দেশে প্লাস্টিক কমানোয় বিশ্ব সম্প্রদায়েরও আপত্তি আছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেছেন, “নতুন করে প্লাস্টিকের বোঝা, পলিথিনের বোঝা আমরা বাড়াব না। এটা নিয়ে যে শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যারা তাদের আপত্তি, তা কিন্তু নয়। এটা নিয়ে কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায়েরও কোনো কোনো দেশের আপত্তি আছে।”

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘উন্নয়নের স্বার্থে পরিচ্ছন্ন সবুজ ক্যাম্পাস’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ইউনিডো, ঢাকাস্থ নরওয়ে দূতাবাস এবং প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আরো পড়ুন:

‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে তৈরি বস্ত্রের প্রসার করতে হবে’

‘বন্যপ্রাণী ট্রাস্ট ফান্ড গঠনে সহযোগিতা করবে সুইডেন’

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “প্লাস্টিকটা হচ্ছে একটা পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য। আমরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর কথা বলি, তখন আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আসি। কিন্তু যারা ওই পেট্রোলিয়াম পণ্যটা উৎপাদন, বিক্রি ও রপ্তানি করে, তাদের অর্থনীতি তো ওই পণ্যের ওপরেই নির্ভরশীল। ফলে তারা সংগত কারণেই তাদের দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে বলে যে, না এটা আমাদের করতেই হবে। তারা পেট্রোলিয়াম ও প্লাস্টিকের স্বপক্ষে অবস্থান নেয়।”

তিনি বলেন, “প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমরা ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত’ ঘোষণা করতে চাই। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি আমাদের হর্ণমুক্ত ক্যাম্পাসও গড়ে তুলতে হবে। সদিচ্ছা ও সচেতনতা থাকলে এ কাজগুলো করা সম্ভব।

তিনি বলেন, “সরকারের প্লাস্টিক-পলিথিন না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দেশের সুপারমার্কেটগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড.

নিয়াজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ইউনিডোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি জাকি উজ জামান, রয়্যাল এম্ব্যাসি অব নরওয়ে ইন বাংলাদেশ এর ডেপুটি হেড অব মিশন মিস মারিয়ান রাবে নাভেলসনরুদ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডিরেক্টর চৌধুরী কামরুজ্জামান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল ড. মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আলিম চৌধুরী গার্লস হলের প্রধ্যাক্ষ ড. আফিয়া শাহনাজ, বুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মফিজুর রহমান প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য বলেন, “আমাদের দেশে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিভাজন রয়েছে। এই বিভাজন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। তবে পরিবেশ আন্দোলন রাজনৈতিক বিভাজনের উর্ধ্বে। দল-মত নির্বিশেষে সবাই এই আন্দোলনটিকে ধারণ করেন। পরিবেশকে রক্ষায় এটি একটি বড় সুযোগ। সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করলে এক্ষেত্রে আমরা দ্রুত সফল হতে পারবো।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ অন ষ ঠ ন পর ব শ আম দ র আপত ত

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে প্লাস্টিক কমানোয় বিশ্ব সম্প্রদায়েরও আপত্তি আছে: সৈয়দা রিজওয়ানা

দেশে প্লাস্টিক কমানোয় বিশ্ব সম্প্রদায়েরও আপত্তি আছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেছেন, “নতুন করে প্লাস্টিকের বোঝা, পলিথিনের বোঝা আমরা বাড়াব না। এটা নিয়ে যে শুধু বাংলাদেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় যারা তাদের আপত্তি, তা কিন্তু নয়। এটা নিয়ে কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায়েরও কোনো কোনো দেশের আপত্তি আছে।”

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘উন্নয়নের স্বার্থে পরিচ্ছন্ন সবুজ ক্যাম্পাস’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, ইউনিডো, ঢাকাস্থ নরওয়ে দূতাবাস এবং প্রাণ আরএফএল গ্রুপের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আরো পড়ুন:

‘পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে তৈরি বস্ত্রের প্রসার করতে হবে’

‘বন্যপ্রাণী ট্রাস্ট ফান্ড গঠনে সহযোগিতা করবে সুইডেন’

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “প্লাস্টিকটা হচ্ছে একটা পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য। আমরা যখন জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোর কথা বলি, তখন আমরা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আসি। কিন্তু যারা ওই পেট্রোলিয়াম পণ্যটা উৎপাদন, বিক্রি ও রপ্তানি করে, তাদের অর্থনীতি তো ওই পণ্যের ওপরেই নির্ভরশীল। ফলে তারা সংগত কারণেই তাদের দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে বলে যে, না এটা আমাদের করতেই হবে। তারা পেট্রোলিয়াম ও প্লাস্টিকের স্বপক্ষে অবস্থান নেয়।”

তিনি বলেন, “প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ ব্যবহারে আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আমরা ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক মুক্ত’ ঘোষণা করতে চাই। এজন্য সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি আমাদের হর্ণমুক্ত ক্যাম্পাসও গড়ে তুলতে হবে। সদিচ্ছা ও সচেতনতা থাকলে এ কাজগুলো করা সম্ভব।

তিনি বলেন, “সরকারের প্লাস্টিক-পলিথিন না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দেশের সুপারমার্কেটগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারা সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, ইউনিডোর বাংলাদেশ প্রতিনিধি জাকি উজ জামান, রয়্যাল এম্ব্যাসি অব নরওয়ে ইন বাংলাদেশ এর ডেপুটি হেড অব মিশন মিস মারিয়ান রাবে নাভেলসনরুদ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ডিরেক্টর চৌধুরী কামরুজ্জামান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিরেক্টর জেনারেল ড. মো. কামরুজ্জামান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ড. আলিম চৌধুরী গার্লস হলের প্রধ্যাক্ষ ড. আফিয়া শাহনাজ, বুয়েট সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মফিজুর রহমান প্রমুখ। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাবি উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য বলেন, “আমাদের দেশে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিভাজন রয়েছে। এই বিভাজন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা। তবে পরিবেশ আন্দোলন রাজনৈতিক বিভাজনের উর্ধ্বে। দল-মত নির্বিশেষে সবাই এই আন্দোলনটিকে ধারণ করেন। পরিবেশকে রক্ষায় এটি একটি বড় সুযোগ। সবাই একসঙ্গে উদ্যোগ নিয়ে কাজ করলে এক্ষেত্রে আমরা দ্রুত সফল হতে পারবো।”

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ