পলাতক মামলার আসামি ধরতে গিয়ে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ তিন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে গাজীপুর মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের থেকে ১৮ রাউন্ড গুলি ও ১টি বিদেশি পিস্তল জব্দ করা হয়। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার সিলমারি এলাকার গ্রামের তরিকুল ইসলাম ওরফে তরী (৩৮), মো. ও মো. রওশন ইসলাম (৪০) ও একই উপজেলার খারিজাথাক গ্রামের মো.

ইনাম আলী (৩৫)। 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মাসুদ আনোয়ার আকন্দ। 

উপপরিদর্শক বলেন, “একাধিক মামলার পলাতক আসামি তরীকে গ্রেপ্তার করতে বৃহস্পতিবার রাতে জয়দেবপুর থানার নয়াপাড়া অভিযান চালানো হয়। সন্ত্রাসী তরী কাজল মার্কেটে আধাপাকা বসতঘরের দক্ষিণ পাশে লুকিয়ে ছিল। সেখান হতে তরী ও তার ভাই রওশন ও ইনাম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আশপাশের লোকজনের সামনে তাদের তল্লাশি করা হলে তাদের কাছ থেকে ১৮ রাউন্ড গুলি ও ১টি বিদেশি পিস্তল জব্দ করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আসামি মো. তরিকুল ইসলাম ওরফে তরীর বিরুদ্ধে গাজীপুর সদর থানা, সিরাজগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুর, গেন্ডারিয়া, মুন্সিগঞ্জ ও চট্টগ্রাম থানায় মামলা রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই একাধিক মামলার আসামি।” 

জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মাসুদ আনোয়ার আকন্দ বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সড়কে রক্তের দাগ

ঈদের সময় সড়ক দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। দুর্ঘটনায় প্রাণহানি সংক্রান্ত সংবাদপত্রের সাম্প্রতিক খবরগুলো বড় বেদনার। স্বাভাবিক সময়েই অনেক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। শহীদ রওশনের মায়ের চোখের পানি এখনও শুকায়নি। ২০১৮ সালের সেই জুলাইয়ের সকালে তিনি তাঁর ছেলেকে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন স্বপ্ন নিয়ে। ফিরে পেয়েছিলেন রক্তাক্ত দেহ। একটি বেপরোয়া বাসের চাকায় শুধু একটি প্রাণই নয়, একটি পরিবারের সব স্বপ্ন চূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।
প্রতিদিন বাংলাদেশের সড়কে গড়ে ২২ জন প্রাণ হারান। প্রতিটি মৃত্যুর পেছনে রয়েছে একটি পরিবারের অশ্রু আর অপূরণীয় ক্ষতি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, গত দশকে আমরা হারিয়েছি ৭৫ হাজার প্রাণ, যা একটি ছোট শহরের জনসংখ্যার সমান।

আমাদের সড়কগুলো যেন মৃত্যুর মিছিল চলার উন্মুক্ত প্রান্তর। প্রতি ১০০টি গাড়ির মধ্যে ৩৫টি মেয়াদোত্তীর্ণ। ৪০ শতাংশ চালক বিনা লাইসেন্সে গাড়ি চালায়। এর পেছনে রয়েছে জটিল নেটওয়ার্ক– দুর্নীতি, অদক্ষতা। সর্বোপরি আমাদের সামাজিক অবক্ষয়।
২০১৮ সালের ছাত্র আন্দোলন ছিল এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে এক জোরালো প্রতিবাদ। কিন্তু ছয় বছর পর আমরা কতটুকু এগিয়েছি? ডিজিটাল লাইসেন্সিং সিস্টেম চালু হয়েছে, কিন্তু অনেক আবেদনকারী এখনও 
দালালের কারণে হয়রানির শিকার। আইন হয়েছে, কিন্তু প্রয়োগ দুর্বল।
আমাদের সমস্যা শুধু প্রযুক্তিগত নয়। এটি মূলত সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়। প্রতিটি সড়ক দুর্ঘটনার পেছনে রয়েছে সামাজিক অবক্ষয়ের ছাপ। আমরা যেখানে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন করছি, সেখানে আমাদের মানবিক মূল্যবোধ পিছিয়ে পড়ছে।

সরকারের নতুন উদ্যোগগুলোকে স্বাগত জানাই। পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন সামাজিক বিবেককে জাগ্রত করা। প্রত্যেক চালক যেন বুঝতে পারে, তার হাতে শুধু স্টিয়ারিং নয়, অসংখ্য প্রাণের দায়িত্বও রয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ। লাইসেন্স প্রদান থেকে শুরু করে গাড়ি পরিদর্শন– সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে। শুধু সড়ক নয়, আমাদের প্রয়োজন একটি সমন্বিত যানবাহন ব্যবস্থা, যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে।
২০১৮ সালের সেই নিরাপদ সড়ক আন্দোলন আমাদের দেখিয়েছিল– পরিবর্তন সম্ভব। আজ আমাদের প্রয়োজন সেই চেতনাকে আবার জাগিয়ে তোলা। প্রতিটি প্রাণ অমূল্য, প্রতিটি দুর্ঘটনা অপ্রয়োজনীয়। রওশনের মায়ের মতো চোখের জল যেন আর কোনো মাকে ফেলতে না হয়। সড়কগুলো যেন আর না হয় কবরস্থান। এটি শুধু একটি স্বপ্ন নয়, অধিকার। আসুন,সবাই মিলে গড়ে তুলি এমন এক বাংলাদেশ, যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা হবে অতীতে ঘটে যাওয়া করুণ ইতিহাস, যা বর্তমানে নেই।

মো. রাইসুল ইসলাম: স্বেচ্ছাসেবক, চট্টগ্রাম 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জিএম কাদেরকে গ্রেপ্তার দাবি রওশন গ্রুপের
  • সড়কে রক্তের দাগ
  • রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান ছিদ্দিকুরের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা