রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে নিহত জাহিদুল ইসলাম পারভেজের মরদেহ নেওয়া হয়েছে পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহ সেখানে নেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। 

জাহিদুল ইসলামের চাচাত ভাই দেলোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, পল্টনে জানাজা শেষে মরদেহ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে মরদেহ।

পারভেজের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাইচান গ্রামে। তাঁর বাবা জসিম উদ্দিন কুয়েতপ্রবাসী। দুই ভাইবোনের মধ্যে পারভেজ বড়। তিনি ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করতেন।     

শনিবার বিকেলে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। তিনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দোকানে দুই ছাত্রীর শিঙাড়া খাওয়া ও তাদের নিয়ে ঠাট্টা-তামাশাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থী এবং ইংরেজি বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী বনানী ক্যাম্পাসের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ইংরেজি বিভাগের দুই ছাত্রী শিঙাড়া খাচ্ছিলেন। তাদের শিঙাড়া খাওয়া দেখে হাসাহাসি করছিলেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পারভেজসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চান ইংরেজির শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নজরে এলে এক কর্মকর্তা মীমাংসা করে দেন। তবে এরপর ৩০ থেকে ৪০ জন বহিরাগত ডেকে নেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পারভেজ ও তাঁর এক বন্ধু ক্যাম্পাস থেকে বের হলে তাদের ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে পারভেজকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তাঁর বন্ধু সেখানে চিকিৎসাধীন। তাঁর নাম জানা যায়নি।

বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার সমকালকে বলেন, বিকেলে ইংরেজি ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শিঙারা খাওয়ার সময় ইংরেজি বিভাগের দুই ছাত্রীকে দেখে হাসাহাসি করছিলেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কিছু শিক্ষার্থী। এ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে পারভেজ নিহত হন। রাতে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে জড়িতদের শনাক্তে কাজ চলছে। রাতেই নিহতের মামাতো ভাই বনানী থানায় হত্যা মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি। তিনি জানান, মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাদী দাবি করেছেন, পারভেজ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কর্মী।

এদিকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে ‘ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায়’ পারভেজ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া রাত ১০টা ৫ মিনিটে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, পারভেজ হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি, বিবিএ এবং এলএলবির তিন শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার বিষয়ে জানিয়েছেন। ক্যাম্পাসের সামনে বসার জায়গা নিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত স ঘর ষ ছ র ক ঘ ত হত য র স মন মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

ছুরিকাঘাতে নিহত পারভেজের মরদেহ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে

রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষে ছুরিকাঘাতে নিহত জাহিদুল ইসলাম পারভেজের মরদেহ নেওয়া হয়েছে পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহ সেখানে নেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। 

জাহিদুল ইসলামের চাচাত ভাই দেলোয়ার হোসেন সমকালকে বলেন, পল্টনে জানাজা শেষে মরদেহ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে মরদেহ।

পারভেজের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কাইচান গ্রামে। তাঁর বাবা জসিম উদ্দিন কুয়েতপ্রবাসী। দুই ভাইবোনের মধ্যে পারভেজ বড়। তিনি ঢাকায় থেকে পড়াশোনা করতেন।     

শনিবার বিকেলে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে ছুরিকাঘাতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। তিনি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। পুলিশ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দোকানে দুই ছাত্রীর শিঙাড়া খাওয়া ও তাদের নিয়ে ঠাট্টা-তামাশাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

জানা গেছে, বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কয়েক শিক্ষার্থী এবং ইংরেজি বিভাগের পাঁচ শিক্ষার্থী বনানী ক্যাম্পাসের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ইংরেজি বিভাগের দুই ছাত্রী শিঙাড়া খাচ্ছিলেন। তাদের শিঙাড়া খাওয়া দেখে হাসাহাসি করছিলেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পারভেজসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের কাছে হাসাহাসির কারণ জানতে চান ইংরেজির শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা ও ধাক্কাধাক্কি হয়। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তাদের নজরে এলে এক কর্মকর্তা মীমাংসা করে দেন। তবে এরপর ৩০ থেকে ৪০ জন বহিরাগত ডেকে নেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পারভেজ ও তাঁর এক বন্ধু ক্যাম্পাস থেকে বের হলে তাদের ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান তারা। গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে পারভেজকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তাঁর বন্ধু সেখানে চিকিৎসাধীন। তাঁর নাম জানা যায়নি।

বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার সমকালকে বলেন, বিকেলে ইংরেজি ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শিঙারা খাওয়ার সময় ইংরেজি বিভাগের দুই ছাত্রীকে দেখে হাসাহাসি করছিলেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কিছু শিক্ষার্থী। এ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে পারভেজ নিহত হন। রাতে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে জড়িতদের শনাক্তে কাজ চলছে। রাতেই নিহতের মামাতো ভাই বনানী থানায় হত্যা মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি। তিনি জানান, মামলায় তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বাদী দাবি করেছেন, পারভেজ প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কর্মী।

এদিকে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে ‘ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী হামলায়’ পারভেজ হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া রাত ১০টা ৫ মিনিটে ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, পারভেজ হত্যার ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি, বিবিএ এবং এলএলবির তিন শিক্ষার্থীর জড়িত থাকার বিষয়ে জানিয়েছেন। ক্যাম্পাসের সামনে বসার জায়গা নিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ