ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি
Published: 20th, April 2025 GMT
ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী রবিনের মা রহিমা বেগম বলেন, ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে আমার আত্মীয় সাধনা বেগম সাধুনী আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। নানা আলোচনা হয় তার সঙ্গে। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি আমাদের ছোট ছেলে মো.
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পর অল্প টাকা সংগ্রহের কথা জানালে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার সময় দালাল মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামসহ কয়েকজন আমাদের আদাবরের বাসায় আসেন। এসময় আমাদের ছেলে রবিনের পাসপোর্ট ও নগদ ৫ লাখ টাকা নেয় তারা। তখন দিনা ও সাধনা বলেন, দালাল মনির রবিনকে সঙ্গে করে নিয়ে ইতালি কর্মস্থলে যাবে। রবিনকে চাকরিতে যোগদান করিয়ে আবার যখন ঢাকায় ফিরবে তখন বাকি ৯ লাখ টাকা দিলেই হবে। এর এক সপ্তাহ পর ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রবিনকে নিয়ে দালাল মনির শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশে যায়।
এসময় রবিনের বাবা বলেন, কিছু দিন পর খবর পেলাম ইতালি না নিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে ছেলেকে। আটকাবস্থায় আমাদের সন্তানকে ভয়ানক শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন চলাকালীন সময়ই তারা ফোনে রবিনকে আমাদের সঙ্গে কথা বলায় টাকা পাঠানোর জন্য। রবিন নির্যাতনের যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে আমাদের জনায়- তোমরা দ্রুত টাকা না পাঠালে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে!
তিনি বলেন, একথা জানার পর আমরা মনির ও সাধনাকে বলি তোমরা আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনো। তাতে আমাদের সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়! সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে তখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন তারিখে মনিরের বাবা কালাম হাওলাদার, মনিরের স্ত্রী দিনা ইসলাম, সাধনার মেয়ে রেখা আক্তার ও মনিরের বোন সিমার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। যার মানি রিসিট আছে। এছাড়াও পরবর্তীতে নগদে আরও টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা নেয় তারা।
এত টাকা দেওয়ার পরও গত বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের ধারণা- এই মানব পাচারকারীরা আমাদের আদরের ধন রবিনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এমতাবস্থায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাছে ভিক্ষা চাই, আমাদের সন্তানকে ফিরে পেতে তারা যেন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করে।
রবিনের বাবা আরও বলেন, প্রায় এক বছর ধর ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। ছেলের সন্ধানে সংশ্লিষ্ট এম্বাসি এবং দপ্তরে যোগাযোগ করলে কোনো সহায়তা পাইনি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।
সংবাদ সম্মেলনে রবিনের পরিবারের সদস্য ছাড়াও তার স্কুল শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন র র আম দ র রব ন র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ, আটক ১
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বেলতলা নামক স্থান থেকে ভারত থেকে অবৈধভাবে আনা ট্রাক ভর্তি উন্নত মানের শাড়ি, টিস্যু জর্জেট থানকাপড় ও চায়না ক্লে পাউডারসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় আটক করা হয়েছে ট্রাকের হেলপার মফিজুল ইসলাম ডাবলুকে।
জব্দকৃত মালামালের বাজার মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ ২০ হাজার ৬০০ টাকা বলে জানায় পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় পুলিশ সুপার কনফারেন্স রুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তথ্য জানান, সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
এর আগে বুধবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে কলারোয়া উপজেলার বেলতলা নামক স্থান থেকে ট্রাক ভর্তি উক্ত মালামালসহ হেলপারকে আটক করা হয়।
আটক ট্রাক হেলপার মফিজুল ইসলাম ডাবলু (৩৫) সাতক্ষীরা শহরের মধুরমোল্লারডাঙ্গী এলাকার মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী ভারত থেকে বিপুল পরিমাণ শাড়ি ও থানকাপড়সহ বিভিন্ন মালামাল নিয়ে কলারোয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক নিজাম উদ্দীন মোল্লার নেতৃত্বে ডিবির একটি চৌকস দল ট্রাকটি অনুসরণ করে তার পিছু নেয়। একপর্যায়ে ট্রাকটিকে ধাওয়া করে কলারোয়া উপজেলার বেলতলা নামক স্থানে গিয়ে গতিরোধ করা হয়।
এসময় ট্রাক ড্রাইভার পালিয়ে গেলেও এর হেলপার ডাবলুকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় ট্রাকটি। যার ট্রাক নং-সাতক্ষীরা-ট-১১-০৬৯৭। জব্দকৃত ট্রাকটি বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে সাতক্ষীরা ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। এরপর ট্রাকটি তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার ১৫০ পিস ভারতীয় উন্নত মানের শাড়ি, ৬০০ গজ টিস্যু জর্জেট থানকাপড়, ৪৫১ বস্তা ভারতীয় চায়না ক্লে পাউডার ও ৭১ বস্তা সাদা পাউডার ও সাগুর দানার ন্যায় ভারতীয় কেমিক্যাল পদার্থ জব্দ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ভোমরা স্থলবন্দরের রিয়াদ ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির গাড়ির মাধমে এসব মালামাল এসেছে।
এছাড়া কোন সিএন্ডএফ এর মাধ্যমে এসব মালামালগুলো ভারত থেকে আনা হয়েছে এবং এর নেপথ্যে কারা জড়িত সেগুলো ডিবি পুলিশের অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসবে। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
ঢাকা/শাহীন/এস