মেসির ম্যাচে রেকর্ড দর্শক, অপরাজিতই রইল ইন্টার মায়ামি
Published: 20th, April 2025 GMT
কলম্বাস ক্রুর হোম ম্যাচ। ওহিওর দলটি ঘরের মাঠ হিসেবে ব্যবহার করে লোয়ার ডট কম ফিল্ড। কিন্তু লিওনেল মেসির ম্যাচ আয়োজন করার সক্ষমতা সেই মাঠের কমই। দর্শক ধারণক্ষমতা যে মাত্র ২০ হাজার। যে কারণে একই মালিকের এনএফএল দল ক্লিভল্যান্ড ব্রাউনসের মাঠ হান্টিংটন ব্যাংক ফিল্ডে সরিয়ে নেওয়া হয় কলম্বাস ক্রু–ইন্টার মায়ামি ম্যাচটি।
আজ বাংলাদেশ সময় ভোরে অনুষ্ঠিত মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ম্যাচটিতে দর্শক উপস্থিতিতে হয়েছে মাঠের রেকর্ড, ১–০ গোলে জিতেছে ইন্টার মায়ামিও। যে জয়ে ২০২৫ এমএলএসে একমাত্র দল হিসেবে অপরাজিত থাকা নিশ্চিত করেছে মেসির দল।
কলম্বাস ক্রু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বার্তায় জানিয়েছে, আজকের মায়ামি-কলম্বাস ম্যাচ দেখতে হান্টিংটন ব্যাংক ফিল্ডে ছিলেন ৬০ হাজার ৬১৪ জন দর্শক, যা এই মাঠে এনএফএলের বাইরে সবচেয়ে বেশি দর্শকের ম্যাচ। ২০০২ সালের নভেম্বরে আমেরিকান ফুটবলের ব্রাউনস-স্টিলার্স ম্যাচ দেখেছিলেন ৭৩ হাজার ৭১৮ জন দর্শক।
মেসির উপস্থিতিতে দর্শকের রেকর্ড অবশ্য নতুন কিছু নয়। কানসাস স্টেডিয়ামে মেসির খেলা সর্বশেষ ম্যাচে দর্শক ছিলেন ৭২ হাজার ৬১০ জন। বোস্টনের মাঠে ৬৫ হাজার ৬১২ এবং গত সপ্তাহে শিকাগো ফায়ারের মাঠ সোলজার ফিল্ডেও ৬২ হাজার ৩৫৮ দর্শক উপস্থিত হয়েছিলেন।
এমএলএসের ইস্টার্ন ও ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সের ৩০ দল মিলিয়ে অপরাজিত ছিল মাত্র দুটি দল। ইন্টার মায়ামি ও কলম্বাস ক্রু। আজ দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে মায়ামি জিতেছে ১–০ ব্যবধানে। ম্যাচের ৩০তম মিনিটে আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার মার্সেলোনা ভেইগান্টের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন যুক্তরাষ্ট্রের মিডফিল্ডার বেঞ্জামিন ক্রেমাচি। শেষ পর্যন্ত এই গোলের ব্যবধান ধরে রেখেই মাঠ ছাড়ে মায়ামি।
৮ ম্যাচ শেষে মায়ামির অবস্থান ৮ ম্যাচে ৫ জয় ও ৩ ড্রয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে। ৯ম ম্যাচে প্রথম হারের দেখা পাওয়া কলম্বাসের পয়েন্টও ১৮, অবস্থান চারে। এ ছাড়া ৯ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট করে নিয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্সের শীর্ষ দুটি স্থানে শার্লট ও চিনচিনাতি।
ইন্টার মায়ামির পরবর্তী ম্যাচ শুক্রবার কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে। সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ম্যাচটিতে মেসিদের প্রতিপক্ষ কানাডিয়ান ক্লাব ভ্যানকুবার হোয়াইটক্যাপস।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন ট র ম য় ম কলম ব স ক র
এছাড়াও পড়ুন:
মেসির দাবি প্রতিনিয়ত মান বাড়ছে মেজর লিগের
লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর সারা পৃথিবীর ফুটবলপ্রেমীদের নজরে এসেছে মেজর লিগ সকার (এমএসএস)। আর্জেন্টাইন মহাতারকা বলেছেন, এমএলএসে প্রতিনিয়ত মান উন্নত হচ্ছে, বিশেষ করে বিদেশি তরুণ খেলোয়াড়দের আগমনের ফলে। মেসি আরো দাবি করেন, ২০২৩ সালের গ্রীষ্মে দক্ষিণ ফ্লোরিডার এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার পর এটাই তার সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মৌসুম।
এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেন, “এটা খুবই শারীরিক একটি লিগ, অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে যারা তাদের দুর্বলতাগুলো শারীরিক সক্ষমতা দিয়ে কাটিয়ে উঠছে। দেখতে মনে না হলেও, এখানে দলগুলো অনেক দৌড়ায়। অনেক ম্যাচই হয় এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটে চলা। বিশেষ করে শেষ মুহূর্তগুলোতে, যখন মাঠে ফাঁকা জায়গা থাকে। আমি মনে করি, এটা এমন এক লিগ যেখানে দলগুলো ক্রমশ উন্নতি করছে।”
ইন্টার মায়ামি ২০২৫ মৌসুমের আগেই দলকে আরও সমৃদ্ধ করতে দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বেশ কয়েকজন তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়কে সই করিয়েছে। দলে আগেই ছিলেন লুইস সুয়ারেস, সার্জিও বুস্কেটস, জর্দি আলবা এবং মেসি।
আরো পড়ুন:
নেইমারের সান্তোসে ফেরার পথে মেসির পুরনো কোচ
বার্সেলোনা নয়, মেসি থাকছেন মায়ামিতেই
এমএলএসের অন্যান্য দলগুলোও মানসম্মত খেলোয়াড় দলে নিয়েছে। সান ডিয়েগো এফসি সই করিয়েছে হিরভিং লোজানো, উইলফ্রেড জাহা গেছেন শার্লট এফসিতে, এবং ইমানুয়েল লাটে লাথ ও মিগুয়েল আলমিরন যোগ দিয়েছেন আটলান্টা ইউনাইটেডে।
“এই মৌসুমে অনেক দল শক্তিশালী হয়েছে, কারণ তারা অনেক বিদেশি খেলোয়াড় দলে নিয়েছে”- মেসি বলেন। তবে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক স্বীকার করেছেন, লিগের কিছু রোস্টার সীমাবদ্ধতা উন্নয়নের পথে ছোটখাটো বাধা হিসেবে কাজ করছে। মেসি বলেন, “আমি মনে করি, যদি লিগ আরও বেশি খেলোয়াড় আনার অনুমতি দিত; তাহলে এটি (এমএলএস) অনেক দ্রুত এগিয়ে যেত।”
এমএলএস একটি নির্দিষ্ট রোস্টার কাঠামো অনুসরণ করে, যেখানে সর্বোচ্চ তিনজন মনোনীত ফুটবলার রাখা যায় এবং একটি কঠোর বেতন সীমা আছে, যা ট্রান্সফার উইন্ডোয় দল গঠনে জেনারেল ম্যানেজার ও স্পোর্টিং ডিরেক্টরদের সীমিত করে দেয়। এমএলএস ইউরোপের প্রচলিত নিয়মগুলো অনুসরণ করে না, যার ফলে আরও বেশি বিদেশি খেলোয়াড়ের আগমন এবং লিগের দ্রুত বিকাশ ব্যাহত হয়।
সাবেক ইন্টার মায়ামি কোচ জেরার্দো মার্টিনো একই ধরনের কথা বলেছিলেন, যখন তার দল ২০২৪ কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে মন্তেররের কাছে হেরে বিদায় নেয়। মার্টিনো বলেন, “যতদিন এমএলএস কিছু নিয়ম শিথিল না করবে, যেন আমরা বড় স্কোয়াড তৈরি করতে পারি ইনজুরি ও সাসপেনশনের সময়ের জন্য, ততদিন মেক্সিকান দলগুলোরই সুবিধা থাকবে।”
তবুও, মেসি ও ইন্টার মায়ামি নিয়মিতভাবে এমএলএস ও কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপ প্রতিযোগিতায় লড়াই করে যাচ্ছে। হেরনসরা বর্তমানে ইস্টার্ন কনফারেন্সে চতুর্থ স্থানে আছে এবং ইতিহাস গড়ে সেমিফাইনালে উঠেছে, এলএএফসিকে অ্যাগ্রিগেটে ৩-২ গোলে হারিয়ে।
মেসি বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে সময় কাটিয়ে ভালোই উপভোগ করছেন, কারণ লিগের মান বাড়ছে এবং ইন্টার মায়ামি ধীরে ধীরে আমেরিকান ফুটবলের বিভিন্ন দিক জয় করছে। “সত্যি কথা বলতে, এখানে থাকতে আমার ভালো লাগছে। যদিও অনেক ভ্রমণ করতে হয়। কিন্তু এটা একটা উপভোগ করার মতো লিগ।”- মেসি।
ইন্টার মায়ামি শনিবার (১৯ এপ্রিল) দিবাগত রাতে ওহাইওতে হান্টিংটন ব্যাংক ফিল্ডে কলম্বাস ক্রুর মুখোমুখি হবে, এরপর এপ্রিল ২৪ তারিখে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস কাপ সেমিফাইনালের প্রথম লেগ খেলতে কানাডা সফরে যাবে।
ঢাকা/নাভিদ