এক সালাউদ্দিনেই ধ্বংসের পথে পুরো গ্রামের কিশোর-তরুণ
Published: 20th, April 2025 GMT
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ভাদার্ত্তী গ্রাম ‘মাদকের অভয়ারণ্য’ নামে পরিচিত হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে চলমান মাদক ব্যবসা ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এলাকার কিশোর ও তরুণ প্রজন্মকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মূল হোতা সালাউদ্দিন নামে এক কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। সালাউদ্দিন কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ভাদার্ত্তী গ্রামের মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে।
যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দলের নেতাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থেকে অবাধে মাদক ব্যবসা চালিয়ে যায় সালাউদ্দীন। গত ১৭ বছর ধরে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার ছত্রছায়ায় এই ব্যবসা চালিয়েছে সে। সম্প্রতি রাজনৈতিক পালাবদলের পর নিজেকে বিএনপির কর্মী দাবি করে এক বিএনপি নেতার আশ্রয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ভাদার্ত্তী গ্রামে একাধিক পরিবার মাদক কারবারে জড়িত। কেউ মাদক সরবরাহ করে, কেউ বিক্রি করে, আবার কেউ পাইকারি ক্রেতার ভূমিকায়। কিশোরদের ইয়াবার প্রতি আসক্ত করে তাদের দিয়েই চালানো হচ্ছে মাদক ডেলিভারির কাজ। এমনকি কিছু অটোরিকশা ও ইজিবাইক চালককে মোটা টাকায় ব্যবহার করা হচ্ছে হোম ডেলিভারির কাজে।
তাদের অভিযোগ, মাদক বিরোধী অভিযান চালানো হলেও অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও সক্রিয় হয়ে পড়ে। সমাজে কেউ প্রতিবাদ করলে, তাদের ‘দলীয় লাইসেন্স’ আছে বলে হুমকি-ধামকি দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলে আগে পড়াশোনায় ভালো ছিল। এখন তার আচরণ বদলে গেছে। বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে দিতেও ভয় লাগে। কীভাবে সন্তানদের রক্ষা করব বুঝতে পারি না।”
এ ব্যাপারে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
তিনি আরও বলেন, “বিশেষ করে কিশোরদের ব্যবহার করা হলে, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। কেউ যদি এমন কাজে জড়িত থাকার তথ্য দেয়, আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/রফিক/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হিজরতের ৫টি শিক্ষা
সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:
১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালনহিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)
২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগহিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।
আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বেওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসাহিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতাএই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।
হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫