ব্লেসিং মুজারাবানি একটু মন খারাপও করতে পারেন। সিলেট টেস্টের আগে আলোচনার কেন্দ্রে শুধুই যে নাহিদ রানা। দুই দলের দুই প্রতিনিধির সংবাদ সম্মেলনেই নাহিদ রানার প্রসঙ্গ উঠেছেই। কারণ? ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার এই পেসারের গতি, বাউন্স আর সিলেটের বাউন্সি উইকেট। এটা যদি নাহিদের জন্য সত্যি হয়, তাহলে তা মুজারাবানির জন্যও তো সত্যি।

লম্বা তো আর তিনি নাহিদের চেয়ে কম নন! বরং আরও ৩ ইঞ্চি বেশি, গতিও কাছাকাছি। ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির আশপাশেই বোলিং করতে পারেন। আর সাম্প্রতিক ফর্মও তো মুজারাবানির পক্ষেই কথা বলবে। বরং এখানে নাহিদ রানার চেয়েও এগিয়ে তিনি। নাহিদ ৫ উইকেট পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে।

কাল সিলেটে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনে নাহিদ রানাকে নির্ভারই মনে হয়েছে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘দিনে একবেলারও কম’ খেয়ে বেঁচে আছে গাজার শিশুরা

ইসরায়েলের পূর্ণ অবরোধ ও বিমান হামলায় গাজায় ফিলিস্তিনি শিশুদের দিনে একবেলারও কম খাবার খেয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। উপত্যকাটির ১২টি প্রধান দাতা গোষ্ঠীর নেতারা এক জরুরি সতর্কবার্তায় এ কথা বলেছেন।

গত বৃহস্পতিবার দাতা গোষ্ঠীগুলোর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলের ১৮ মাসের সামরিক অভিযান ও গত মাসে আরোপ করা পূর্ণ অবরোধের কারণে গাজার মানবিক সহায়তা ব্যবস্থা ‘সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার উপক্রম’ হয়েছে।

বিবৃতির তথ্যমতে, ৪৩টি আন্তর্জাতিক ও ফিলিস্তিনি সহায়তা গোষ্ঠীর প্রায় ৯৫ শতাংশ এরই মধ্যে গাজায় তাদের পরিষেবা স্থগিত বা বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাপকভাবে ও নির্বিচার বোমা হামলার ফলে (গাজায়) চলাফেরা করা খুব বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।

৪৩টি আন্তর্জাতিক ও ফিলিস্তিনি সহায়তা গোষ্ঠীর প্রায় ৯৫ শতাংশ এরই মধ্যে গাজায় তাদের পরিষেবা স্থগিত বা বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাপকভাবে ও নির্বিচার বোমা হামলার ফলে (গাজায়) চলাফেরা করা খুব বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে।

দাতা গোষ্ঠী অক্সফামের নীতিবিষয়ক প্রধান বুশরা খালিদী বলেন, ‘শিশুরা দিনে একবেলারও কম খাবার খাচ্ছে ও পরবর্তী বেলার খাবার খুঁজে পেতে লড়াই করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সবাই শুধু টিনজাত খাবার খাচ্ছে...গাজায় অপুষ্টি এবং কোনো কোনো জায়গায় নিশ্চিতভাবে দুর্ভিক্ষের ঘটনা ঘটছে।’

ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের গাজার জরুরি সমন্বয়কারী আমান্দে বাজেরোল বলেন, ‘এটিকে মানবিক ব্যর্থতা বলা যায় না। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণেই এটি ঘটছে। এটি (ফিলিস্তিনি) জনগণের বেঁচে থাকার অধিকারের ওপর ইচ্ছাকৃত আঘাত, যা (ইসরায়েলি সেনারা) দায়মুক্তির সঙ্গে কার্যকর করছে।’

গাজা সিটি থেকে আল–জাজিরার প্রতিবেদক হানি মাহমুদ গত শুক্রবার বলেন, শিশুদের ফর্মুলা (প্রস্তুতকৃত খাবার) ফুরিয়ে যাচ্ছে। এতে করে শিশু ও নবজাতকেরা অপুষ্টিতে পড়তে যাচ্ছে।

হানি মাহমুদ বলেন, ‘আমরা অনেক গুরুতর অপুষ্টির ঘটনা দেখেছি। পরিবারগুলো নিজেদের সবচেয়ে মৌলিক চাহিদাও পূরণ করতে পারছে না। এমনকি খুবই ঝুঁকিতে থাকা শিশু এবং নবজাতকদের প্রয়োজনও তারা পূরণ করতে পারছে না। বাজার ও ফার্মেসি থেকে শিশুদের ফর্মুলা মোটামুটি উধাও হয়ে গেছে।’

এটিকে মানবিক ব্যর্থতা বলা যায় না। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণেই এটি ঘটছে। এটি (ফিলিস্তিনি) জনগণের বেঁচে থাকার অধিকারের ওপর ইচ্ছাকৃত আঘাত, যা (ইসরায়েলি সেনারা) দায়মুক্তির সঙ্গে কার্যকর করছে।আমান্দে বাজেরোল, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের গাজার জরুরি সমন্বয়কারী

গাজার দির আল-বালাহ এলাকার আল-আকসা হাসপাতালের বাইরে কিছু ফিলিস্তিনি আল–জাজিরাকে বলেন, অপুষ্টির কারণে তাঁদের সন্তানেরা মারা যাচ্ছে।

ছেলে হারানো ফাদি আহমেদ বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাঁর ছেলের ফুসফুসে ব্যাপক সংক্রমণ শনাক্ত করেন। তার রক্তে অক্সিজেনের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছিল। এই বাবা আরও বলেন, ‘দুর্বলতা ও তীব্র অপুষ্টির কারণে ছেলে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল। হাসপাতালে এক সপ্তাহ থাকার পর সে মারা যায়।’

সহায়তাকারী গোষ্ঠীগুলো বলেছে, গাজা মানবিক সহায়তায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্য পৃথিবীর বুকে সবচেয়ে ভয়ংকর স্থানে পরিণত হয়েছে। ফলে শিশুদের প্রয়োজনীয় পরিষেবা সরবরাহ করা আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।

ইন্তিসার হামদান নামের এক নারী বলেন, ‘আমার নাতির মা-বাবা তিন দিন ধরে কোনো দুধ খুঁজে পাননি। ফলে আমার নাতিকে মারা যেতে হলো।’

আল–জাজিরার তারেক আবু আজম বলেন, ‘শিশুরা শুধু অপুষ্টিতেই ভুগছে না; বরং গুরুতর চিকিৎসা জটিলতা ও রোগেও ভুগছে; যা সহজে নিরাময় করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহেও ঘাটতি রয়েছে।’

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, উপত্যকাটিতে অন্তত ৬০ হাজার শিশু অপুষ্টিতে ভুগছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

খাবার সংগ্রহ করছে গাজার শিশুরা। দক্ষিণ গাজা উপত্যকার খান ইউনিসে, ৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ