মেসির জন্য ভেন্যু বদল, রেকর্ড দর্শকে মায়ামির জয়
Published: 20th, April 2025 GMT
লিওনেল মেসির উপস্থিতি মানেই মাঠভর্তি দর্শক। সে কারণে ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় কলম্বাস ক্রুর ঘরের মাঠ বদলে গেল। এমএলএসের হাইভোল্টেজ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হলো বড় ভেন্যুতে, ক্লিভল্যান্ড ব্রাউনসের হান্টিংটন ব্যাংক স্টেডিয়ামে। যেখানে ইতিহাস গড়ে ম্যাচটি উপভোগ করেছেন ৬০ হাজারের বেশি দর্শক।
রোববার কলম্বাস ক্রুর বিপক্ষে ১–০ গোলের জয়ে মাঠ ছেড়েছে ইন্টার মায়ামি। যদিও গোল পাননি মেসি, তবে তার উপস্থিতি মানেই আলোচনার শীর্ষে। আর এই ম্যাচেও তার দারুণ কিছু মুভমেন্ট মাতিয়ে রেখেছিল ভেন্যু। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে প্রথমার্ধেই। ৩০ মিনিটে মার্সেলো ভেইগান্টের বাড়ানো ক্রসে হেডে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন তরুণ মার্কিন মিডফিল্ডার বেঞ্জামিন ক্রেমাচি। শেষ পর্যন্ত এই এক গোলেই জয় নিশ্চিত করে ডেভিড বেকহামের মালিকানাধীন দলটি।
কলম্বাস ক্রুর ঘরের মাঠ লোয়ার ডট কম ফিল্ডের ধারণক্ষমতা মাত্র ২০ হাজার। কিন্তু লিওনেল মেসিকে দেখতে উৎসুক দর্শকের সংখ্যা তো অনেক বেশি! ম্যাচটি সরিয়ে নেওয়া হলো কলম্বাস শহরের ১৪৫ কিলোমিটার উত্তরে হান্টিংটন ব্যাংক ফিল্ড-এ। ন্যাশনাল ফুটবল লিগের দল ক্লিভল্যান্ড ব্রাউন্সের এই স্টেডিয়ামও কলম্বাস ক্রুর সত্বাধিকারী জিমি ও ডি হ্যাসল্যামের মালিকানাধীন।
প্রায় সাড়ে ৬৭ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়াম অবশ্য পুরোপুরি ভরে উঠল না। তবে দর্শক উপস্থিতির রেকর্ড ঠিক হলো। এ ম্যাচে ৬০,৬১৪ দর্শক উপস্থিত ছিলেন, যা এনএফএলের বাইরে এই মাঠের সর্বোচ্চ দর্শকসংখ্যার রেকর্ড। যাকে দেখার জন্য এত উন্মাদনা, সেই মেসি অবশ্য ততটা জ্বলে উঠতে পারেননি।
এই জয়ের ফলে চলতি এমএলএস মৌসুমে এখনও অপরাজিত রয়েছে ইন্টার মায়ামি। ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩ ড্রয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা রয়েছে ইস্টার্ন কনফারেন্সে তিন নম্বরে। সমান পয়েন্ট নিয়েই চতুর্থ স্থানে আছে কলম্বাস ক্রু। শীর্ষে আছে শার্লট ও চিনচিনাতি। দু’দলেরই পয়েন্ট ১৯।
আগামী ২৫ এপ্রিল কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে মাঠে নামবে মায়ামি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইন ট র ম য ম কলম ব স ক র র উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
মেসির দাবি প্রতিনিয়ত মান বাড়ছে মেজর লিগের
লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর সারা পৃথিবীর ফুটবলপ্রেমীদের নজরে এসেছে মেজর লিগ সকার (এমএসএস)। আর্জেন্টাইন মহাতারকা বলেছেন, এমএলএসে প্রতিনিয়ত মান উন্নত হচ্ছে, বিশেষ করে বিদেশি তরুণ খেলোয়াড়দের আগমনের ফলে। মেসি আরো দাবি করেন, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে দক্ষিণ ফ্লোরিডার এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর এটাই তার সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মৌসুম।
এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, “এটা খুবই শারীরিক একটি লিগ, অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে যারা তাদের দুর্বলতাগুলো শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে কাটিয়ে উঠছে। দেখতে মনে না হলেও, এখানে দলগুলো অনেক দৌড়ায়। অনেক ম্যাচই হয় এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলা। বিশেষ করে শেষ মুহূর্তগুলোতে, যখন মাঠে ফাঁকা জায়গা থাকে। আমি মনে করি, এটা এমন এক লিগ যেখানে দলগুলো ক্রমশ উন্নতি করছে।”
ইন্টার মায়ামি ২০২৫ মৌসুমের আগেই দলকে আরও সমৃদ্ধ করতে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে সই করিয়েছে। দলে আগেই ছিলেন লুইস সুয়ারেস, সার্জিও বুস্কেটস, জর্দি আলবা এবং মেসি।
আরো পড়ুন:
নেইমারের সান্তোসে ফেরার পথে মেসির পুরনো কোচ
বার্সেলোনা নয়, মেসি থাকছেন মায়ামিতেই
এমএলএসের অন্যান্য দলগুলোও মানসম্মত খেলোয়াড় দলে নিয়েছে। সান ডিয়েগো এফসি সই করিয়েছে হিরভিং লোজানো, উইলফ্রেড জাহা গেছেন শার্লট এফসিতে, এবং ইমানুয়েল লাটে লাথ ও মিগুয়েল আলমিরন যোগ দিয়েছেন আটলান্টা ইউনাইটেডে।
“এই মৌসুমে অনেক দল শক্তিশালী হয়েছে, কারণ তারা অনেক বিদেশি খেলোয়াড় দলে নিয়েছে”- মেসি বলেন। তবে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক স্বীকার করেছেন, লিগের কিছু রোস্টার সীমাবদ্ধতা উন্নয়নের পথে ছোটখাটো বাধা হিসেবে কাজ করছে। মেসি বলেন, “আমি মনে করি, যদি লিগ আরও বেশি খেলোয়াড় আনার অনুমতি দিত; তাহলে এটি (এমএলএস) অনেক দ্রুত এগিয়ে যেত।”
এমএলএস একটি নির্দিষ্ট রোস্টার কাঠামো অনুসরণ করে, যেখানে সর্বোচ্চ তিনজন মনোনীত ফুটবলার রাখা যায় এবং একটি কঠোর বেতন সীমা আছে, যা ট্রান্সফার উইন্ডোয় দল গঠনে জেনারেল ম্যানেজার ও স্পোর্টিং ডিরেক্টরদের সীমিত করে দেয়। এমএলএস ইউরোপের প্রচলিত নিয়মগুলো অনুসরণ করে না, যার ফলে আরও বেশি বিদেশি খেলোয়াড়ের আগমন এবং লিগের দ্রুত বিকাশ ব্যাহত হয়।
সাবেক ইন্টার মায়ামি কোচ জেরার্দো মার্টিনো একই ধরনের কথা বলেছিলেন, যখন তার দল ২০২৪ কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে মন্তেররের কাছে হেরে বিদায় নেয়। মার্টিনো বলেন, “যতদিন এমএলএস কিছু নিয়ম শিথিল না করবে, যেন আমরা বড় স্কোয়াড তৈরি করতে পারি ইনজুরি ও সাসপেনশনের সময়ের জন্য, ততদিন মেক্সিকান দলগুলোরই সুবিধা থাকবে।”
তবুও, মেসি ও ইন্টার মায়ামি নিয়মিতভাবে এমএলএস ও কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপ প্রতিযোগিতায় লড়াই করে যাচ্ছে। হেরনসরা বর্তমানে ইস্টার্ন কনফারেন্সে চতুর্থ স্থানে আছে এবং ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে উঠেছে, এলএএফসিকে অ্যাগ্রিগেটে ৩-২ গোলে হারিয়ে।
মেসি বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সময় কাটিয়ে ভালোই উপভোগ করছেন, কারণ লিগের মান বাড়ছে এবং ইন্টার মায়ামি ধীরে ধীরে আমেরিকান ফুটবলের বিভিন্ন দিক জয় করছে। “সত্যি কথা বলতে, এখানে থাকতে আমার ভালো লাগছে। যদিও অনেক ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু এটা একটা উপভোগ করার মতো লিগ।”- মেসি।
ইন্টার মায়ামি শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ওহাইওতে হান্টিংটন ব্যাংক ফিল্ডে কলম্বাস ক্রুর মুখোমুখি হবে, এরপর এপ্রিল ২৪ তারিখে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস কাপ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ খেলতে কানাডা সফরে যাবে।
ঢাকা/নাভিদ