জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি–সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় স্থগিত
Published: 20th, April 2025 GMT
জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতি–সংক্রান্ত হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক আজ রোববার এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আবেদনটি আগামী ১৮ মে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানি করতে বলা হয়েছে।
পদন্নোতির বিধান না থাকায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও অধিদপ্তরের অধীন প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাডারবহির্ভূত গেজেটেড ও নন–গেজেটেড কর্মকর্তা–কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা ২০২০–এর দুটি সিরিয়াল (২৭ ও ২৮) চ্যালেঞ্জ করে গত বছর ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টর মো.
এই রায়ের বিরুদ্ধে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ১৫ এপ্রিল লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন। আজ আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম শুনানিতে ছিলেন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সব কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে। হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। ফলে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টররা জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন না। এ পর্যায়ে মামলার বিষয়বস্তু নিয়ে আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকে না।
উল্লেখ্য, পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত, ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।
গত বুধবার থেকে এসব দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপ ল ব ভ গ র চ ম ব র ম হ ম মদ আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিলের নিশানায় কারা, কী তাঁদের অপরাধ
চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন বিভাগের কর্মকর্তারা শত শত শিক্ষার্থী ও সম্প্রতি স্নাতক ডিগ্রি অর্জনকারীদের ভিসা বাতিল করেছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছেন।
এই শিক্ষার্থীদের অনেকেই গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ও ফিলিস্তিনের সপক্ষে ২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন। অন্যরা ভিসা বাতিল বা গ্রেপ্তারের শিকার হয়েছেন ফিলিস্তিনের সঙ্গে পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট থাকায় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গাজার প্রতি সমর্থন জানানোর কারণে।
ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, এই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসগুলোতে ইহুদিবিরোধিতা ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থী, আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা। অথচ গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত অনেক বড় বিক্ষোভেই সম্মুখসারিতে ছিলেন ইহুদি অধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠন।ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযোগ, এই শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসগুলোতে ইহুদিবিরোধিতা ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তবে এ অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন শিক্ষার্থী, আইনজীবী ও অধিকারকর্মীরা। অথচ গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত অনেক বড় বিক্ষোভেই সম্মুখসারিতে ছিলেন ইহুদি অধিকারকর্মী ও বিভিন্ন সংগঠন।
কোনো কোনো শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে আইন লঙ্ঘনের ছোটখাটো ঘটনায়, যেমন টিকিট বা ট্র্যাফিক–সংক্রান্ত নিয়মকানুন লঙ্ঘনের দায়ে।
কত শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হয়েছে
গত মার্চের শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, প্রশাসন প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করেছে। তবে এ সংখ্যা তাঁর দেওয়া পরিসংখ্যানের চেয়ে অনেক বেশি।
এ নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের পরিসংখ্যানে পার্থক্য রয়েছে। ভিসা বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ সংখ্যার তথ্য দিয়েছে ‘আমেরিকান ইমিগ্রেশন ল ইয়ারস অ্যাসোসিয়েশন’। তাদের হিসাবমতে, মার্কিন ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট পরিচালিত ‘স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেমস (এসইভিআইএস)’ নামের তথ্যভান্ডার থেকে ৪ হাজার ৭০০–এর বেশি শিক্ষার্থীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
এমনকি অধিকতর রক্ষণশীল হিসাবেও এ সংখ্যা এক হাজারের বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। দ্য ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব ফরেন স্টুডেন্ট অ্যাডভাইজারসের (এনএএফএসএ) অনুমান, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির মুখে রয়েছেন ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী।
আবার উচ্চশিক্ষা বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রকাশনা ‘ইনসাইড হাইয়ার এড’–এর তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮৯ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল হয়েছে।
ক্ষতির মুখে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
ইনসাইড হাইয়ার এড বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০টির বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ভিসা বাতিলের শিকার হয়েছেন।
এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় যেমন রয়েছে, তেমন রয়েছে ওহাইও স্টেট ইউনিভার্সিটি ও ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের মতো বৃহৎ সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। রয়েছে কিছু ছোট লিবারেল আর্টস কলেজও।
এমন ঢালাও পদক্ষেপ (ভিসা বাতিল ও গ্রেপ্তার) নানা আইনি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন এবং এতে সঠিক প্রক্রিয়া (ভিসা বাতিল) ও যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।মোহাম্মদ আলী সাইদ, অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ওয়াশিংটনভিত্তিক একটি সংগঠনের কর্মকর্তাভিসা বাতিল কেন করা হলো ও এর বিকল্প কী
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, তারা ক্যাম্পাসগুলো অধিকারকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে যাওয়া থেকে রক্ষার চেষ্টা করছে।
গত ২৮ মার্চ রুবিও বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রে অধিকারকর্মী আমদানি করতে চাই না। তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) এখানে পড়তে আসেন। তাঁরা এখানে আছেন ক্লাসে যাওয়ার জন্য। অ্যাক্টিভিস্টদের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য তাঁরা এখানে থাকেন না। এসব আন্দোলন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কার্যক্রম বিঘ্নিত ও ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে নিজেদের মধ্যে এভাবে বন্ধন সৃষ্টি করেন বিক্ষোভকারী এ শিক্ষার্থীরা। ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি, সেন্ট লুইস, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪