তরুণেরা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছেন না: ফরহাদ মজহার
Published: 19th, April 2025 GMT
তরুণেরা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার। তিনি বলেছেন, তরুণেরা যে পথে হাঁটছেন সেটি কোনো সুষ্ঠু ‘মডেল’ নয়।
৫ আগস্ট সংবিধানকে বলবৎ রেখে দেওয়ার মাধ্যমে গণ–অভ্যুত্থানকে কবর দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, সংবিধান রেখে দিয়ে তরুণেরা নিজেদের সুরক্ষাকে ধ্বংস করেছে। আমার ধারণা, আগামী কয়েক দশকে এই সংবিধান নিয়ে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
আজ শনিবার রাজধানীর বিএমএ ভবনের শহীদ ডা.
তরুণদের শুধরে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণতন্ত্র বলতে জনগণের মতামত, যেটা ৫ আগস্টে নির্ধারিত হয়ে গেছে। আমরা এমন কোনো রাষ্ট্র চাই না, যে রাষ্ট্র আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে; কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, এখনো প্রতিদিন নাগরিক অধিকার হরণ হচ্ছে।’
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সকল আইনকে আমরা উৎখাত করেছিলাম। তাহলে আগের আইনে কেন মানুষকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে? এখনো রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় মানুষ গ্রেপ্তার হচ্ছে। সামনে জুলাই যোদ্ধাদের ধরে ধরে মারা হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিনিয়োগে ‘ঢাকঢোল পেটাচ্ছেন’ উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘মুহাম্মদ ইউনূস বিনিয়োগ আনছেন; কিন্তু বছরের পর বছর আমরা সস্তা শ্রমের কাঁটাতারে আটকে আছি। তারা শ্রমিকদের রক্ষায় কোনো কাজ করছে না। আমাদের আইনের সুরক্ষা তৈরি হয়নি, নাগরিক অধিকার রক্ষা হচ্ছে না।’
ঐকমত্য বলে যেসব আলোচনা হচ্ছে, সেটা দিয়ে ‘মাফিয়া’দের রুখে দেওয়া সম্ভব নয় উল্লেখ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘তরুণদের বলতে চাই, তোমরা যে পথে হাঁটছ, সেটা কোনো সুষ্ঠু মডেল না। এনসিপিকে অন্য দলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে। কিন্তু তারা সঠিক পথে না হাঁটলে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে পদে পদে হোঁচট খাবে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলামের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত উদ্ভিদবিজ্ঞানী অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলামের স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক শামসুল ইসলামের পরিবার এই স্মরণ সভার আয়োজনে করে। এতে তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবন, গবেষণা, শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান এবং ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অধ্যাপক ইসলামের মেয়ে অধ্যাপক জেবা ইসলাম সেরাজ সবাইকে স্বাগত জানান। তিনি প্রয়াত পিতার জন্য ক্ষমা ও দোয়া চান। এরপর তিনি সঞ্চালক হাসিব ইরফানুল্লাহকে পরিচয় করিয়ে দেন। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে হাসিব ইরফানুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসিনা খান এবং জাপানের ইওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবিদুর রহমানের শোক বার্তা পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা অধ্যাপক শামসুল ইসলামের দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন এবং দেশের বিজ্ঞান ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শমসের আলী তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন।
স্মরণ সভায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মিহির লাল সাহা, বিসিএসআইআর-এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিম খান, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি) পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নাশিদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল করীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক রফিকুল রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী সাখাওয়াত হোসেন, বিএপিটিসিবির প্রতিনিধি অধ্যাপক নুরুল ইসলাম এবং আইইউবির সাবরিনা এম ইলিয়াস প্রয়াত অধ্যাপক শামসুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অধ্যাপক শামসুল ইসলামের স্মরণ সভায় বোটানিক্যাল সোসাইটি ও অবসরপ্রাপ্ত উদ্ভিদবিজ্ঞান শিক্ষকেরাও অংশ নেন।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সভাপতি মুনির হাসান এবং এএসআই স্কুল অব লাইফের সমন্বয়ক মোর্শেদা আক্তার অধ্যাপক শামসুল ইসলামকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
সভায় অধ্যাপক শামসুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে তাঁর বড় ছেলে সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ ইসলাম এবং মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধ্যাপক জেবা ইসলাম পিতার স্মৃতিচারণ করেন।
অধ্যাপক শামসুল ইসলামের ছোট ছেলে ও যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে কর্মরত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার খালিদ ইসলাম তাঁর বাবার জন্য দোয়া চান। সবশেষে অধ্যাপক ইউসুফ ইসলাম দোয়া পরিচালনা করেন।