গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে চুরি হওয়া তিনটি লেমুরের মধ্যে একটিকে উদ্ধার করেছে পুলিশ ও বন বিভাগের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাজধানীর শ্যামবাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে লেমুরটি উদ্ধার করা হয় বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এ ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মো.

দেলোয়ার হোসেন (২২)। তাঁর বাড়ি শেরপুর সদর উপজেলার চরখারচর সাতানীপাড়া গ্রামে। এর আগে লেমুর চুরির ঘটনায় মো. জহিরুল ইসলাম ও নিপেন নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাঁদের একজন পার্কের কর্মী ও অন্যজন স্থানীয় বাসিন্দা।

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিক আজ শনিবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, সাফারি পার্ক থেকে লেমুর চুরির ঘটনায় জামালপুরে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাতে ঢাকার শ্যামবাজারে অভিযান চালিয়ে একটি পুরুষ লেমুর উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, প্রাণীটি উদ্ধার করে সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে। অন্য প্রাণীগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ ও বন বিভাগ সূত্র জানায়, লেমুর চুরির ঘটনায় শ্রীপুর থানায় মামলা হয়। এরপর বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রাণী উদ্ধারে কাজ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুরের সদর উপজেলার রানাগাছা ইউনিয়নের দড়িহামিপুর আকন্দ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দেলোয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার শ্যামবাজার মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায় একটি নির্জন স্থান থেকে খাঁচায় বন্দী অবস্থায় একটি লেমুর উদ্ধার করা হয়।

গত ২৪ মার্চ সকালে লেমুরের খাঁচা খালি দেখতে পান সাফারি পার্কের কর্মীরা। সেখানে তিনটি লেমুর ছিল। পরে লেমুরের খাঁচার পেছনের দিকে লোহার জালের প্রায় তিন বর্গফুট কাটা দেখা যায়। পার্ক কর্তৃপক্ষের ধারণা, ২৩ মার্চ রাতের যেকোনো সময় লোহার জাল কেটে প্রাণী তিনটিকে চুরি করা হয়। এ ঘটনায় ২৪ মার্চ শ্রীপুর থানায় একটি অভিযোগ দেয় পার্ক কর্তৃপক্ষ। পরে ৭ এপ্রিল এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। এরপর ৯ এপ্রিল পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর বন য প র ণ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফেসবুক গল্পের’ উৎস খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল আসল ঘটনা

রাজশাহীর বাঘায় ট্রেনের নিচে পড়ে এক পেঁয়াজচাষি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন, এমন একটি ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘হৃদয়বিদারক গল্প’ ছড়িয়ে পড়ে। যাঁরা এটি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সবাই ‘মূল গল্পটা’ একই রেখেছেন, শুধু ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা যুক্ত করে দিয়েছেন।

ফেসবুকের পোস্টে লেখা ছিল, ওই বৃদ্ধের স্ত্রী আট মাস আগে মারা গেছেন। দুই মেয়ে তাঁদের বাড়িতে কিছুদিন রেখে বের করে দিয়েছেন। দুই ছেলেও বাবার জিনিসপত্র ফেলে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে এ ঘটনা পড়তে পড়তে মাথার মধ্যে একটা প্রশ্ন জাগে, একটি পরিবারের সবাই কি প্রায় ৭০ বছর বয়সী একজন মানুষকে এভাবে ত্যাগ করতে পারেন?

ফেসবুকে ঘটনাটি পড়ে সবাই বৃদ্ধের সন্তানদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে কমেন্ট করছিলেন। আমার স্ত্রী দুলারী খাতুনও ঘটনাটি পড়তে পড়তে খুব ‘আহা, আহা’ করছিলেন। কিন্তু আমার এমন মনে হচ্ছিল না। মনে আসে, কেউ ফেসবুকে ভিউ বাড়ানোর জন্য কাজটা করেনি তো? সিদ্ধান্ত নিলাম, সকালে উঠে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যাব।

এরপর ঘটনাস্থলে গেলাম। একটি শোকাহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্থানীয় পরিচিত কাউকে পেলে সুবিধা হয়। এ জন্য স্থানীয় সাংবাদিক আমার ঘনিষ্ঠ গোলাম তোফাজ্জল কবিরকে ডেকে নিলাম। মৃত ওই বৃদ্ধের নাম মীর রুহুল আমিন। তাঁর ভাতিজা মোফাক্কর হোসেনের সঙ্গে গোলাম তোফাজ্জলের ঘনিষ্ঠতা আছে। তিনি একটি জানাজায় ছিলেন। একটু সময় নিলেন। দুপুর গড়িয়ে গেল। দুজন বাঘা উপজেলার মাঝপাড়ার বাউসায় তাঁদের বাড়িতে যাই।

আরও পড়ুননেটিজেনরা ‘ধুয়ে দিচ্ছে’ পরিবারকে, বাস্তবতা ভিন্ন২০ ঘণ্টা আগে

বাড়িতে গিয়ে পঞ্চাশোর্ধ এক নারীকে পাই। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া মীর রুহুল আমিনের স্ত্রী। অথচ ফেসবুকে লেখা হয়েছে, তাঁর স্ত্রী আট মাস আগে মারা গেছেন। এরপর তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, ছেলে-মেয়ে কয়জন? মরিয়ম বেগম বললেন, তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ২০-২২ বছর আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছে ঈশ্বরদীতে, সেখানেই থাকেন। আর তাঁর ছেলে ঢাকায় একটি চাকরি করেন। সেখানে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। বাড়িতে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দুজন থাকতেন।

এরপর আর বুঝতে বাকি থাকে না যে দুই সন্তানের জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া, দরজা বন্ধ করে বাবাকে বাইরে রাখা, চলে যেতে বলা—ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ঘটনাগুলোর সত্যতা নেই।

মরিয়ম বেগম বলেন, তাঁদের কোনো অশান্তি নেই। ঘটনার দিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন। সকালে খেয়ে গেছেন। বেলা তিনটার আগে-পরে তাঁর সঙ্গে দুবার ফোনে কথা হয়েছে।

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মাঝপাড়া বাউসা গ্রামে মীর রুহুল আমিনের বাড়ি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেসবুক দেখে জানলেন তিনি খুন হয়েছেন, এরপর যা ঘটল
  • পাকিস্তানের কাছেও হেরে আরও অপেক্ষায় বাংলাদেশের মেয়েরা
  • নিজ ঘরে মিলল যুবদল নেতার অর্ধগলিত মরদেহ
  • ‘ও’ পজিটিভের বদলে ‘বি’ পজিটিভি রক্ত পুশ, রোগীর মৃত্যু
  • গাজীপুরে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে কারখানাতেই শ্রমিকের ‘আত্মহত্যা’, ছুটি ঘোষণা
  • বাগদান সারলেন ঋতাভরী
  • মোহামেডানের হোঁচটের দিনে আবাহনীর জয় 
  • হ্যাটট্রিক জয়ের পর মিলল হারের স্বাদ
  • ‘ফেসবুক গল্পের’ উৎস খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল আসল ঘটনা