বিভেদ কমিয়ে সমঝোতায় না পৌঁছালে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে: মজিবুর রহমান
Published: 19th, April 2025 GMT
বিএনপি, গণ-অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে বিভেদ কমিয়ে সমঝোতায় না পৌঁছালে সংস্কার, ফ্যাসিবাদের বিচার ও নির্বাচন—সবকিছুতেই অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হবে বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু।
শনিবার আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলটির নিয়মিত জাতীয় নির্বাহী কাউন্সিলের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভাপতির বক্তব্যে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিএনপি বলছে নির্বাচনের কাট অফ টাইম চলতি বছরের ডিসেম্বর, সরকার বলছে পরবর্তী বছরের জুন আর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মত হচ্ছে দৃশ্যমান সংস্কার ও বিচারের পরই নির্বাচন। এই তিন মতের মাঝে আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতাপূর্বক একটি গ্রহণযোগ্য ঐকমত্যে না পৌঁছালে যে অনিশ্চয়তা ও সংশয় তৈরি হবে, তা দেশের জন্য কোনোভাবেই কল্যাণ বয়ে আনবে না।’
মুজিবুর রহমান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার যদি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে, গ্রীষ্মকালে বিদ্যুতের লোডশেডিং সহনীয় মাত্রায় রাখে আর অর্থনীতিতে দৃশ্যমান অগ্রগতি ঘটাতে পারে, তাহলে রাজনীতির বাইরে সরকারের পক্ষে একটা জনমত তৈরি হয়ে যেতে পারে। রাজনৈতিক পক্ষ আর অরাজনৈতিক পক্ষ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে গেলে সেটা কারও জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না।
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা, জাতীয় নির্বাচন ও দলের পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর প্রস্তুতি নিয়ে বক্তব্য দেন এবি পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.
এর আগে কালে দলটির পঞ্চম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে একটি ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ভার্চ্যুয়াল সমাবেশে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের মহানগর, জেলা, উপজেলা ও থানা পর্যায়ের নেতারা অংশ নেন।
সভায় সারা দেশের সাংগঠনিক কার্যক্রম তুলে ধরেন পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (দপ্তর) আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা। আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত বিবরণ উপস্থাপন করেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (অর্থ) আমিনুল ইসলাম। এ সময় নির্বাহী পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ব র রহম ন র জন ত ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন নয়, আগের সংবিধান সংশোধন করা যেতে পারে
সংবিধান সংস্কার কমিশনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশালের প্রান্তিক প্রতিনিধিরা বলেছেন, নতুন কোনো সংবিধান নয়, সময়ের চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে আগের সংবিধানকে সংশোধন করা যেতে পারে। তবে সেটা করতে পারবে একমাত্র নির্বাচিত সংসদ।
গতকাল শনিবার বরিশাল নগরীতে ‘রাষ্ট্র সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সুজন প্রতিনিধিরা এসব কথা বলেন। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলোর বিষয়ে মতামত নিতে জেলা ও মহানগর সুজন এ বৈঠক আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সুজনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া। জেলা, উপজেলা ও মহানগর সুজন প্রতিনিধিরা বৈঠকে অংশ নেন।
সভায় অংশগ্রহণকারীদের সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ ও সংবিধানের বিদ্যমান ব্যবস্থার কপি দেওয়া হলে তার ওপর আলোচনা করেন। ৯০ সদস্য আলোচনায় অংশ নেন। প্রায় সব আলোচক বিদ্যমান সংবিধান বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের বিরোধিতা করেন। তারা বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা অক্ষুণ্ন রেখে সংবিধান সংশোধন করতে হবে।
সুজনের বরিশাল মহানগরের সভাপতি রফিকুল আলম বলেন, বর্তমান সংবিধান সমুন্নত রাখার শপথ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। এখন নতুন সংবিধান প্রণয়নের কথা বললে সেটা শপথ ভঙ্গের শামিল। সংবিধান অনুযায়ী দ্বৈত নাগরিক সংসদ সদস্য হতে পারবেন না এবং রাষ্ট্রীয় পদে থাকতে পারবেন না। অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা দ্বৈত নাগরিক। এমনকি সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. আলী রীয়াজও দ্বৈত নাগরিক। তাঁর নেতৃত্বে কমিশন বৈধ নয়।
তবে বানারীপাড়া সুজনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান সোহেল বলেন, আগের দলীয় সরকারগুলোর ব্যর্থতার জন্য ইউনূস সরকারের আবির্ভাব হয়েছে। তাই তাঁর নেতৃত্বেই সংবিধান সংস্কার নিরাপদ হবে।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, সংবিধান সংস্কার বিষয়ে সারাদেশে তৃণমূলের মতামত নেওয়া হচ্ছে। এসব যথাযথ স্থানে উপস্থাপন করা হবে। জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত নেবে।