তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রশাসনিক ভবনের সামনে কাঁথা বালিশ নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন এক শিক্ষার্থী।

তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের আধুনিক ভাষা শিক্ষা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী শের আলী।

‎রবিবার (২০ এপ্রিল) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন তিনি।

‎সরেজমিনে দেখা গেছে, ওই শিক্ষার্থী বাসা থেকে কাঁথা বালিশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে অবস্থান নিয়েছেন।

‎তিন দফা দাবিগুলো হলো- ‎‎১.

৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর আবাসন ভাতা নিশ্চিত করতে হবে; এক সপ্তাহের মধ্যে দুইটা হলের (বানী ভবন ও হাবিবুর রহমান হল) কাজ শুরু করতে হবে এবং এক বছরের মধ্যেই শেষ করতে হবে; এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ শুরু করতে হবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।‎‎

তিন দফা দাবির বিষয়ে শের আলী বলেন, “হল নাই, খাবার নাই, পানি নাই, বিদ্যুৎ নাই, গ্যাস নাই। এত কিছু নাই এর মধ্যে কোথায় যাবো আমি। এজন্য আমি কাঁথা বালিশ নিয়ে এখানে অবস্থান কর্মসূচিতে বসেছি।‎‎ আজ রাতে আমি এখানেই থাকব।”

তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে কেউ থাকুক বা না থাকুক, আমি একাই তিন দফা দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানে আছি। আমার তিন দফা দাবির কোনো দৃশ্যমান কিছু না হলে আমি এখানে এভাবেই অবস্থান করব।”

ঢাকা/হাসান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চার গুণ গতিতে বাড়ছে সাগরের উষ্ণতা

গত চার দশকে আগের চেয়ে চার গুণ দ্রুত হারে বেড়েছে বিশ্বের মহাসাগরগুলোর উষ্ণতা। সম্প্রতি ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইএসএ) পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য, যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ও ভয়াবহতা নিয়ে নতুন করে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের। গতকাল রোববার দি আর্থ ডটকমের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে বিষয়টি।

গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত প্রতি দশকে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বেড়েছিল ০.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ০.২৭ ডিগ্রিতে, যা আগের তুলনায় প্রায় চার গুণ।

এই দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষণে বিজ্ঞানীরা ইউরোপীয় স্যাটেলাইট মিশন থেকে পাওয়া ২০টি ইনফ্রারেড রেডিওমিটার ও দুটি মাইক্রোওয়েভ সেন্সরের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। পাশাপাশি জাহাজ ও ভাসমান বয়ার মাধ্যমে সংগৃহীত ডেটাও যাচাই-বাছাই করে একত্র করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমুদ্রপৃষ্ঠ তাপমাত্রার তথ্যভাণ্ডার।

সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ার ক্ষেত্রে দায়ী হিসেবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণ বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা, যেমন– আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, এল নিনো ও লা নিনা, সূর্যের চক্র। এই প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো সাময়িক প্রভাব ফেললেও দীর্ঘমেয়াদি উষ্ণতার পেছনে এগুলোর কোনো ভূমিকা নেই বলেই দেখেছেন বিশ্লেষকরা। মূলত গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণে সূর্য থেকে আসা তাপ পৃথিবীর উপরিভাগে আটকে গিয়ে সৃষ্টি করছে তাপের ভারসাম্যহীনতা। এই বাড়তি তাপের বড় অংশ শোষণ করছে সমুদ্র। ফলে দ্রুত বাড়ছে সমুদ্রের তাপমাত্রা।

ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের গবেষক ক্রিস মার্চেন্ট বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়ার এই প্রবণতা আসলে আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রতিচ্ছবি।’

সমুদ্রের এই অতিরিক্ত উষ্ণতা শুধু পরিসংখ্যানগত বিষয়ই নয়, এর রয়েছে সরাসরি প্রভাব। ঘূর্ণিঝড়কে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে গরম পানি। ফলে ঘূর্ণিঝড় হয় আরও বিধ্বংসী। উষ্ণতার কারণে মারা যাচ্ছে প্রবাল প্রাচীর। বাসস্থান পরিবর্তন করছে সামুদ্রিক প্রাণী, যার প্রভাব পড়ছে মৎস্যজীবীদের জীবিকায়। উষ্ণ পানি প্রসারিত হওয়ায় বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। এতে প্লাবনের ঝুঁকিতে পড়েছে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। বদলে যাচ্ছে বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়ার ধারা।

গবেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তন বুঝতে ও মোকাবিলা করতে হলে আরও নিখুঁত পর্যবেক্ষণ জরুরি। ইএসএ ইতোমধ্যে ‘মোটিকিউসোমা’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে, যা পৃথিবীর তাপ ভারসাম্য বিশ্লেষণ করছে। ভবিষ্যতে উন্নত স্যাটেলাইট মিশনের মাধ্যমে এই পর্যবেক্ষণ আরও কার্যকর হবে।

নতুন এই গবেষণা আবারও প্রমাণ করেছে, মানবসৃষ্ট অতিরিক্ত তাপ শোষণ করা মহাসাগরগুলোও অতিরিক্ত দূষণে নাকাল। পরিবেশবিদদের মতে, এখনই যদি কার্যকরভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো না যায়, তবে ভবিষ্যতে উষ্ণতা আরও বাড়বে এবং তার ফলাফল হবে ভয়াবহ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ