চাকরি ও অনলাইন কেনাকাটার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহারের সুযোগ নিয়ে প্রতারক চক্র বিভিন্নভাবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করছে। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনারেটিভ এআইয়ের সহায়তায় প্রতারকেরা এখন আগের চেয়ে অনেক দ্রুত ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রতারণা করতে পারছে।

মাইক্রোসফটের ‘সাইবার সিগন্যালস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৪০০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রতারণার চেষ্টা রুখে দিয়েছে। পাশাপাশি প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১৬ লাখের বেশি বটচালিত ভুয়া অ্যাকাউন্ট তৈরি রোধ করা হয়েছে। এসব প্রতারণা ঠেকাতে প্রতিষ্ঠানটি এআই ও মেশিন লার্নিংনির্ভর নিরাপত্তা মডেল ব্যবহার করছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চাকরিপ্রার্থীদের লক্ষ্য করে এখন যেসব জালিয়াতি করা হচ্ছে, তার বড় একটি অংশ পরিচালিত হচ্ছে জেনারেটিভ এআইয়ের মাধ্যমে। ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন তৈরি, চুরি করা পরিচয় দিয়ে নকল প্রোফাইল খোলা, এমনকি এআইনির্ভর ই–মেইল ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে নিয়োগপ্রক্রিয়ার নাটক সাজানো হচ্ছে। এতে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আসল-নকল বুঝে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ছে। এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে মাইক্রোসফট তিনটি বিষয় খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়েছে।

ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হলে সাবধান হওয়া

অচেনা নম্বর থেকে হঠাৎ এসএমএস বা ই–মেইলে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রস্তাব এলে সেটি সন্দেহজনক বলেই ধরে নিতে হবে। এমন ক্ষেত্রে ব্যাংক তথ্য বা পাসওয়ার্ড কখনোই শেয়ার করা উচিত নয়।

চাকরির নামে টাকা চাওয়া হলে তা এড়িয়ে চলা

চাকরি পেতে কোনো ধরনের অর্থ দিতে হয় না। কোনো নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যদি অর্থ দাবি করা হয় কিংবা পুরো যোগাযোগটাই যদি অনানুষ্ঠানিকভাবে চলে, তাহলে তা প্রতারণার আশঙ্কাই বেশি।

অপ্রাতিষ্ঠানিক মাধ্যমে যোগাযোগ হলে সতর্ক হওয়া

প্রকৃত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অফিশিয়াল ই–মেইল বা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে নিয়োগসংক্রান্ত যোগাযোগ করে থাকে। হোয়াটসঅ্যাপ, টেক্সট বার্তা কিংবা ব্যক্তিগত ই–মেইল আইডি থেকে কোনো প্রস্তাব এলে, তা যাচাই না করে বিশ্বাস করা উচিত নয়।

চাকরির পাশাপাশি অনলাইন কেনাকাটায়ও প্রতারণা বাড়ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন প্রযুক্তিতে দক্ষতা না থাকলেও বিভিন্ন এআই টুলের মাধ্যমে যে কেউ অত্যন্ত বাস্তবধর্মী ভুয়া ই-কমার্স সাইট তৈরি করতে পারছে। এআই ব্যবহারে এসব ওয়েবসাইটে থাকছে নিখুঁত পণ্যের ছবি, মিথ্যা রিভিউ, এমনকি কৃত্রিমভাবে তৈরি ‘গ্রাহকসেবা’ও। প্রতারণার উদ্দেশ্যে তৈরি এসব ওয়েবসাইটে ‘সীমিত সময়ের অফার’ বা কাউন্টডাউন টাইমার দিয়ে ক্রেতাদের তাড়াহুড়া করতে বাধ্য করা হয়। অনেকে এসব সাইটে আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন দেখে ক্লিক করেন, যার মধ্যে অনেক বিজ্ঞাপনই এআই অপ্টিমাইজড এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য মাইক্রোসফট আরও তিনটি পরামর্শ দিয়েছে।

চটকদার অফারে সহজে বিশ্বাস না করা

‘মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে অফার শেষ’, ‘স্টকে শেষ পাঁচটি পণ্য’—এমন বার্তা দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়। এমন চটকদার অফার দেখলে সতর্ক হতে হবে।

বিজ্ঞাপনের উৎস যাচাই করা

অ্যাকটিভ বিজ্ঞাপন বা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পাওয়া ওয়েবসাইটে পণ্য কেনার আগে তার ঠিকানা, রিভিউ ও অন্যান্য তথ্য যাচাই করে নেওয়া জরুরি।

রিভিউ ও রেটিং দেখা

অনেক সময় পণ্যের নিচে থাকা প্রশংসাসূচক রিভিউ, ইনফ্লুয়েন্সারদের পোস্ট বা ব্যবহারকারীর মতামত এআই দিয়ে তৈরি হয়। যাচাই না করে এসব দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র চ কর র

এছাড়াও পড়ুন:

দুজনে যাচ্ছিলেন শ্বশুরবাড়ি, পথে ভিমরুলের কামড়ে সমবায়কর্মীর মৃত্যু, স্ত্রী আইসিইউতে

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ভিমরুলের কামড়ে মো. সালামত মিয়াজী (৫৫) নামের এক সমবায়কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার রাতে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। একই ঘটনায় তাঁর স্ত্রী সেলিনা আক্তার গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

মো. সালামত মিয়াজীর বাড়ি মতলব উত্তর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের বড় দুর্গাপুর গ্রামে। তিনি মৃত তমিজ উদ্দিন মিয়াজীর ছেলে। সালামত মিয়াজী ‘আলোর সন্ধানে বহুমুখী সমবায় সমিতি’ নামের একটি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সালামত মিয়াজী তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। বিকেল চারটার দিকে তাঁরা শ্বশুরবাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে হঠাৎ অনেকগুলো ভিমরুল এসে কামড়ায়। এ সময় তাঁরা গুরুতর আহত হন। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে ভিমরুলের আক্রমণ থেকে উদ্ধার করেন এবং পরিবারের সদস্যদের খবর দেন।

পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই মারা যান সালামত মিয়াজী। তাঁর স্ত্রী সেলিনা আক্তার এখনো আইসিইউতে আছেন। সালামতের মেয়ে শাওনি আক্তার জানান, তাঁর মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. মানিক মিয়া বলেন, ‘ভিমরুলের কামড়ে একজন সমবায়কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ