আইসক্রিমের কাঠি দিয়ে কেউ বানিয়েছেন সেতুর আদল, কেউ বানিয়েছেন নানা ধরনের কাঠামো। প্রাতিষ্ঠানিক ভাষায় এ ধরনের কাঠামোকে বলা হয় ট্রাস। বানানো সেতুর আদলে ঝোলানো হচ্ছে বিভিন্ন ওজনের বাটখারা। এর মাধ্যমে কার আদল কত শক্তিশালী পরীক্ষা করা হচ্ছে। এর পাশেই দাঁড়িয়ে এমন দৃশ্য উপভোগ করছেন প্রতিযোগী ও দর্শকেরা। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। গত শুক্রবার সকাল ৯টায় শুরু হওয়া দুই দিনের এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আমেরিকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারস (এএসসিই) চুয়েট শাখা। এ আয়োজনে দেশের ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৫০টি দলের ৬০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।

গত শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এ উৎসব। উৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ মাহমুদ আবদুল মতিন ভূঁইয়া। এরপর পোস্টারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাঁদের গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি সমস্যার টেকসই সমাধান নিরূপণ প্রতিযোগিতা ও অটোক্যাড সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকশা তৈরীর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সমস্যার টেকসই সমাধান নিরুপণ প্রতিযোগিতায় চুয়েটের শিক্ষার্থীদের দল নেক্সাস, নকশা তৈরির প্রতিযোগিতায় বুয়েটের দল ক্যাড ফোর্সেস এবং পোস্টার প্রদর্শনী প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় চুয়েটের দল বায়োচার।

আরও পড়ুনচীনের প্রেসিডেনশিয়াল স্কলারশিপ, প্রথম বছরে ১০ হাজার চায়নিজ ইউয়ান ৬ ঘণ্টা আগে

দ্বিতীয় দিনে গতকাল শনিবার শিক্ষার্থীরা আইসক্রিমের কাঠি দিয়ে সেতুর আদল তৈরি করে তাঁদের শক্তিমত্তা পরিমাপ করেন। আদলের নিজস্ব ওজন, একেকটি দলের উপস্থাপনা এবং ট্রাস লোডিং মেশিনের মাধ্যমে শক্তি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হয় এ প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয় ডুয়েট শিক্ষার্থীদের দল ‘দ্য কনক্রিট ট্রায়ো’।

প্রতিযোগিতা নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায় প্রতিযোগী ও আয়োজকদের। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাঈম হাওলাদার বলেন, ‘এ রকম প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে বেশ ভালো লেগেছে। পুরো সপ্তাহের ক্লাস, ল্যাব, গতানুগতিক জীবনের বাইরে গিয়ে কিছু করার সুযোগ পেয়েছি এ প্রতিযোগিতায়। আশা করি, সামনের দিনগুলোতেও চুয়েটে এ রকম বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।’

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (ইউএসটিসি) থেকে আগত আরেক প্রতিযোগী শাহিদা চৌধুরী প্রিয়া জানান, ‘এএসসিই স্টুডেন্ট চ্যাপটার, চুয়েট–এর দ্য ওডিসি ২০২৫–এ অংশগ্রহণ করে অনেক ভালো লেগেছে। আমি এই প্রথম বাইরের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। এখানে এসে খুবই ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। আয়োজনটাও অনেক সুন্দর ছিল।’

আরও পড়ুনস্কুলে দীর্ঘ ছুটির ফাঁদে পড়াশোনা শিকেয় ওঠে১৯ এপ্রিল ২০২৫

আয়োজনের বিষয়ে সংগঠনের উপদেষ্টা ও পুরকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আয়েশা আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য সমুন্নত রাখতে পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি এ ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করা প্রয়োজন। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে, তারা অনুপ্রেরণা পাবে। অনুষ্ঠানটি সফল করতে আয়োজক কমিটি প্রচুর পরিশ্রম করেছে। তাই তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা জানাই।’

এএসসিই চুয়েট শাখার সভাপতি গোলাম মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের সংগঠন প্রতিবছর এ রকম প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। মূলত শিক্ষার্থীদের পুরকৌশলের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করা এবং বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত রাখতেই আমরা এ ধরনের আয়োজন করে থাকি। এবারের আয়োজনটি সবাই খুব ভালোভাবে উপভোগ করেছে। উৎসব আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আমার শিক্ষক, সহপাঠী ও অনুজদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’

প্রতিযোগিতাটির পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল ইনসি সিমেন্ট বাংলাদেশ।

আরও পড়ুনএসএসসি পরামর্শ ২০২৫: গণিতে ভালো নম্বর পাওয়ার সহজ উপায়১৮ এপ্রিল ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ত র আদল প রথম ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি

বান্দরবানের রাজার মাঠে ‘মৈতা রিলং পোয়ে’ বা মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের মধ্য দিয়ে মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান ও প্রাচীনতম উৎসব সাংগ্রাইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে। 

গত ১২ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া এ উৎসব চলে টানা সাত দিন। উৎসবজুড়ে ছিল বর্ণাঢ্য আয়োজন, নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক সম্প্রীতির বহুমাত্রিক বার্তা। মারমা সম্প্রদায়ের এই ঐতিহ্যবাহী উৎসবটি শুধু আনন্দ ও উদযাপনের নয়, বরং এটি পারস্পরিক সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও সংস্কৃতির মিলনের এক অনন্য নিদর্শন।

শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবের শেষ দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। প্রধান অতিথি মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে পানি ছিটিয়ে উদ্বোধন করেন। 

এসময় বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক থানজামা লুসাই, জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি, পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। 

মারমা তরুণ-তরুণীরা বলেন, “মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান উৎসব সাংগ্রাইয়ের মাধ্যমে পুরাতন বছরের গ্লানি দূর করে নতুন বছরের আগমন উদযাপন করা হয়। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ আয়োজিত রাজার মাঠে মৈতা রিলং পোয়ে বা মৈত্রী পানি বর্ষণ যেখানে পানি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেন সবাই। সাংগ্রাই উৎসব শুধু আনন্দের নয়, বরং সামাজিক বন্ধন, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্য রক্ষার প্রতীক। উৎসবের এই আয়োজনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে পড়ে পুরো পার্বত্য অঞ্চলে।”

সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্যরা বলেন, “সাংগ্রাই উৎসবের বিভিন্ন দিনে ছিল মারমা ঐতিহ্যবাহী নৃত্য-সঙ্গীত, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, তরুণ-তরুণীদের পানি খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবের শেষ দিন ছিল সবচেয়ে রঙিন ও প্রাণবন্ত। রাজার মাঠে হাজারো মানুষের অংশগ্রহণে এক আনন্দঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এতে অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকরাও।”

ঢাকা/চাইমং/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বিপ্লবীরা মরে না তারা মৃত্যুঞ্জয়ী’
  • মরতেই যদি হয় বীরের মতো মরব, গাজায় নিহত আলোকচিত্রীর পোস্ট
  • মরতেই যদি হয়, তবে বীরের মতো মরব: মৃত্যুর আগে গাজার আলোকচিত্রীর পোস্ট
  • অভিনয়শিল্পী সংঘের নির্বাচন, ভোট উৎসবে মাতলেন তারকারা
  • ‘মরতেই যদি হয়, তবে বীরের মতো মরব’
  • কান চলচ্চিত্র উৎসবে অ্যালিস
  • গরমে বাড়ছে আইসক্রিমের বিক্রি, বড় হচ্ছে বাজার
  • ‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে তৈরি বস্ত্রের প্রসার করতে হবে’
  • বান্দরবানে সাংগ্রাই উৎসবের সমাপ্তি