Prothomalo:
2025-04-20@15:33:59 GMT

পিঁপড়া কতটা বুদ্ধিমান

Published: 20th, April 2025 GMT

ছোট পিঁপড়ার দল দেখতে দারুণ লাগে। সারিবদ্ধ ও দলবদ্ধভাবে ঘুরে বেড়ায় পিঁপড়া। খুদে এই প্রাণী দিনরাত পরিশ্রম করে চলে। আর তাই তো যেখানেই মিষ্টি বা চিনিযুক্ত খাবার রাখুন না কেন, পিঁপড়া সেদিকে যাবেই। আপাতদৃষ্টে ক্ষুদ্র ও সাধারণ মনে হলেও পিঁপড়ার সমাজব্যবস্থা, যোগাযোগ ও সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বিজ্ঞানীদের বিস্মিত করছে অনেক বছর ধরেই।

পিঁপড়াকে মানুষের চেয়েও সামাজিক জীব বলা হয়ে থাকে। কারণ, কঠিন পরিশ্রমের পাশাপাশি সুসংগঠিত একটি কলোনিতে বাস করে পিঁপড়া। প্রতিটি কলোনিতে একটি ‘রানি পিঁপড়া’ থাকে। রানি পিঁপড়াকে ঘিরে গড়ে ওঠে একেকটি কলোনি। আর শ্রমিক পিঁপড়া খাবার সংগ্রহ, বাসা তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণসহ বাচ্চার যত্ন করে। সৈনিক পিঁপড়া কলোনিকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করে। শ্রম বিভাজনের মধ্য দিয়ে পিঁপড়ার কলোনিতে স্থিতিশীলতা দেখা যায়। পিঁপড়া একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফেরোমন নামের রাসায়নিক সংকেত ব্যবহার করে। খাবারের সন্ধান, বিপৎসংকেত বা কলোনির সদস্যদের মধ্যে বার্তা প্রেরণের জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের ফেরোমন নিঃসরণ করে। এই রাসায়নিক সংকেত এতটাই সুনির্দিষ্ট যে অন্যান্য পিঁপড়া সহজেই বার্তাটি বুঝতে পারে ও সেই অনুযায়ী কাজ করে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পিঁপড়ার এই রাসায়নিক যোগাযোগব্যবস্থা তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বেশ উন্নত রূপ।

পিঁপড়া তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। খাবারের সন্ধানে যাওয়ার সময় বাধার সম্মুখীন হলে নতুন পথ তৈরি করার মতো কাজ খুব সহজে করতে পারে পিঁপড়ার দল। গবেষণায় দেখা গেছে, পিঁপড়ার স্মৃতিশক্তি বেশ উন্নত। তারা একবার খাদ্যের উৎসের সন্ধান পেলে সেই পথের তথ্য দীর্ঘ সময় মনে রাখতে পারে ও আবার সেখানে ফিরে যেতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, পিঁপড়ার মস্তিষ্কের গঠন ছোট হলেও তাদের নিউরনের সংযোগ অত্যন্ত কার্যকর। এর ফলে পিঁপড়া সহজেই শেখার পাশাপাশি মনে রাখতে পারে।

পৃথিবীর প্রায় সব পরিবেশেই পিঁপড়ার অস্তিত্ব দেখা যায়। মরুভূমির তীব্র তাপ থেকে শুরু করে শীতল বনভূমির প্রতিকূল পরিবেশেও নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে পিঁপড়া। এই অভিযোজনক্ষমতা পিঁপড়ার বুদ্ধিমত্তার আরেকটি প্রমাণ বলে মনে করা হয়।

সূত্র: ইএল পেইস ডটকম, সায়েন্স ডট অর্গ, সায়েন্টিফিক আমেরিকান

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমাকে হ্যান্ডকাফ পরানো অমর্যাদাকর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হ্যান্ডকাফ দেখিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেছেন, ‘আমি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, আমাকে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছে। এটা আমার জন্য লজ্জাজনক ও অমর্যাদাকর।’ 

জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যার অপরাধের মামলায় রোববার অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে শাজাহান খানকেও ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এ সময় হাতকড়া পরানো নিয়ে তর্কে জড়িয়ে পড়েন আসামি, পুলিশ, প্রসিকিউশন।

এর আগে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শাজাহান খান, হানাসুল হক ইনুসহ ১৮ জনকে এদিন প্রিজন ভ্যান থেকে হাতকড়া পরিয়ে ট্রাইব্যুনালের হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে দুপুর ১২টার দিকে তাদের তোলা হয় কাঠগড়ায়। এর মধ্যে শাজাহান খানসহ কয়েকজনকে হাতকড়া পরানো অবস্থায় কাঠগড়ায় নেওয়া হয়। 

ট্রাইব্যুনালে আসামিপক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায় সাবেকমন্ত্রী-এমপিদের পেছনে হাতমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। যা লজ্জাজনক ও অমর্যাদাকর।  

এদিকে ট্রাইব্যুনালে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে এসব আসামিদের হ্যান্ডকাফ, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরানো হয়েছে। তবে ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, সামনের দিনে এখানে আর হ্যান্ডকাফ পরানো যাবে না। যারা এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

শাহজাহান খান বলেন, ‘অতীতে আমরা রাজাকারদের হাতকড়া পরাইনি, আমাদের কেন হাতকড়া পরানো হয়েছে? এটা লজ্জাজনক।’ 

এ সময় মুহম্মদ ফারুক খানের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, ইতোপূর্বে এই আসামিদের হ্যান্ডকাফ ছাড়াই ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হত। কিন্তু কিছুদিন ধরে তাদের হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ট্রাইব্যুনালে আনা হচ্ছে। বিশেষ করে আজ কাঠগড়ায় হাজির করার পরেও কয়েকজন হ্যান্ডকাফ পড়ানো অবস্থায় ছিলেন। 

এক পর্যায়ে পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য জানতে চান ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান। পুলিশের দুই সদস্য বলেন, পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশনা রয়েছে আসামিদের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট ও হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিতে হবে।

চেয়ারম্যান বলেন, উনাদের হ্যান্ডকাফ পরানোর প্র্যাকটিস তো এই ট্রাইব্যুনালে নেই, পরাচ্ছেন কেন? 

ট্রাইব্যুনালকে পুলিশ সদস্য নুরুন্নবী জানান, পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিদের হ্যান্ডকাফ, হেলমেট ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরে এভাবে হাজির করা হয়েছে। 

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, আসামিদের নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের হ্যান্ডকাফ পরানোর নিয়ম রয়েছে। আর কোর্টরুমে আসার আগেই সেটা খোলা হয়। তবে পুলিশ সদস্যরা আসামিদের আজকের আচরণ নিয়ে যেটা আমাদের বলেছেন, তা বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা। 

এ সময় শাহজাহান খান বলেন, প্রিজন ভ্যান থেকে নামার আগেই আমাকে পেছনে দুই হাতমোড়া করে হ্যান্ডকাফ পরানো হয়েছে। আর এজলাসে উঠানোর পর হ্যান্ডকাফ খোলা হয়েছে। আমি তখন পুলিশকে আপত্তি জানিয়ে বলেছি, তোমরা আমাকে নামার আগেই হ্যান্ডকাফ পরাচ্ছো কেন? তাহলে আমি কীভাবে গাড়ি থেকে নামবো। তারা আমার কোনো কথা শুনেনি। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। পরিবারের আরও ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। এই দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আমার ন্যূনতম মর্যাদাটুকু চাই। সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এ সময় প্রশ্ন করেন, ‘আওয়ামী লীগ কি নিষিদ্ধ দল?’

এদিন এই মামলার ১৭ আসামিকে কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, আনিসুল হক, ড. আব্দুর রাজ্জাক, কামরুল ইসলাম, মুহাম্মদ ফারুক খান, সাবেক দুই উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, ডা. দীপু মনি, গোলাম দস্তগীর গাজী, বিচারপতি এ এইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, সাবেক এমপি সোলায়মান মোহাম্মদ সেলিম, সাবেক সচিব মো. জাহাংগীর আলম। 

এছাড়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ