বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ভূয়া মেইল পাঠিয়ে হয়রানী এবং ফেসবুক পেইজ খুলে সেখানে শিক্ষার্থীদের হয়রানী করাই ছিল তার প্রধান পেশা ও নেশা। 

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের চৌকস টিমের অভিযানে ধরা পড়েছে সেই সাইবার দুর্বৃত্ত। তার নাম আবদুল্লাহ আল জুনায়েদ (২১)। 

গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বগুড়ার ঠনঠনিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অপপ্রচার চালানোর কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। 

এ ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের এস আই ইমরান হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘Drake For a reason’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদ মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং বিদেশে পড়তে যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছিল। 

সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে স্কলারশিপসহ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারি ‘Drake For a reason’ নামের ওই ফেসবুক পেজে ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন পোস্ট দেওয়া হয়। 

সেখানে বলা হয়, তিনি নাকি প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছেন। পরদিনই ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর স্কলারশিপ পাওয়া কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, তার রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে এবং এতে ফেসবুক পোস্ট ও ই-মেইলের প্রভাব রয়েছে। 

এই ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা পুলিশের নিকট অভিযোগ জানালে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত চক্র ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ হ্যাক করে সংরক্ষিত ব্যক্তিগত নথি ও লেখা চুরি করে সেগুলো ভুয়া ও বানানো বলে প্রচার করে। শুধু এই শিক্ষার্থীই নয়, দেশের আরও প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ছাত্রছাত্রীর তথ্য রয়েছে চক্রটির হাতে, যারা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। 

এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তাদের ভিসা ও ভর্তি বাতিলের জন্য বিদেশি দূতাবাস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ই-মেইল করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার এই চক্রের মূল হোতাকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দেশের অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অপতৎপরতার প্রমাণ মিলেছে।

সিএমপি’র সাইবার ইউনিট জানায়, অনলাইনে অপপ্রচার এবং সাইবার অপরাধ দমনে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ সব ক প

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে দুর্ধর্ষ সাইবার প্রতারক গ্রেপ্তার

বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ভূয়া মেইল পাঠিয়ে হয়রানী এবং ফেসবুক পেইজ খুলে সেখানে শিক্ষার্থীদের হয়রানী করাই ছিল তার প্রধান পেশা ও নেশা। 

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের চৌকস টিমের অভিযানে ধরা পড়েছে সেই সাইবার দুর্বৃত্ত। তার নাম আবদুল্লাহ আল জুনায়েদ (২১)। 

গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বগুড়ার ঠনঠনিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অপপ্রচার চালানোর কাজে ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। 

এ ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরের খুলশী থানায় সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩-এর বিভিন্ন ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের এস আই ইমরান হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘Drake For a reason’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদ মেধাবী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং বিদেশে পড়তে যাওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছিল। 

সম্প্রতি চট্টগ্রামের একটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে স্কলারশিপসহ ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায়। কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারি ‘Drake For a reason’ নামের ওই ফেসবুক পেজে ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন পোস্ট দেওয়া হয়। 

সেখানে বলা হয়, তিনি নাকি প্রতারণার মাধ্যমে বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছেন। পরদিনই ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর স্কলারশিপ পাওয়া কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে, তার রিকমেন্ডেশন লেটার নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে এবং এতে ফেসবুক পোস্ট ও ই-মেইলের প্রভাব রয়েছে। 

এই ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা পুলিশের নিকট অভিযোগ জানালে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে অভিযুক্ত চক্র ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ হ্যাক করে সংরক্ষিত ব্যক্তিগত নথি ও লেখা চুরি করে সেগুলো ভুয়া ও বানানো বলে প্রচার করে। শুধু এই শিক্ষার্থীই নয়, দেশের আরও প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ছাত্রছাত্রীর তথ্য রয়েছে চক্রটির হাতে, যারা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেয়েছে। 

এসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে তাদের ভিসা ও ভর্তি বাতিলের জন্য বিদেশি দূতাবাস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ই-মেইল করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার এই চক্রের মূল হোতাকে বগুড়া থেকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামে আনতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। 

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপরাধে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দেশের অসংখ্য মেধাবী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অপতৎপরতার প্রমাণ মিলেছে।

সিএমপি’র সাইবার ইউনিট জানায়, অনলাইনে অপপ্রচার এবং সাইবার অপরাধ দমনে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং এ বিষয়ে জিরো টলারেন্স নীতির ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ