দুই মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি ঘাতক, মায়ের আহাজারি
Published: 19th, April 2025 GMT
স্বামী হারিয়ে আট বছর ধরে দুই ছেলেকে বুকে আগলে রেখেছিলেন বিধবা খুরশিদা বেগম। তার ছেলে মুমিনুল ইসলাম পুটিবিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ত। মায়ের স্বপ্ন ছিল, ছেলেরা বড় হয়ে মায়ের দুঃখ ঘোচাবে। লোহাগাড়ার পুটিবিলার বখাটে কিশোর গ্যাং কেড়ে নিল মুমিনুল ইসলামের প্রাণ। নিমিষেই খুরশিদার সব স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেল। দুই মাসেও ধরা পড়েনি মুমিনুল হত্যার আসামিরা।
জানা যায়, মুমিনুল ইসলাম শান্ত বিনয়ী ছিল। গত ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তাঁতিপাড়া মাদ্রাসার বার্ষিক সভায় যায়। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বখাটেরা তাকে ছুরিকাঘাত করে। বখাটে শাকিল আর সাকিব জাপটে ধরে, মূল ঘাতক হেলাল উদ্দিন রিয়াদ উন্মত্তের মতো একের পর এক ছুরিকাঘাত করে মুমিনুলকে।
এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে লোহাগাড়া থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনার দু’দিন পর আসামি শাকিল ধরাও পড়েছে। মূল হোতা হেলাল উদ্দিন রিয়াদ ও তার সহযোগী সাকিব, নাইমুদ্দিন, শওকত, হারুন এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুই মাস ধরে তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে আর এদিকে বিচার পাওয়ার অপেক্ষায় নীরবে কাঁদছেন সন্তানহারা খুরশিদা বেগম। এলাকাবাসী পলাতক আসামিদের ছবি দিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে অলিতে-গলিতে, তাদের দাবি খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।’
খুরশিদা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলেটার কী অপরাধ ছিল? কেন আমার বুক খালি করল ওরা? আমি আর কিছু চাই না, শুধু আমার ছেলের খুনিদের কঠিন শাস্তি চাই, ওদের ফাঁসি চাই।’
মুমিনুলের চাচাতো ভাই আরিফুর রহমান বলেন, ‘এতদিনেও খুনিরা ধরা পড়ল না, এটা আশ্চর্যের বিষয়। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে। স্কুলের সহপাঠী আর শিক্ষকরা মানববন্ধন করেছেন, পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপিও দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ একজন ছাড়া আর কাউকে ধরতে পারেনি।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লোহাগাড়া থানার এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযান চলছে, প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, শিগগিরই আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলামের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও একুশে পদকপ্রাপ্ত উদ্ভিদবিজ্ঞানী অধ্যাপক আহমদ শামসুল ইসলামের স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে এই স্মরণসভার আয়োজন করা হয়।
অধ্যাপক শামসুল ইসলামের পরিবার এই স্মরণ সভার আয়োজনে করে। এতে তাঁর দীর্ঘ কর্মময় জীবন, গবেষণা, শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান এবং ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণ করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও পরিবারের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে অধ্যাপক ইসলামের মেয়ে অধ্যাপক জেবা ইসলাম সেরাজ সবাইকে স্বাগত জানান। তিনি প্রয়াত পিতার জন্য ক্ষমা ও দোয়া চান। এরপর তিনি সঞ্চালক হাসিব ইরফানুল্লাহকে পরিচয় করিয়ে দেন। কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কর্মসূচি শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে হাসিব ইরফানুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হাসিনা খান এবং জাপানের ইওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবিদুর রহমানের শোক বার্তা পাঠ করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা অধ্যাপক শামসুল ইসলামের দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন এবং দেশের বিজ্ঞান ও শিক্ষা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শমসের আলী তাঁর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা স্মরণ করেন।
স্মরণ সভায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আজাদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মিহির লাল সাহা, বিসিএসআইআর-এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সেলিম খান, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (আইইউবি) পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নাশিদ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল করীম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি (জিইবি) বিভাগের শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক রফিকুল রহমান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী সাখাওয়াত হোসেন, বিএপিটিসিবির প্রতিনিধি অধ্যাপক নুরুল ইসলাম এবং আইইউবির সাবরিনা এম ইলিয়াস প্রয়াত অধ্যাপক শামসুল ইসলামের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
অধ্যাপক শামসুল ইসলামের স্মরণ সভায় বোটানিক্যাল সোসাইটি ও অবসরপ্রাপ্ত উদ্ভিদবিজ্ঞান শিক্ষকেরাও অংশ নেন।
বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সভাপতি মুনির হাসান এবং এএসআই স্কুল অব লাইফের সমন্বয়ক মোর্শেদা আক্তার অধ্যাপক শামসুল ইসলামকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন।
সভায় অধ্যাপক শামসুল ইসলামের পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে তাঁর বড় ছেলে সাউথ-ইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ইউসুফ ইসলাম এবং মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অধ্যাপক জেবা ইসলাম পিতার স্মৃতিচারণ করেন।
অধ্যাপক শামসুল ইসলামের ছোট ছেলে ও যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে কর্মরত সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার খালিদ ইসলাম তাঁর বাবার জন্য দোয়া চান। সবশেষে অধ্যাপক ইউসুফ ইসলাম দোয়া পরিচালনা করেন।