‘প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ইসরায়েলকে এক হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন’, এই দাবি সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। চিফ অ্যাডভাইজারস প্রেস উইং ফ্যাক্টস নামের ফেসবুক পেজে আজ রোববার বলা হয়েছে, এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট প্রচার মূলত অধ্যাপক ইউনূস ও তাঁর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যে সংঘবদ্ধ ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার, তারই অংশ।

চিফ অ্যাডভাইজারস প্রেস উইং ফ্যাক্টস নামের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, ইসরায়েলকে টাকা দেওয়া–বিষয়ক দাবিটি মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদি নামের এক বক্তা সম্প্রতি কোনো এক বয়ানে করেছেন। তাঁর এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা এই বক্তব্য চার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন।

প্রেস উইং ফ্যাক্টস নামের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে বলা হয়, স্বতন্ত্র ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, অধ্যাপক ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ আমেরিকার ইসরায়েলকে ১ কোটি ডলারের সহায়তার বিষয়টি নিয়ে প্রথম ২০২৩ সালের অক্টোবরে বাংলা ইনসাইডার নামক একটি অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে তা আরও কিছু অনলাইন পোর্টাল ও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

এই দাবি ছড়িয়ে পড়ার পর তা অনুসন্ধান করে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমার স্ক্যানারে তথ্য জানিয়ে প্রেস উইং ফ্যাক্টস নামের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, তাদের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যখন ফিলিস্তিনিদের মধ্যে হামলার ভয়াবহতা শুরু হয়, সে সময়ই বাংলাদেশে প্রচারিত হতে শুরু করে যে ইসরায়েলকে ১০০ কোটি টাকা সহায়তা দিয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস। অনুসন্ধানে জানা যায়, আওয়ামী লীগের ‘প্রপাগান্ডা’ সাইট হিসেবে পরিচিত অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ইনসাইডারের সে বছরের ১৩ অক্টোবরের একটি প্রতিবেদন থেকে আলোচিত দাবিটি ছড়িয়ে পড়ে।

ওই প্রতিবেদনে দাবিটির পক্ষে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিবৃতির বিষয়ে বলা হয়েছিল। তবে ওই মন্ত্রণালয় থেকে সে সময় প্রকাশিত কোনো বিবৃতিতে এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি, বলা হয়েছে প্রেস উইং ফ্যাক্টস নামের ফেসবুক পেজে।

ফেসবুক পোস্টটিতে আরও বলা হয়, ওই দাবিসংবলিত কোনো বিবৃতি প্রকাশিত হয়নি বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও রিউমার স্ক্যানারকে নিশ্চিত করা হয়। তা ছাড়া ইসরায়েলের সাংবাদিক ও ফ্যাক্ট চেকাররাও এমন কোনো সহায়তার বিষয়ে অবগত নন বলে রিউমার স্ক্যানারকে জানান। একই সঙ্গে ইউনূস সেন্টারও বিষয়টি ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে।

প্রেস উইং ফ্যাক্টস নামের ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, দেশের সব আলেম–ওলামা ও দায়িত্বশীল নাগরিককে বিভ্রান্ত না হয়ে দেশে শান্তি–শৃঙ্খলা বিনষ্টের চেষ্টায় থাকা ব্যক্তিদের অপপ্রচার রুখে দেওয়ার আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি

ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়া ছেলেকে ফিরে পাওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় লিখিত বক্তব্যে ভুক্তভোগী রবিনের মা রহিমা বেগম বলেন, ২০২৩ সালের ১০ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে আমার আত্মীয় সাধনা বেগম সাধুনী আমাদের বাসায় বেড়াতে আসেন। নানা আলোচনা হয় তার সঙ্গে। আলোচনার একপর্যায়ে তিনি আমাদের ছোট ছেলে মো. রবিনকে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব করেন। আমরা পরিচিত লোক না থাকা, টাকা পয়সা না থাকা ইত্যাদি বলে প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানাই। তখনই সাধনা বেগম বলেন, তার নিজের ছেলেকে মো. মনির হোসেন নামে এক ব্যক্তি ইতালি পাঠিয়েছেন। আমরা বলি মনিরকে তো আমরা চিনি না। তখন তিনি সঙ্গে সঙ্গে মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামকে ফোন করে কথা বলেন। এর এক সপ্তাহ পরে মো. মনির তা স্ত্রী দিনা ইসলাম আমাদের বাসায় আসেন। তখন মনিরের সঙ্গে আমার ছেলেকে ইতালি ফ্লাইটে পাঠাতে হলে ১৪ লাখ টাকার মৌখিক চুক্তি হয়।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন পর অল্প টাকা সংগ্রহের কথা জানালে ২০২৩ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার সময় দালাল মনির ও তার স্ত্রী দিনা ইসলামসহ কয়েকজন আমাদের আদাবরের বাসায় আসেন। এসময় আমাদের ছেলে রবিনের পাসপোর্ট ও নগদ ৫ লাখ টাকা নেয় তারা। তখন দিনা ও সাধনা বলেন, দালাল মনির রবিনকে সঙ্গে করে নিয়ে ইতালি কর্মস্থলে যাবে। রবিনকে চাকরিতে যোগদান করিয়ে আবার যখন ঢাকায় ফিরবে তখন বাকি ৯ লাখ টাকা দিলেই হবে। এর এক সপ্তাহ পর ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রবিনকে নিয়ে দালাল মনির শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের উদ্দেশে যায়।

এসময় রবিনের বাবা বলেন, কিছু দিন পর খবর পেলাম ইতালি না নিয়ে লিবিয়ায় নিয়ে অন্ধকার ঘরে আটকে রাখে ছেলেকে। আটকাবস্থায় আমাদের সন্তানকে ভয়ানক শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন চালায়। নির্যাতন চলাকালীন সময়ই তারা ফোনে রবিনকে আমাদের সঙ্গে কথা বলায় টাকা পাঠানোর জন্য। রবিন নির্যাতনের যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে আমাদের জনায়- তোমরা দ্রুত টাকা না পাঠালে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে!

তিনি বলেন, একথা জানার পর আমরা মনির ও সাধনাকে বলি তোমরা আমার সন্তানকে দেশে ফিরিয়ে আনো। তাতে আমাদের সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়ে যায়! সন্তানের জীবনের কথা চিন্তা করে তখন আমরা নিরুপায় হয়ে বিভিন্ন তারিখে মনিরের বাবা কালাম হাওলাদার, মনিরের স্ত্রী দিনা ইসলাম, সাধনার মেয়ে রেখা আক্তার ও মনিরের বোন সিমার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেই। যার মানি রিসিট আছে। এছাড়াও পরবর্তীতে নগদে আরও টাকাসহ মোট ১৮ লাখ টাকা নেয় তারা।

এত টাকা দেওয়ার পরও গত বছরের মার্চ মাস থেকে আমরা আর ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। আমাদের ধারণা- এই মানব পাচারকারীরা আমাদের আদরের ধন রবিনকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। এমতাবস্থায় আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাছে ভিক্ষা চাই, আমাদের সন্তানকে ফিরে পেতে তারা যেন একটা উদ্যোগ গ্রহণ করে।

রবিনের বাবা আরও বলেন, প্রায় এক বছর ধর ছেলের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ নেই। ছেলের সন্ধানে সংশ্লিষ্ট এম্বাসি এবং দপ্তরে যোগাযোগ করলে কোনো সহায়তা পাইনি। আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই।

সংবাদ সম্মেলনে রবিনের পরিবারের সদস্য ছাড়াও তার স্কুল শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে যাওয়ার পর নিখোঁজ, ছেলেকে ফিরে পেতে মায়ের আকুতি
  • ড. ইউনূস ইসরায়েলকে টাকা দিয়েছেন, এ তথ্যটি ভুয়া: প্রেস উইং
  • ইসরায়েলকে ড. ইউনূসের ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার তথ্যটি ভুয়া:
  • শাহেন শাহর উদ্ভাবন বাঁচাতে পারে হাজারো প্রাণ
  • শিল্পা শেঠির টাকা আয়ের কৌশল ফাঁস 
  • আবারও ২০০ কোটি টাকার মুনাফার ঘরে আইডিএলসি ফাইন্যান্স
  • বরিশাল সিটির মেয়র পদে বিজয়ী ঘোষণা করতে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে আবেদন ফয়জুল করীমের
  • ফয়জুল করীমকে মেয়র ঘোষণা চেয়ে মামলা 
  • চরমোনাই পীরের ভাই ফয়জুলকে বিজয়ী চেয়ে মামলা