রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে বিএনপি
Published: 20th, April 2025 GMT
ক্ষমতার ভারসাম্যের জন্য রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে বিএনপি। এর জন্য সংবিধানের ৪৮(৩) অনুচ্ছেদের পর আরেকটি অনুচ্ছেদ যুক্ত করা হবে পরবর্তী সময়ে সংসদে আলোচনার মাধ্যমে। রাষ্ট্রপতি সংসদের উভয়কক্ষের সদস্যদের ভোটেই নির্বাচিত হবেন। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ‘ইলেক্টোরাল কলেজে’র মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একমত নয় বিএনপি।
রোববার বেলা ১১টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের পর এসব কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। ২২ এপ্রিল আবার বিএনপির সঙ্গে সংলাপ হবে।
এর আগে দুপুরে সংলাপের বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, টানা দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর পদে দায়িত্বপালন করে একবার বিরতি দিয়ে আবারও দায়িত্বে আসতে পারবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে এমন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাব ‘নট মোর টু কনজিকিউটিভ টার্ম’ অর্থাৎ পরপর দু’বারের বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে যদি দু’বারের পর একবার বিরতি হয় তার পরবর্তী সময়ে যদি জনগণ নির্বাচন করে সেই পার্টিকে মেজরিটি পার্টি হিসেবে সেই পার্টি যদি সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে সেই একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী হতেও পারেন। কিন্তু কথা হচ্ছে কেন ধরে নিচ্ছেন, একই লিডার বা একই ব্যক্তি বারবার হবেন। আমরা তো এখানে সুযোগটা রাখতে চাই।
একই ব্যক্তি সরকার প্রধান, দলের প্রধান ও সংসদ নেতা হতে পারবেন না- ঐকমত্য কমিশন এই প্রস্তাবে বিএনপি একমত নয় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, আমরা বিষয়টি উন্মুক্ত রাখতে প্রস্তাব দিয়েছি।
তিনি বলেন, একই ব্যক্তি সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধান হতে পারবে না- এমন চর্চা আমরা দেখি না। যুক্তরাজ্যেও আমরা দেখি, পার্টি প্রধানকে সরকারপ্রধান। এটি গণতান্ত্রিক চর্চা। যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন হয় এবং নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রচলন করা যায়, তাহলে সেই ভোটে যারা ক্ষমতায় আসবে, মনে করতে হবে জনগণ তাদের সেই ক্ষমতা দিয়েছে।
বিএনপি সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব করেছে জানিয়ে সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, সেখানে ধর্মনিরপেক্ষ বা বহুত্ববাদ কোনোটাই নেই। তবে, কমিশন তাদের প্রস্তাবে- স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে থাকা সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের কথা যুক্ত করতে বলেছেন। আমরা সেখানে একমত হয়েছি।
সালাহউদ্দিন বলেন, সংবিধান জনগণের মৌলিক অধিকার হিসেবে ইন্টারনেট প্রাপ্তির বিষয়ে একমত বিএনপি। তবে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হয় রাষ্ট্রকে। মৌলিক অধিকারের বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়টিও দেখতে হবে। তাই আমরা বলেছি, সংবিধানের অনেকগুলো বিষয় যুক্ত না করে, যা রাষ্ট্র বাস্তবায়নের সক্ষমতা রয়েছে তাই করতে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, সংস্কার নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বেশকিছু বিষয়ে আমরা কাছাকাছি এসেছি। কিছু কিছু বিষয়ে তাদের সঙ্গে দ্বিমত জানিয়েছি। গণতন্ত্রে মত-দ্বিমত থাকাই স্বাভাবিক। কারণ আমরা বাকশালে বিশ্বাস করি না। যেখানে এমন কিছু করা হয়, যাতে সবাই একমত হতে হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশ ও জনগণের স্বার্থ চিন্তা করে যা সঙ্গত ও উত্তম তেমন কিছুই হওয়ায় উচিত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ঐকমত য ক প রস ত ব ব এনপ সরক র ক ষমত র সদস
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ প্রণয়নের পর দ্রুতসময়ে নির্বাচনে একমত খেলাফত মজলিস-এনসিপি
মৌলিক সংস্কারের সম্পন্ন করে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদ প্রণয়ন করে দ্রুতসময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা করার বিষয়ে একমত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস।
আজ রোববার রাজধানীর পুরানা পল্টনে খেলাফতে মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুই দলের নেতাদের বৈঠকে আটটি বিষয়ে একমত হন তারা। সংলাপ শেষে দুই দলের পক্ষ থেকে এ সব বিষয় জানানো হয়েছে। বৈঠকে এনসিপির পক্ষে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফ উদ্দিন মাহদি উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ বলেন, ‘আমরা মৌলিক সংস্কারে একমত হয়েছি। সবাই মিলে ঐক্যমতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ হবে এবং এর পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যেন বোঝাপড়া থাকে, এ সব বিষয়ে কথা হয়েছে।’
খেলাফত মজলিসের প্রচার ও তথ্য সম্পাদক আবদুল হাফিজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঐক্যমত্যে পৌঁছানো দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখ রয়েছে- চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের মর্যাদার সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে, আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা এবং পারিবারকে পুনর্বাসন করতে হবে। গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিবাদী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করতে হবে ও তাদের রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। এ লক্ষ্যে জুলাই অভ্যুত্থানকালীন সময়ের মত জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালীন গণহত্যা, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, পিলখানায় বিডিআর হত্যাসহ বিগত ১৫ বছরে গুম, খুন, হত্যায় জড়িতদের দ্রুত বিচার করতে হবে এবং আলেম-উলামাসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার করতে হবে।
সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ১৪ টাকা বৃদ্ধি ও শিল্পখাতে নতুন গ্যাস সংযোগে অতিরিক্ত ৩৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্ব সম্প্রদায়কে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ভারতীয় মুসলমানদের সম্পদ লুট ও ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের জন্য ভারতের মুসলিম ওয়াকফ সংশোধনী বিল বাতিল করতে হবে। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।