শরীয়তপুরে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান, ১৪৪ ধারা জারি
Published: 20th, April 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মা নদী থেকে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যাওয়ায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নড়িয়া পৌরসভা এলাকায় এ আদেশ বলবৎ থাকবে।
সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে উপজেলা সদরের বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ১৪৪ ধারার আদেশ প্রচার করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ১৪৪ ধারার নোটিশে বলা হয়, নড়িয়া উপজেলার বিএনপির দুটি পক্ষ একই স্থানে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রক্ষায় পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো সভা, জমায়েত, মাইক ব্যবহার বা আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদের নেতৃত্বে পদ্মা নদী থেকে বালু তুলে বিক্রি করছে একটি চক্র। ফরিদ আহমেদ নড়িয়ার চরআত্রা এলাকার স্তূপ করা ১০ কোটি ঘনফুট বালু নিলামে কিনেছেন। কিন্তু তিনি ড্রেজার লাগিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছেন। এতে নদীর তীর রক্ষা বাঁধ ও ফসলি জমি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিতে ১৪, ১৫ ও ১৬ এপ্রিল নড়িয়ার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ, অবস্থান ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এসব কর্মসূচিতে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মহিউদ্দিন আহম্মেদ, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল এস এম ফয়সাল, ঢাকার কলাবাগান থানা মহিলা দলের সভাপতি শামীমা জামানসহ নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
আরও পড়ুনপদ্মার বালু উত্তোলন ঘিরে নড়িয়ায় বিএনপির দুই পক্ষ মুখোমুখি৪ ঘণ্টা আগেনড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, নড়িয়ায় বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলের দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে যায়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নড়িয়ায় বিএনপির দুটি পক্ষ একই সময়ে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে, এমন আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নদীর তীরে স্তূপ করে রাখা ড্রেজিং মাটি বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হলেও নির্ধারিত এলাকা ছাড়িয়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ রয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করেছি। তারা নির্দেশনা না মানলে, তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র দ অবস থ ন ১৪৪ ধ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় মাজারে মাদক বিরোধী অভিযানে বাধা
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একটি মাজারে মাদক বিরোধী অভিযানে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরে প্রশাসনের লোকজন অভিযান না চালিয়ে ফিরে আসেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অভিযানের সময় মাজারের লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরের দিকে ভেড়ামারার সাতবাড়ীয়া বিত্তিপাড়া এলাকার ঘোড়াশাহ বাবার মাজারে ঘটনাটি ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনায় ঘোড়াশাহ মাজারে যান। এসময় তাদের বাধা দেন মাজারে উপস্থিত ভক্ত-অনুসারীরা। তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হোসেন ও অভিযান টিমের সদস্যদের সঙ্গে আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে ছাত্র সমন্বয়কদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা
গোপালগঞ্জে গোবিপ্রবির ছাত্র অধিকার পরিষদের ২ নেতাকে মারধর
ভেড়ামারা থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, “মাদক বিরোধী অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন এসিল্যান্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মাজারের লোকজনদের বাধার মুখে ফিরে আসেন তারা। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসেন বলেন, “মাদক বিরোধী অভিযানে গেলে মাজারের লোকজন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন। যে কারণে অভিযান পরিচালনা করতে না পেরে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছি। কারা এই উচ্ছৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। আপাতত এ বিষয়ে আর কিছু বলা যাচ্ছে না।”
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল ইসলাম বলেন, “প্রশাসনের লোকজন দেখেই উষ্মা প্রকাশ করেন লাল পোশাক পরিহিত কিছু উচ্ছৃঙ্খল ভক্ত-আশেকান। প্রশাসন কাজ শুরুর আগেই তারা আক্রমণাত্মক আচরণ শুরু করেন। বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের লোকজন ফিরে আসেন।”
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, ““আমিও শুনেছি ঘটনাটি। আমরা রেগুলার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ