ষাটা মাথায় রাখতে হবে। পেছনের পচে যাওয়া প্রথাগুলো গ্রহণ করে রাজনৈতিক দল গড়তে চাইলে ভুল হবে। আদর্শের জায়গায় দাঁড়াতে হবে। এ জন্য ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পথ অনুসরণ করতে হবে।
চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে ওই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়। এই সভার মাধ্যমে গতকাল সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম। সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আমাদের হৃদয়ে বিচিত্র রেখা এঁকে গেছেন। তিনি ছিলেন আমাদের বটবৃক্ষ। দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি ছিলেন আপসহীন। এই বিষয়টি তরুণ প্রজন্মের কাছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে অক্ষয় অমর করে রাখবে।’
স্মরণসভায় বক্তব্য দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম