অন্তহীন দুঃস্বপ্নে বন্দি গাজার বাসিন্দারা
Published: 19th, April 2025 GMT
ইসরায়েলের বর্বর বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে গাজা। আশ্রয়কেন্দ্র, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, মসজিদ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে চলেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকার বাসিন্দারা। যেখানেই তারা আশ্রয় নিচ্ছে, হামলা করে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুলি ছোড়া হচ্ছে যাত্রাপথেও। যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও হামলা শুরুর পর এক মাস ধরে গাজায় কোনো খাদ্য সহায়তা ঢুকতে দেয়নি দখলদার ইসরায়েল। খাবার, পানি, চিকিৎসার অভাব এবং চারদিকে বিস্ফোরণের মধ্যে গাজাবাসী যেন এক অন্তহীন দুঃস্বপ্নে বন্দি হয়ে পড়েছে। এ দুর্দশার কোনো শেষ নেই। আশা নিয়ে বেঁচে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে।
১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় স্বাস্থ্যসেবা বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ২১টি আংশিকভাবে সেবা দিচ্ছে। চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ডা.
তিনি বলেন, খুব সীমিত সম্পদ নিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও আমরা উত্তর গাজায় থাকার চেষ্টা করছি। খাবার ও পানির অভাবের কারণে এখানে অপুষ্টি এবং বিভিন্ন রোগব্যাধি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। পেটেরপীড়া থেকে শুরু করে চর্মরোগ খুব সাধারণ হয়ে পড়েছে। আমরা অনেক শিশুকে পাই যারা শ্বাসনালির সংক্রমণ ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় একই জায়গায় অনেক শিশু থাকে এবং ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমাদের চ্যালেঞ্জ ক্রমেই বাড়ছে। কারণ বিপুলসংখ্যক রোগীর বিপরীতে চিকিৎসা সরঞ্জাম খুবই কম। এ ছাড়া আমরা জটিল সমস্যা পাই এবং আমরা জানি না যে এই রোগীদের কোথায় পাঠাতে হবে। কারণ গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ক্লিনিক থেকে বের হওয়ার সময় সুক্কার তাঁর পরিবারকে ফোন করে, যারা গত দেড় বছরে তাঁর সঙ্গে ৯ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, গাজার অন্যদের মতো আমার শিশুদের জন্যও পরিষ্কার পানি ও খাবার নিশ্চিত করতে প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হয়। আমাদের বিদ্যুৎ নেই, সব জায়গায় মোবাইল ফোনের ব্যাটারি চার্জ করার ব্যবস্থা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, কোনো আশা রাখা সত্যিই কঠিন। আমরা এমন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছি, যা শেষ হচ্ছে না। এই যুদ্ধ কখন শেষ হবে?
গতকাল শনিবারও গাজাজুড়ে ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়েছে। দক্ষিণে রাফাহ ও খান ইউনিস থেকে শুরু করে উপত্যকায় কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নুসাইরাত শরণার্থী শিবির, উত্তরে বেইত লাহিয়া এবং বেইত হানুনে হামলা চালানো হয়েছে। বিশেষ করে খান ইউনিসের আশপাশের এলাকায় তিনটি পৃথক অভিযানে ১১ জন নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকায় কমপক্ষে ৫১ হাজার ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) একটি জরুরি সতর্কতায় জানিয়েছে, গাজার এখনই খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। সেখানে লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েলি বোমা হামলা এবং অবরোধের কারণে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যানেজারের ভুলে ‘ব্যাটসম্যান’, আইপিএলে গ্রিন হতে চান বোলারও
অবশেষে তাহলে রহস্য কাটল!
অ্যাশেজে তিনি অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলছেন অলরাউন্ডার হিসেবে। ক্রিকেটবিশ্বে ব্যাটিং–বোলিং দুটির জন্যই পরিচিত তিনি। অথচ আইপিএল নিলামে ক্যামেরন গ্রিন কি না শুধুই ‘ব্যাটসম্যান’!
আইপিএল নিলামের খেলোয়াড় তালিকায় অস্ট্রেলিয়ান এ ক্রিকেটারের পরিচয় ‘ব্যাটসম্যান’ দেখে প্রশ্ন জেগেছিল অনেকেরই। ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যম তো এ নিয়ে নানা ব্যাখ্যাও দাঁড় করিয়েছিল। তবে গ্রিন অবশেষে জানালেন, তিনি ব্যাটসম্যানদের তালিকায় গেছেন তাঁর ম্যানেজারের ভুলে। আইপিএলে বল করতে তাঁর কোনো বাধা নেই।
২৬ বছর বয়সী গ্রিন এর আগে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস (২০২৩) ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর (২০২৪) হয়ে খেলেছেন। পিঠের অস্ত্রোপচারের কারণে ২০২৫ মৌসুমে তিনি খেলতে পারেননি। জুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরেন ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে এখন পুরোদমে বোলিং করার ছাড়পত্র পেয়েছেন। চলমান অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়া তাঁকে অলরাউন্ডার হিসেবেই ব্যবহার করছে।
মুম্বাইয়ের জার্সিতে টিম ডেভিডের সঙ্গে গ্রিন