চবির অপহৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে খাগড়াছড়িতে সমাবেশ
Published: 20th, April 2025 GMT
খাগড়াছড়ি শহরের গিরিফুল এলাকা থেকে অপহরণ হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তি এবং রাঙামাটির কাউখালীতে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
রবিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে খাগড়াছড়ি আদিবাসী ছাত্র সমাজের ব্যানারে খাগড়াছড়ি শহরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
খাগড়াছড়ির কোট চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তুষন চাকমা। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুজন চাকমা ঝিমিট, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলর উক্যনু মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের সদর শাখার সভাপতি আকাশ ত্রিপুরা, চবির সাবেক শিক্ষাথী রহেল চাকমা, শিক্ষাথী মায়া চৌধুরী।
আরো পড়ুন:
কুয়েটে ভিসির প্রতীকী চেয়ারে আগুন দিলেন শিক্ষার্থীরা
সিকৃবিতে ‘ম্যানার’ শেখানোর নামে গভীর রাতে ডেকে নিয়ে র্যাগ
বক্তারা জানান, ইউপিডিএফ শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে পাহাড়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং অপহরণ বানিজ্য শুরু করেছে। বক্তারা এ ঘৃন তৎপরতা থেকে ইউপিডিএফকে বের হয়ে আসার আহবান জানান।
গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোর সাড়ে ৬টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে সন্ত্রাসীরা। একইসঙ্গে তাদের বহনকারী গাড়ির চালককেও অপহরণ করা হয়।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও পিসিপির চবি শাখার সদস্য রিশন চাকমা, চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা ও প্রাণি বিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো।
ঢাকা/রূপায়ন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আপন মামার হাতে খুন রোহিঙ্গা কিশোর, মুক্তিপণ দিয়েও রক্ষা হয়নি
কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবির থেকে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করা হয়েছিল রোহিঙ্গা কিশোর মো. আকরামকে (১৩)। নানা কৌশলে দুই লাখ টাকার বেশি মুক্তিপণ আদায় করা হয়। তারপরও রক্ষা পায়নি আকরাম। তাকে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। ঘটনার ১৪ দিন পর পুলিশ মোহাম্মদ কামাল (২৫) নামে আরেক রোহিঙ্গাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থেকে আকরামের মরদেহ উদ্ধার করেছে। গ্রেপ্তার কামাল সম্পর্কে নিহত আকরামের আপন মামা।
পুলিশ জানায়, নিহত আকরাম উখিয়ার বালুখালী আশ্রয়শিবিরের মোহাম্মদ ইদ্রিসের ছেলে। গ্রেপ্তার কামাল একই আশ্রয়শিবিরের আবুল কাশেমের ছেলে।
ঘটনার সভ্যতা নিশ্চিত করে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, মুক্তিপণ আদায়ের জন্যই কিশোরকে অপহরণ করা হয়েছিল। মুক্তিপণ দিয়েও সে রক্ষা পায়নি। হত্যার পর লাশ গুম করা হয়েছে। অপহরণ চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তার অনুসন্ধান চলছে।
মো. জসিম উদ্দীন চৌধুরী আরও বলেন, ৩ এপ্রিল মোহাম্মদ আকরাম অপহরণের শিকার হয়। এরপর পরিবারের কাছে ফোন করে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। পরবর্তী সময়ে আকরামের বাবা মোহাম্মদ ইদ্রিস মুঠোফোনে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের অ্যাপস থেকে ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাঠান। এরপরও আকরামকে ছেড়ে না দেওয়ায় মঙ্গলবার তার বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ জানায়, মামলা দায়েরের পরপরই উখিয়া থানার একটি বিশেষ দল আকরামকে উদ্ধারে কাজ শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গতকাল বুধবার বিকেলে কামালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
অভিযুক্ত রোহিঙ্গা কামাল সাতকানিয়া বিবিসি নামের একটি ইটভাটায় কাজ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কামাল স্বীকার করেন, তিনি ৩ এপ্রিল সকালে তাঁর বোনের বাড়িতে ঈদ উপলক্ষে বেড়াতে যান। ফেরার সময় কৌশলে ভাগনে আকরামকে বাসে করে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া থানার কেরানীহাট বাজারে নিয়ে যান। কেরানীহাট থেকে তেমহনী এলাকায় নিয়ে আকরামকে আটকে রাখেন। ৪ এপ্রিল বোনের নম্বরে কল করে আকরামকে দিয়ে কথা বলিয়ে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় অপহরণ চক্রের দেওয়া অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাঠায় পরিবার। কিন্তু মুক্তি পেলে বাড়িতে ফিরে সব ঘটনা বলে দেবে, এমন সন্দেহে কামাল শ্বাসরোধ করেন তাঁর ভাগনেকে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার কামালের দেখিয়ে দেওয়া রসুলাবাদ গ্রামের একটি খালের কচুরিপানার নিচ থেকে গতকাল সন্ধ্যায় আকরামের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফ হোসাইন বলেন, আকরামের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে আকরামের এক জোড়া প্লাস্টিকের স্যান্ডেল পাওয়া যায়। গ্রেপ্তার কামালকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এ নিয়ে গত ১৫ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৪৫ জন এবং উখিয়া থেকে ৮৮ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ মুক্তিপণ দিয়ে ফিরলেও হত্যা করা হয়েছে ৩ জনকে।