চীনের অর্থায়নে হাসপাতাল ফেনীতে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 19th, April 2025 GMT
চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত মেডিকেল কলেজ ও এক হাজার শয্যার হাসপাতাল ফেনীতে স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ফেনীর নাগরিক সমাজ। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ১১টায় ফেনী শহরের ট্রাংক রোডস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘আমরা ফেনীর সচেতন নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিক, পেশাজীবী, স্বেচ্ছাসেবী ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারাসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, চীনের অর্থায়নে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি আধুনিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের আলোচনা চলছে। ফেনী দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা হলেও স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও এখানকার মানুষ মৌলিক চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। এ অবস্থায় এই হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ ফেনীতে স্থাপন করা হলে জেলার মানুষের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী অঞ্চল ও দেশগুলোর (যেমন ভুটান, নেপাল, চীন) শিক্ষার্থীরাও পড়াশোনার সুযোগ পাবে। এটি এই অঞ্চলের চিকিৎসা ও শিক্ষার মানোন্নয়নে নতুন দিগন্ত খুলে দেবে।
আরো পড়ুন:
নওগাঁয় বাসায় ঢুকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ‘সংগঠককে’ কুপিয়ে জখম
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ
বক্তারা আরো বলেন, চিকিৎসার জন্য আজও ফেনীর মানুষকে চট্টগ্রাম বা ঢাকায় যেতে হয়। অনেক রোগী রাস্তাতেই প্রাণ হারান। অথচ, চীনের সহায়তায় যদি এই হাসপাতাল এখানে হয়, তাহলে ফেনীবাসীর এই দুর্ভোগ অনেকাংশে লাঘব হবে।
সরকারের উদ্দেশে তাঁরা বলেন, “প্রয়োজনে আমরা জমি দেবো। সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয়, আমরা নির্ভেজাল জমির ব্যবস্থা করে দেবো। শুধু আমাদের ফেনীকে এই সুযোগটা দিন।”
ফেনী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন খানের সভাপতিত্বে ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল আজিজের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, জেলা জামায়াতের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুর রহিম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা একরামুল হক ভূঁইয়া, হেফাজতে ইসলামের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওমর ফারুক, ড্যাব এর ফেনী জেলা সাধারণ সম্পাদক ডা.
ঢাকা/সাহাব/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নূর মোস্তফার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চেয়ে মানববন্ধন
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় গুলিতে নিহত নূর মোস্তফাকে শহীদ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং শহীদ পরিবারকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে দুটি সংগঠন। স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি (এসএডি) ও জুলাই রেকর্ডস নামে দুটি সংগঠন আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
জুলাই রেকর্ডসের সদস্য ইব্রাহিম মাহমুদ বলেন, নূর মোস্তফা গত ৫ আগস্ট কক্সবাজারের ঈদগাঁও থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন দুপুরে হাসপাতালে মারা যান। তাঁর বাবা শফিউল আলম আর মা নূর বেগম।
ইব্রাহিম মাহমুদ বলেন, নূর মোস্তফার মা–বাবা ১৯৯২ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন এবং ঈদগাঁও এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। নূর মোস্তফার জন্ম ও শিক্ষাজীবন বাংলাদেশে হলেও মা–বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় তাঁর নাম জুলাই শহীদের রাষ্ট্রীয় তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তাঁর পরিবার কোনো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি বা সহায়তা পায়নি।
মানববন্ধনে ইব্রাহিম মাহমুদ বলেন, ‘আমরা এখানে খুব বেশি কিছুর জন্য দাঁড়াইনি। আমরা দাঁড়িয়েছি ইনসাফের জন্য। সরকারে থাকা ছাত্র উপদেষ্টাকে জানানোর পর, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার পরও যদি নূর মোস্তফাকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না দেওয়া হয়, তাহলে এটা হবে সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় লজ্জার।’
মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, ‘আমরা আগেও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে শহীদ নূর মোস্তফার স্বীকৃতির জন্য স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। এ ছাড়া তাঁর পরিবারকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। জুলাই শহীদদের এবং আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা সরকারের দায়িত্ব।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মদ বলেন, ‘নূর মোস্তফা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে শহীদ হয়েছেন। অবিলম্বে তাঁকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে।’
জুলাই ম্যাসাকার আর্কাইভের সদস্য হাসান ইনাম বলেন, ‘একজন শহীদের স্বীকৃতি আমরা আদায় করতে পারছি না। নূর মোস্তফার স্বীকৃতির দাবিতে আমরা অনলাইনে অ্যাক্টিভিজম করলে সেখানে যাঁরা জুলাইকে উপজীব্য করে রাজনীতি করে, তাঁরা সংহতি জানাননি। নিজ দলের কর্মীদের নিয়ে কথা বললেও নূর মোস্তফাকে নিয়ে কথা বলেন না।’