আওয়ামী লীগের এমপি শাওনের সাথে ওসি এনায়েত হোসেনের ছবি ফেসবুকে ভাইরাল
Published: 20th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জে আড়াইহাজার থানায় টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, ওই থানার অফিসার ইনচার্জ এনায়েত হোসেন লিখিত আবেদনের সঙ্গে দেওয়া টাকা নিয়ে বলছেন, ‘কম টাকা দিলে সম্মান থাকে।’
এরপর তিনি টাকাসহ আবেদনটি ড্রয়ারে রেখে দেন। এরকম একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রোববার থেকে ভোলার -৩ আসনের আওয়ামী লীগের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সাথে ওসি এনায়েত হোসেনের একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।
রোববার এনিয়ে গোটা আড়াইহাজার জুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই ফেসবুকে মন্তব্য করতে দেখা যায় যে, ভোলা থাকাকালীন ওসি এনায়েত হোসেন এমপি শাওনের নির্দেশে জুলাই আন্দোলনে ছাত্র-জনতার উপর গুলি চালিয়েছেন। সেখান থেকে পালিয়ে বিশেষ সুবিধার বিনিমরয় আড়াইহাজারে পোস্টিং নেন।
আড়াইহাজারে গত বছরের সেপ্টেম্বরে যোগদানের পর থেকে আড়াইহাজারের নিরীহ জনগনকে তিনি টাকা কামানোর মেশিন হিসেবে ব্যবহার করা শুরু করেন। থানা ধরে এনে রাতের অন্ধকারে বিভিন্ন মামলার ভয় দেখিয়ে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নেন।
তিনি চোর-ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের পরিবর্তে আড়াইহাজারের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে হত্যা, নাশকতার মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা কামানো মিশনের নামেন। এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার থানায় বিক্ষোভ হলেও একশ্রেণির সুবিধাভোগীদের জন্য তা সহজেই ধামাচাপা দেন।
সাতগ্রাম ইউনিয়নির বিপ্লব নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে হত্যা মামলার ভয় দেখিয়ে ৫ লক্ষা টাকা হাতিয়ে নেন। জালাকান্দি এলাকার পেশাদার ফটোগ্রাফার রিফাতকে বিনা কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে। হত্যা মামলা থেকে বাঁচাতে ওসি এনায়েত হোসেনকে নিরীহ রিফাতের পরিবার ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মো.
তবে এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট দাবী করে থানার ওসি ওসি এনায়েত হোসেন বলেন, একটি মহল উদ্দেশ্য প্রণীতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।’
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ আওয় ম ল গ
এছাড়াও পড়ুন:
চার গুণ গতিতে বাড়ছে সাগরের উষ্ণতা
গত চার দশকে আগের চেয়ে চার গুণ দ্রুত হারে বেড়েছে বিশ্বের মহাসাগরগুলোর উষ্ণতা। সম্প্রতি ইউরোপীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইএসএ) পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য, যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ও ভয়াবহতা নিয়ে নতুন করে ভাবনায় ফেলে দিয়েছে বিজ্ঞানীদের। গতকাল রোববার দি আর্থ ডটকমের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে বিষয়টি।
গবেষণায় দেখা গেছে, ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত প্রতি দশকে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা বেড়েছিল ০.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এই বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ০.২৭ ডিগ্রিতে, যা আগের তুলনায় প্রায় চার গুণ।
এই দীর্ঘমেয়াদি বিশ্লেষণে বিজ্ঞানীরা ইউরোপীয় স্যাটেলাইট মিশন থেকে পাওয়া ২০টি ইনফ্রারেড রেডিওমিটার ও দুটি মাইক্রোওয়েভ সেন্সরের তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। পাশাপাশি জাহাজ ও ভাসমান বয়ার মাধ্যমে সংগৃহীত ডেটাও যাচাই-বাছাই করে একত্র করা হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমুদ্রপৃষ্ঠ তাপমাত্রার তথ্যভাণ্ডার।
সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ার ক্ষেত্রে দায়ী হিসেবে বিভিন্ন প্রাকৃতিক কারণ বিশ্লেষণ করেছেন গবেষকরা, যেমন– আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, এল নিনো ও লা নিনা, সূর্যের চক্র। এই প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো সাময়িক প্রভাব ফেললেও দীর্ঘমেয়াদি উষ্ণতার পেছনে এগুলোর কোনো ভূমিকা নেই বলেই দেখেছেন বিশ্লেষকরা। মূলত গ্রিনহাউস গ্যাসের কারণে সূর্য থেকে আসা তাপ পৃথিবীর উপরিভাগে আটকে গিয়ে সৃষ্টি করছে তাপের ভারসাম্যহীনতা। এই বাড়তি তাপের বড় অংশ শোষণ করছে সমুদ্র। ফলে দ্রুত বাড়ছে সমুদ্রের তাপমাত্রা।
ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ের গবেষক ক্রিস মার্চেন্ট বলেন, ‘তাপমাত্রা বাড়ার এই প্রবণতা আসলে আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণের প্রতিচ্ছবি।’
সমুদ্রের এই অতিরিক্ত উষ্ণতা শুধু পরিসংখ্যানগত বিষয়ই নয়, এর রয়েছে সরাসরি প্রভাব। ঘূর্ণিঝড়কে দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে সাহায্য করে গরম পানি। ফলে ঘূর্ণিঝড় হয় আরও বিধ্বংসী। উষ্ণতার কারণে মারা যাচ্ছে প্রবাল প্রাচীর। বাসস্থান পরিবর্তন করছে সামুদ্রিক প্রাণী, যার প্রভাব পড়ছে মৎস্যজীবীদের জীবিকায়। উষ্ণ পানি প্রসারিত হওয়ায় বরফ গলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। এতে প্লাবনের ঝুঁকিতে পড়েছে উপকূলীয় অঞ্চলগুলো। বদলে যাচ্ছে বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়ার ধারা।
গবেষকরা বলছেন, এই পরিবর্তন বুঝতে ও মোকাবিলা করতে হলে আরও নিখুঁত পর্যবেক্ষণ জরুরি। ইএসএ ইতোমধ্যে ‘মোটিকিউসোমা’ নামে একটি প্রকল্প চালু করেছে, যা পৃথিবীর তাপ ভারসাম্য বিশ্লেষণ করছে। ভবিষ্যতে উন্নত স্যাটেলাইট মিশনের মাধ্যমে এই পর্যবেক্ষণ আরও কার্যকর হবে।
নতুন এই গবেষণা আবারও প্রমাণ করেছে, মানবসৃষ্ট অতিরিক্ত তাপ শোষণ করা মহাসাগরগুলোও অতিরিক্ত দূষণে নাকাল। পরিবেশবিদদের মতে, এখনই যদি কার্যকরভাবে গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানো না যায়, তবে ভবিষ্যতে উষ্ণতা আরও বাড়বে এবং তার ফলাফল হবে ভয়াবহ।