কেশবপুরে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিককে মারপিটের অভিযোগ
Published: 20th, April 2025 GMT
যশোরের কেশবপুরে খবর প্রকাশ করার জেরে সোহেল পারভেজ নামের এক সাংবাদিকের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকের বাবা আজ রোববার দুপুরে কেশবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
হামলার শিকার সাংবাদিক সোহেল পারভেজ দৈনিক সকালের সময়ের কেশবপুর প্রতিনিধি এবং কেশবপুর থেকে প্রকাশিত দেশ জনতার কথা পত্রিকার মফস্সল সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার মঙ্গলকোট ইউনিয়নের চুয়াডাঙ্গা গ্রামে।
জানতে চাইলে কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার বুড়ুলিয়া বাঁধের ওপর একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন সোহেল পারভেজ। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা ইমরান গাজী, তৈয়বুর শেখ, শাহিন বিশ্বাস, সাদ্দাম বিশ্বাস, ফারুক সরদারসহ কয়েকজন তাঁর ওপর চড়াও হন। কেন বিভিন্ন সময়ে খবর লেখেন এবং এলাকার একটি সালিস বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছেন—এ কথা জানতে চেয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁকে পেটানো হয়। তিনি রাস্তায় পড়ে গেলে টেনেহিঁচড়ে মাঠের মধ্যে নিয়ে আরেক দফা মারধর করা হয়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গা ফুলে গেছে। বুকের বাঁ পাশে আঘাত লেগে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমরান গাজী বলেন, গ্রামের লোকজন একটি সালিস করেছিলেন। ওই সালিসে তিনজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছিল। সোহেল পারভেজ সেখান থেকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদার দাবি করেছিলেন। এ কারণে এলাকার লোকজন তাঁকে মারধর করেছেন। তিনি মারধরের সময় উপস্থিত ছিলেন, তবে গায়ে হাত দেননি বলে দাবি করেন।
আহত সোহেল পারভেজ বলেন, এলাকার চিহ্নিত ওই ব্যক্তিরা দখলবাজি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে আসছেন। তাঁরা দুর্ধর্ষ প্রকৃতির মানুষ। তিনি বিভিন্ন সময় অপকর্মের খবর লিখলে তাঁরা তাঁকে অব্যাহতভাবে হুমকি দিতে থাকেন। এর জেরে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁকে ঘিরে ধরে মারধর করেন। এলাকার লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অ্যাম্বুলেন্স আনার পথে তাঁরা অ্যাম্বুলেন্সের গতিরোধ করেন। এরপর অ্যাম্বুলেন্সটি অন্য পথ দিয়ে ঘুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সোহেল পারভেজকে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনার পর তিনি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। চাঁদা দাবির অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক শবপ র এল ক র উপজ ল ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ব্যবসায়ী খুন
সিলেটের বিশ্বনাথে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে নিপেশ তালুকদার (৪২) নামে এক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী (ফেরিওয়ালা) নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পীরের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে রাত ১১টায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছে পুলিশ। নিহত নিপেশ তালুকদার সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার সুনামপুর গ্রামের সানন্দ তালুকদারের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পরিবার নিয়ে সিলেটের জালালাবাদ থানার তেমুখিস্থ খালেদ মিয়ার বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় ভাড়ায় বসবাস করে আসছিলেন।
প্রাথমকিভাবে ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে সর্বস্ব লুটে নিয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত নিপেশ তালুকদারকে স্থানীয়রা বাবু নামে চিনতেন। তিনি (নিপেশ) প্রতিদিন বাইসাইকেলে করে বাজারে বাজারে পান, সুপারি, সিগারেট, কয়েল ইত্যাদি ফেরি করে বিক্রি করতেন। রোববারও সন্ধ্যায় একইভাবে বাইসাইকেল দিয়ে মালামাল বিক্রি শেষে পীরের বাজারের পশ্চিমে যাওয়া মাত্রই অজ্ঞাতনামা ছিনতাইকারীরা তার বুকের বাম পাশে ছুরিকাঘাত করে মালপত্র ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় রক্তাক্ত অবস্থায় পীরের বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুছ আলীর চায়ের দোকানে দৌড়ে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচানোর আকুতি জানান। কিন্তু লোকজন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার আগেই তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে একদল পুলিশসহ রাত ১১টার দিকে সিলেটের ওসমানীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান ও বিশ্বনাথ থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে তারা লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী হত্যার সত্যতা স্বীকার করে সমকালকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইকারীরাই তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।