নেত্রকোনার মদনে ১২ বছরের এক শিশু দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে সালিশ বৈঠকে বসেন স্থানীয় মাতবররা। সেখান থেকে শিশুটিকে তুলে নিয়ে গেছে অভিযুক্ত কিশোর মাহিন মিয়াসহ কয়েকজন। কাইটাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগের সত্যতা জানতে আজ রোববার ওই গ্রামে গিয়ে শিশুটির দাদিকে পাওয়া যায়। তার সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত মাহিন মিয়ার বাড়িতে গেলে পাওয়া যায় তার চাচা সাদেক মিয়া ও বাবা আরজু মিয়াকে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটির বাবা কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান। পোশাক কারখানায় চাকরি করেন মা। শিশুটি গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ দাদির কাছে থাকে। সুযোগ বুঝে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে স্থানীয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিন মিয়া। অনৈতিক সম্পর্কের একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শারীরিক পরিবর্তন দেখে মেয়েটির খালা জানতে চাইলে মাহিনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলে। বিষয়টি নিয়ে মাহিনের বাবার সঙ্গে কথা বললে তারা মেয়েটির সঙ্গে মাহিনের বিয়ের কথা জানায়। এ ঘটনা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে সালিশ বৈঠকে বসেন গ্রামের মাতবররা। এ সময় মেয়েটিকে ঘরের ভেতর একা পেয়ে তুলে নিয়ে যায় মাহিনসহ কয়েকজন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরও তাদের সন্ধান মিলছে না।

শিশুটির দাদির ভাষ্য, তার নাতনি দুই থেকে আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি মাহিনের পরিবারকে জানালে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত দেন। পরে গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সালিশ-বৈঠকে বসলে হঠাৎ মাহিনসহ কয়েকজন ঘর থেকে তার নাতনিকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘এখন বুঝতে পারলাম আমার নাতনিকে মাহিন বিয়ে করবে না। তার পরিবারের পরামর্শে বাচ্চাটা নষ্ট করে আবার আমার নাতনিকে ফেরত দেবে। আমরা খুবই গরীব মানুষ। থানায় কিভাবে অভিযোগ করবো বুঝতেও পারছি না।’

অভিযুক্ত কিশোরের বাবা আরজু মিয়া জানান, বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু দু’জনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। খোঁজাখুঁজি করছেন তারা।

সালিশে উপস্থিত ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠকে বসে ছিলাম। পরে শুনেছি মেয়েটিকে মাহিন তুলে নিয়ে গেছে। বৈঠকে ছেলের পরিবার খুবই খারাপ আচরণ করেছে।’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসানের ভাষ্য, এ ঘটনা জানতে পেরে রোববার ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির পবিবারকে বলা হয়েছে থানায় অভিযোগ করতে। নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অলিদুজ্জামনের সঙ্গে। তিনি জানান, বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ত রক ন পর ব র ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

শিশু অন্তঃসত্ত্বা, সালিশ চলাকালে তুলে নেওয়ার অভিযোগ

নেত্রকোনার মদনে ১২ বছরের এক শিশু দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার দুই পরিবারের সিদ্ধান্তে সালিশ বৈঠকে বসেন স্থানীয় মাতবররা। সেখান থেকে শিশুটিকে তুলে নিয়ে গেছে অভিযুক্ত কিশোর মাহিন মিয়াসহ কয়েকজন। কাইটাইল ইউনিয়নের একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগের সত্যতা জানতে আজ রোববার ওই গ্রামে গিয়ে শিশুটির দাদিকে পাওয়া যায়। তার সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত মাহিন মিয়ার বাড়িতে গেলে পাওয়া যায় তার চাচা সাদেক মিয়া ও বাবা আরজু মিয়াকে। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটির বাবা কয়েক বছর আগে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান। পোশাক কারখানায় চাকরি করেন মা। শিশুটি গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ দাদির কাছে থাকে। সুযোগ বুঝে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে স্থানীয় নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহিন মিয়া। অনৈতিক সম্পর্কের একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। শারীরিক পরিবর্তন দেখে মেয়েটির খালা জানতে চাইলে মাহিনের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলে। বিষয়টি নিয়ে মাহিনের বাবার সঙ্গে কথা বললে তারা মেয়েটির সঙ্গে মাহিনের বিয়ের কথা জানায়। এ ঘটনা নিয়ে গত শুক্রবার রাতে সালিশ বৈঠকে বসেন গ্রামের মাতবররা। এ সময় মেয়েটিকে ঘরের ভেতর একা পেয়ে তুলে নিয়ে যায় মাহিনসহ কয়েকজন। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পরও তাদের সন্ধান মিলছে না।

শিশুটির দাদির ভাষ্য, তার নাতনি দুই থেকে আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিষয়টি মাহিনের পরিবারকে জানালে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত দেন। পরে গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে সালিশ-বৈঠকে বসলে হঠাৎ মাহিনসহ কয়েকজন ঘর থেকে তার নাতনিকে তুলে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘এখন বুঝতে পারলাম আমার নাতনিকে মাহিন বিয়ে করবে না। তার পরিবারের পরামর্শে বাচ্চাটা নষ্ট করে আবার আমার নাতনিকে ফেরত দেবে। আমরা খুবই গরীব মানুষ। থানায় কিভাবে অভিযোগ করবো বুঝতেও পারছি না।’

অভিযুক্ত কিশোরের বাবা আরজু মিয়া জানান, বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তারা। কিন্তু দু’জনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। খোঁজাখুঁজি করছেন তারা।

সালিশে উপস্থিত ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা বৈঠকে বসে ছিলাম। পরে শুনেছি মেয়েটিকে মাহিন তুলে নিয়ে গেছে। বৈঠকে ছেলের পরিবার খুবই খারাপ আচরণ করেছে।’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসানের ভাষ্য, এ ঘটনা জানতে পেরে রোববার ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির পবিবারকে বলা হয়েছে থানায় অভিযোগ করতে। নিখোঁজ শিশুটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অলিদুজ্জামনের সঙ্গে। তিনি জানান, বিষয়টি তাকে কেউ জানায়নি। তবে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সালিশ চলাকালে শিশুকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ