রূপগঞ্জে গৃহবধুর আত্মহত্যা, স্বামী-শাশুড়ি গ্রেপ্তার
Published: 20th, April 2025 GMT
রূপগঞ্জে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে লামিয়া আক্তার (২০) নামে এক গৃহবধূ বসত ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা আমির হোসেন বাদী হয়ে লামিয়ার স্বামী ও শাশুড়িকে আসামী করে থানায় আত্মহত্যার পরোচনায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় স্বামী মো.
নিহতের পরিবার জানা যায়, গত ৪ বছর আগে তারাব পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের রূপসী কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেনের মেয়ে লামিয়া আক্তার ও প্রতিবেশি তারা মিয়ার ছেলে শাওনের পারিবারিক ভাবে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক বিয়ে হয়।
তাদের দাম্পত্য জীবনের আরিয়ান নামে ২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই লামিয়ার স্বামী শাওন ও শাশুড়ি ফাতেমা বেগম লামিয়াকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছিল। গতকাল শনিবারও স্বামী ও শাশুড়ি মিলে লামিয়ার উপর শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং আত্মহত্যার পরোচনা দেয়।
একপর্যায়ে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে স্বামীর বসত ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দেয় লামিয়া। পরে মেয়ের জামাই ও শাশুড়ি মিলে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মেয়ের শ্বশুর বাড়ি গিয়ে মেয়ের গলায় ও শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে পুলিশে খবর দিলে লামিয়ার স্বামী ও শাশুড়ি কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন নিহতের পরিবার।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এবং নিহতের বাবা বাদী হয়ে আত্মহত্যার পরোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করলে ওই মামলার নামীয় আসামী নিহতের স্বামী শাওন ও শাশুড়ি ফাতেমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ন র য়ণগঞ জ গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজার থানার ওসির ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ ও অন্যান্য অনিয়মের অভিযোগে দু’টি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ও নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার পৃথক ভাবে কমিটি দু’টি গঠন করেন।
এরমধ্যে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজির নির্দেশে এক সদস্য এবং নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের নির্দেশে ২ সদস্যের কমিটি গঠিত হয়। দু’টি কমিটিই শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছেন।
গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আড়াইহাজার থানার ওসি মো. এনায়েত হোসেনের ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে। এতে উপজেলার পাশাপাশি জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
গোটা উপজেলায় শুরু হয় সমালোনা। সাধারণ মানুষকে বলতে শোনা যায়, ৫ আগষ্টের মতো বড় ঘটনার পরেও পুলিশের চরিত্র পাল্টায়নি।
এদিকে এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে শনিবার সকাল ১১টায় সাংবাদিকদের থানায় ডেকে ঘটনার ব্যাখ্যা দেন ওসি এনায়েত হোসেন। তিনি ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘২-৩ মাস আগে খাগকান্দা এলাকায় কিস্তির টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় অভিযোগ করেন। তবে ঘটনাটি অনেকদিন আগের হওয়ায় ভুক্তভোগীদের নাম ভুলে গেছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন, মাসুম শিকারীসহ আরও কয়েকজনের সামনে পাওনাদারের আনুমানিক দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আমার হাতে দেওয়া হয়। সেই টাকা ভুক্তভোগীকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে সেই টাকার পরিমান কম দেওয়ায় আমি বলেছি, এত অল্প টাকায় মানসম্মান থাকে না। সেই ঘটনাকে কে বা কারা ভিন্ন রূপ দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে চাপে ফেলার চেষ্টা করছে।’
এদিকে শনিবার নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটি আড়াইহাজার থানায় গিয়ে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। তদন্ত কমিটির প্রধান নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) তাসমিন আক্তার বলেন, তদন্ত শুরু করেছি।
এখনও শেষ করতে পারিনি। তদন্ত সম্পন্ন হলে প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেবো। তবে বিষয়টি তদন্তাধীন হওয়ায় তিনি এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, আড়াইহাজার থানায় ঘুষ ব্যতিত সাধারণ ডায়েরীও করা যায় না। সাধারণ ডায়েরী করতে হলেও ওসিকে নিদ্দিষ্ট পরিমান টাকা দিতে হয়। মামলা করতে গেলে সেই টাকার পরিমান আরও বেড়ে যায়।