সংগ্রাম শেষ হয়নি, সতর্ক থাকুন: মির্জা ফখরুল
Published: 20th, April 2025 GMT
দেশে কেমন একটা অস্থিরতা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নেতাকর্মীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, আমাদের সংগ্রাম এখনও শেষ হয়নি। দেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণ হয়নি। আমরা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকার ও সংসদ পাইনি। ফলে দলকে আরও সুদৃঢ় ও শক্তিশালী করতে হবে।
রোববার রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান স্মরণে শ্রমিক দলের আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডির বাসায় আবদুল্লাহ আল নোমান মারা যান। প্রয়াত এ নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর অনুসরণীয় পথে শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের চলার আহ্বান জানান তিনি।
দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে আমাদের পরীক্ষার সময়। পত্রপত্রিকা, টেলিভিশন, টকশো– সবকিছুতে কেমন একটা অস্থিরতা চলছে। কতগুলো নির্ধারিত বিষয়কেও অনির্ধারিত করে ফেলা হয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে অনেক কিছু। আজ সংস্কার, নির্বাচন– কথাগুলো অনেক বেশি উচ্চারিত হচ্ছে। সবার দায়িত্ব, অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে সমস্যাগুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা।
শ্রমিকদের সংস্কার কোথায়– প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এত সংস্কারের কথা হচ্ছে। কিন্তু শ্রমজীবী, শ্রমিকদের কথা কোথাও শুনছি না। আমাদের ৩১ দফার মধ্যে শ্রমজীবী মানুষের কথা বলা হয়েছে। বর্তমানে সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবের মধ্যে এ নিয়ে কী আছে, তা জানি না।
মির্জা ফখরুল বলেন, কৃষক তার পণ্যের ন্যায্যমূল্য পান না, পানি পান না। যখন সেচের পানি প্রয়োজন, তখন সমস্যার সমাধান হয় না। শ্রমিকদের সন্তানরা ভালো স্কুলে যেতে পারে না; গেলেও বই পায় না। অথচ এই কথাগুলো আলোচনাই হয় না।
তিনি বলেন, খুব ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন– টেলিভিশন বলেন, টকশো বলেন, এমনকি টেলিভিশনের নাটকেও কিন্তু সাধারণ মানুষ অনুপস্থিত। শ্রমজীবীরা কোথাও নেই। অথচ এরাই দেশের বড় অংশ। ২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন মকবুল, তিনি কারখানা শ্রমিক ছিলেন। ভোলার শাওন অটোরিকশা চালাতেন; মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তারাও শ্রমিক ছিলেন।
ছাত্রদল কর্মী পারভেজের হত্যাকারীরা গণতন্ত্রের পক্ষের নয়– মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, যারা এ সময় ত্যাগী ছাত্রনেতাকে হত্যা করতে পারে, তারা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের নতুন পরিবর্তনের আন্দোলনে যুক্ত ছিল না। বাংলাদেশে যারা বিভাজন সৃষ্টি করতে চায়, তারা এ দেশের পক্ষের নয়। তারা গণতন্ত্র ও শ্রমজীবী মানুষের পক্ষের নয়।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস প্রমুখ। এ সময় আবদুল্লাহ আল নোমানের ছেলে সাঈদ আল নোমানও উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ব এনপ আল ন ম ন শ রমজ ব আম দ র ফখর ল ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।
উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’
আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।
উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।
নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।