কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় গণপিটুনি ও ছুরিকাঘাতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। মুঠোফোন চুরির অভিযোগে তাঁকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। আজ রোববার সকালে সকালে টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম মো. নজিমুল্লাহ (২৫)। তিনি টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত রহিম উল্লাহর ছেলে। আহত অবস্থায় টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, এক ব্যক্তির মুঠোফোন চুরির অভিযোগ তুলে সকালে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি নজিমুল্লাহকে গণপিটুনি দেন। একই সময়ে বুকের ডান পাশে ছুরিকাঘাতে আহত হন নজিমুল্লাহ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নজিমুল্লাহর হাতেই ছুরিটি ছিল। পিটুনি দেওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে ছুরিটি নজিমুল্লাহর বুকে ঢুকে পড়ে। এরপর বাসিন্দারা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এহতেশামুল হক বলেন, ‘নিহত নজিমুল্লাহকে আমি চিনি। তাঁর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ নিয়ে একাধিক সালিসও করেছি। তবে চুরির অভিযোগে তো কাউকে হত্যা করা যায় না।’

নিহত মো.

নজিমুল্লাহর মা এলমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলে ফজরের নামাজের পর বাজারে যাচ্ছিল। তাঁকে চুরির অপবাদে পিটুনি দিয়ে এবং ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।’

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাঈমা সিফাত প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর বুকের ডান পাশে ছুরিকাঘাতের জখম ছিল। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে গেছে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘নিহত নজিমুল্লাহর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণপ ট ন য বক র

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে: দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে, তা না হলে এই ব্যাধি থেকে সমাজ মুক্তি পাবে না।

রোববার দুপুরে নীলফামারী জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা প্রশাসন ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পুরোনো দুর্নীতির পেছনে বেশি সময়ক্ষেপণ না করে, ভবিষ্যতে দুর্নীতি রোধের জন্য কর্মপরিকল্পনা নিয়েছে দুদক। অতীত ও বর্তমান সময়ের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান শক্ত করার পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে দুর্নীতি না হয়, সে জন্য কাজ করছে দুদক। দুদকের কোথাও দুর্নীতি থাকলে, তাও ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতিকে মন থেকে ঘৃণা করতে হবে। তা না হলে এ সংকট কাটবে না। তিনি আগামী প্রজন্মকে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ারও আহ্বান জানান।

গণশুনানিতে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের ওপর অসন্তোষ প্রকাশ এবং দুদকের অভিযান পরিচালনার ঘোষণা দেওয়া হয়। গণশুনানিতে সৈয়দপুর উপজেলার গোলাহাট এলাকায় বিভিন্ন সেবা গ্রহণকারী একাধিক অভিযোগ তুলে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান। 

অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মুহাম্মদ আকবার আলী আজিজী, মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহসিনসহ দুদকের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক তালেবুর রহমান বক্তব্য দেন। এর পর নীলফামারী সদর উপজেলার সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবার মান নিয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩১টি দপ্তরের ৮১টি অভিযোগ উত্থাপিত হয় এবং সংশিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ অভিযোগের বিষয়ে জবাবদিহি করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ