পাকিস্তানের কাছেও হেরে আরও অপেক্ষায় বাংলাদেশের মেয়েরা
Published: 19th, April 2025 GMT
টেনিসের পরিভাষা ব্যবহার করে বলাই যায় জানুয়ারিতে বাংলাদেশের মেয়েদের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরটা ছিল ‘প্রথম ম্যাচ পয়েন্ট’। ওয়ানডে সিরিজটা হেরে উইমেন্স চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে সরাসরি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ হারায় বাংলাদেশ। তাতে বাছাইপর্বে ‘অবনমন’ও হয় বাংলাদেশের।
পাকিস্তানে চলমান সেই বাছাইপর্বে টানা তিনটি জয়ের পর আবার ম্যাচ পয়েন্টের সামনে দাঁড়ায় বাংলাদেশ নারী দল। এবার প্রতিপক্ষ সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জিতলেই বিশ্বকাপে, বৃহস্পতিবার সেই ম্যাচটিতেও হেরে অপেক্ষা বাড়ায় বাংলাদেশ।
এরপর বাংলাদেশর জন্য ‘তৃতীয় ম্যাচ পয়েন্ট’ হিসেবে আসে পাকিস্তান ম্যাচটি। আজ সেই ম্যাচটিতেও হেরেছে বাংলাদেশ। তবে তাতে বাংলাদেশের বিশ্বকাপ সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায়নি। নেট রান রেট কমে +০.
লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডে আজ ব্যাটিংটা বাজেই করেছে বাংলাদেশ। পুরো ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে করতে পেরেছে ১৭৮ রান। রিতু মনি (৪৮) ও ফাহিমা খাতুনের (৪৪*) দুটি চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস না থাকলে এই রানও তো হয় না।
বোলিংয়ে যেমন শুরু দরকার, তেমন শুরুই ছিল বাংলাদেশের। পেসার মারুফা আক্তার ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই এলবিডব্লু করে দেন পাকিস্তান ওপেনার শাওয়াল জুলফিকারকে। এরপর সিদরা আমিন ও মুনিবা আলীর ৮০ রানের জুটি ম্যাচ থেকে মোটামুটি ছিটকে ফেলে বাংলাদেশকে। ৩৭ রান করা সিদরাকে লেগ স্পিনার রাবেয়া খাতুন উইকেটকিপারের ক্যাচ বানানোর পর আলিয়া রিয়াজকে ৭৪ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে পুরোপুরিই ছিটকে ফেলে পাকিস্তান। মুনিবা ৬৯ রান করে আউট হওয়ার পর নাতালিয়া পারভেইজকে বাকি পথটা পাড়ি দেন আলিয়া।
৩৯.৪ ওভারেই ৭ উইকেটে জিতে যায় পাকিস্তান। আলিয়া ৫২ রানে ও নাতালিয়া ১৩ অপরাজিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
‘ফেসবুক গল্পের’ উৎস খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে এল আসল ঘটনা
রাজশাহীর বাঘায় ট্রেনের নিচে পড়ে এক পেঁয়াজচাষি ‘আত্মহত্যা’ করেছেন, এমন একটি ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘হৃদয়বিদারক গল্প’ ছড়িয়ে পড়ে। যাঁরা এটি ফেসবুকে প্রকাশ করেছেন, তাঁদের সবাই ‘মূল গল্পটা’ একই রেখেছেন, শুধু ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা যুক্ত করে দিয়েছেন।
ফেসবুকের পোস্টে লেখা ছিল, ওই বৃদ্ধের স্ত্রী আট মাস আগে মারা গেছেন। দুই মেয়ে তাঁদের বাড়িতে কিছুদিন রেখে বের করে দিয়েছেন। দুই ছেলেও বাবার জিনিসপত্র ফেলে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে এ ঘটনা পড়তে পড়তে মাথার মধ্যে একটা প্রশ্ন জাগে, একটি পরিবারের সবাই কি প্রায় ৭০ বছর বয়সী একজন মানুষকে এভাবে ত্যাগ করতে পারেন?
ফেসবুকে ঘটনাটি পড়ে সবাই বৃদ্ধের সন্তানদের তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে কমেন্ট করছিলেন। আমার স্ত্রী দুলারী খাতুনও ঘটনাটি পড়তে পড়তে খুব ‘আহা, আহা’ করছিলেন। কিন্তু আমার এমন মনে হচ্ছিল না। মনে আসে, কেউ ফেসবুকে ভিউ বাড়ানোর জন্য কাজটা করেনি তো? সিদ্ধান্ত নিলাম, সকালে উঠে ওই বৃদ্ধের বাড়িতে যাব।
এরপর ঘটনাস্থলে গেলাম। একটি শোকাহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্থানীয় পরিচিত কাউকে পেলে সুবিধা হয়। এ জন্য স্থানীয় সাংবাদিক আমার ঘনিষ্ঠ গোলাম তোফাজ্জল কবিরকে ডেকে নিলাম। মৃত ওই বৃদ্ধের নাম মীর রুহুল আমিন। তাঁর ভাতিজা মোফাক্কর হোসেনের সঙ্গে গোলাম তোফাজ্জলের ঘনিষ্ঠতা আছে। তিনি একটি জানাজায় ছিলেন। একটু সময় নিলেন। দুপুর গড়িয়ে গেল। দুজন বাঘা উপজেলার মাঝপাড়ার বাউসায় তাঁদের বাড়িতে যাই।
আরও পড়ুননেটিজেনরা ‘ধুয়ে দিচ্ছে’ পরিবারকে, বাস্তবতা ভিন্ন২০ ঘণ্টা আগেবাড়িতে গিয়ে পঞ্চাশোর্ধ এক নারীকে পাই। পরিচয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া মীর রুহুল আমিনের স্ত্রী। অথচ ফেসবুকে লেখা হয়েছে, তাঁর স্ত্রী আট মাস আগে মারা গেছেন। এরপর তাঁর কাছে জানতে চাইলাম, ছেলে-মেয়ে কয়জন? মরিয়ম বেগম বললেন, তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। ২০-২২ বছর আগে মেয়ের বিয়ে হয়েছে ঈশ্বরদীতে, সেখানেই থাকেন। আর তাঁর ছেলে ঢাকায় একটি চাকরি করেন। সেখানে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। বাড়িতে তাঁরা স্বামী-স্ত্রী দুজন থাকতেন।
এরপর আর বুঝতে বাকি থাকে না যে দুই সন্তানের জিনিসপত্র ফেলে দেওয়া, দরজা বন্ধ করে বাবাকে বাইরে রাখা, চলে যেতে বলা—ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ঘটনাগুলোর সত্যতা নেই।
মরিয়ম বেগম বলেন, তাঁদের কোনো অশান্তি নেই। ঘটনার দিন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেছেন। সকালে খেয়ে গেছেন। বেলা তিনটার আগে-পরে তাঁর সঙ্গে দুবার ফোনে কথা হয়েছে।
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মাঝপাড়া বাউসা গ্রামে মীর রুহুল আমিনের বাড়ি