দেশের টাইলস বাজারের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ঢাকার বাংলামোটরে আরও একটি এক্সক্লুসিভ শোরুমের উদ্বোধন করেছে শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ড আকিজ সিরামিকস।

গত বৃহস্পতিবার বাংলামোটরে আকিজ সিরামিকসের বিজনেস অ্যাসোসিয়েট শোরুম এন আলম সিরামিক সেন্টারে এর উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন আকিজ বশির গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম, আকিজ সিরামিকসের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মোহাম্মদ আশরাফুল হক, আকিজ বশির গ্রুপের হেড অব মার্কেটিং মো.

শাহরিয়ার জামান, রোসার হেড অব সেলস বিশ্বজিৎ পাল এবং শোরুমের স্বত্বাধিকারী মো. নূরে আলম ভূঁইয়াসহ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

শোরুমটি সাজানো হয়েছে আধুনিক ডিজাইনের টাইলস ও নতুন সব পণ্য দিয়ে। ব্যবহার করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ফার্নিচার ও উন্নত ডিসপ্লে সরঞ্জাম, যা গ্রাহকদের দেবে একটি অনন্য ও বাস্তব অভিজ্ঞতা।

বর্তমানে আকিজ সিরামিকস সারা দেশে ১৩০টির বেশি ‘স্টেট অব দ্য আর্ট’ লেভেলের নিজস্ব ও পার্টনার শোরুম পরিচালনার মাধ্যমে সর্বোচ্চ মানের গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করছে। শোরুমের সংখ্যার দিক থেকেও এটি দেশের সবচেয়ে বড় টাইলস ব্র্যান্ড হিসেবে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করেছে।

পরপর ছয়বার ‘বেস্ট ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ এবং ‘সুপার ব্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করা আকিজ সিরামিকস সব সময়ই ‘প্রমিজ অব পারফেকশন’-এর অঙ্গীকারে নতুনত্ব ও গুণগত মান বজায় রেখে বাজারে মানসম্মত টাইলস সরবরাহ করে আসছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ট ইলস

এছাড়াও পড়ুন:

ছাদ উড়ে যাওয়া সেই বাসের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় একাধিক সংঘর্ষে ছাদ উড়ে যাওয়ার পরও কয়েক কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সেই যাত্রীবাহী বাসের রেজিস্ট্রেশন স্থগিত করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। 

গত শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) রেজিস্ট্রেশন স্থগীত করে বাস মালিককে গতকাল শনিবার (১৯ এপ্রিল) একটি নোটিশ দিয়েছে বিআরটিএ। যেখানে রেজিস্ট্রেশন স্থায়ীভাবে বাতিল না করার কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।

বিআরটিএ’র ঢাকা মেট্রো-২ সার্কেল (একুরিয়া) এর উপপরিচালক (প্রকৌশল) মো. সানাউল হক এই নোটিশ ইস্যু করেন।

নোটিশে বলা হয়, দ্রুতগতির বাসটি এক্সপ্রেসওয়ের কামারখোলা রেল ফ্লাইওভারে একটি প্রাইভেট কারে ধাক্কা দেয়। পরে একটি কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটায়। এতে বাসটির সামনের অংশ গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পেছনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গাড়ি লক্ষ্য করে চালক আতঙ্কিত হয়ে বেপরোয়া গতিতে বাস চালাতে থাকে। এরপর বাসটি সমসপুর এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের রেলিংয়ে ধাক্কা দেয়, ফলে বাসটির পুরো ছাদ উড়ে যায়। এত বড় দুর্ঘটনার পরও চালক বাসটি চালাতে থাকে। এতে বাসে থাকা ৬০ জন যাত্রীর মধ্যে ৮ জন আহত হন।

বিআরটিএ মালিককে বাসের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ঢাকার কার্যালয়ে স্বশরীরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।

কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষে যাত্রীবাহী বাসের ছাদ উড়ে যাওয়া আলোচিত যাত্রীবাহী বাসটির গন্তব্য ছিল বরগুনার পাথরঘাটায়। ছাদ উড়ে যাওয়ার পর বেপরোয়া গতির বাসটি প্রায় ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সেই বাসটির চালকের নাম শহিদুল ইসলাম।

বরিশাল বাসমালিক গ্রুপের কার্যালয়ে খবর নিয়ে জানা গেছে, এই বাস কোম্পানির কোনো কাউন্টার সেখানে নেই। এই কোম্পানির পাঁচটি বাস ঢাকা থেকে বরিশাল, ঝালকাঠি হয়ে বরগুনার পাথরঘাটায় চলাচল করে।

দুর্ঘটনায় ছাদ উড়ে যাওয়ার পরেও বাসটি কেনো প্রায় ৬ কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে গেলেন চালক? এর মূল কারণ কী? এমন প্রশ্নে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ও যুগ্ম সম্পাদক মো. জগলুল ফারুক বলেন, “বাসটির ব্রেকের পাইপ ফেটে যাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলেন চালক। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বাসটি ছয় কিলোমিটার চালিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। আর এতে ৮ যাত্রী আহত হলেও বাকি যাত্রীরা সবাই অক্ষত অবস্থায় আছেন।”

তবে বেশ কয়েকজন বাস চালক এমন কথার যুক্তি নেই বলে মন্তব্য করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা-বরিশাল পথে চলাচলকারী চালকরা বলেন, ব্রেক ফেল হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত নিশ্চিত। কিন্তু এখানে তা হয়নি। মূলত চালক ভয়ের কারণে এতটা পথ বেপরোয়াভাবে চালিয়ে এসেছেন। কারণ, বাসটির পেছনে সেনাবাহিনীর গাড়ি ছিল এবং হাইওয়ে পুলিশ ছিল কাছাকাছি।

ঢাকার সায়েদাবাদে বাসটির টিকিট কাউন্টারে ওই দিন দায়িত্বে ছিলেন মো. সাইফুল। তিনি বলেন, “আমরা যাত্রীদের নাম ও মুঠোফোন নম্বর টিকিটে লিখে দেই। কোনো খাতায় তা লিবিবদ্ধ করি না।”

পাথরঘাটায় বাসটির টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান বলেন, “বাসটি ঢাকা থেকে ছেড়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটায় পাথরঘাটায় পৌঁছানোর কথা। কিন্তু পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। তবে আমার কাছে ওই বাসে থাকা যাত্রীদের কোনো নাম, মুঠোফোন নম্বর নেই। আমরা এসব বিবরণী রাখি না।”

বিভিন্ন চেষ্টার পর গতকাল শনিবার (১৯ এপ্রিল) চালক শহিদুলকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়। কেন বাসটি এতটা পথ তিনি বেপরোয়াভাবে চালিয়ে নিয়ে গেলেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওই অবস্থায় গাড়ি থামানোর কোনো পরিস্থিতি ছিল না। এরকম পরিস্থিতিতে অনেকটা হতভম্ব হয়ে পড়ি। ভেতরে আতঙ্ক কাজ করছিল। এর আগে আমি কখনো এমন অবস্থার মুখোমুখি হইনি। কীভাবে কী করেছি, বলতে পারব না।” 

দুর্ঘটনা কীভাবে হলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এক্সপ্রেসওয়েতে উল্টো পথ (রং সাইড) দিয়ে হঠাৎ একটি প্রাইভেটকার এসে পড়ে। সেটাকে সাইড দিতে গিয়ে কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে বাসটির সংঘর্ষ হয়।” 

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে প্রায় ৬০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে বাসটি ছাড়ে। ঘণ্টাখানেক পর বাসটি ঢাকা–মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ওঠে। বাসটি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের কামারখোলা সেতুতে উঠলে একটি কাভার্ড ভ্যানের পেছনে সজোরে ধাক্কা লাগে। সে সময়ই বাসের ছাদ সামনে থেকে ভেঙে পেছনে গিয়ে আটকে থাকে। চালক বাসটি না থামিয়ে আরও দ্রুতগতিতে চালাতে থাকেন। পরে বাসটি ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে সমষপুরে গেলে ছাদটি উড়ে পড়ে যায়। এসময় একটি প্রাইভেট কারকেও ধাক্কা দেয় বাসটি। 

যাত্রীসহ ছাদবিহীন বাস চালিয়ে যেতে থাকেন চালক। সমষপুর অতিক্রম করে আরও একটি প্রাইভেট কারকে ধাক্কা দেয় বাসটি।

ঢাকা/রতন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ