রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় আবু সাঈদ, জেন-জি, ছিল ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্ন
Published: 19th, April 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ, জেন-জি ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিয়ে প্রশ্ন এসেছে। এ ছাড়া একাধিক প্রশ্নে ভুল ও সঠিক উত্তর নেই, এমন প্রশ্নও করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নগুলোর ক্ষেত্রে সব পরীক্ষার্থী পূর্ণ নম্বর সুবিধা পাবেন।
আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় এমন প্রশ্ন করা হয়েছে। ইউনিটটির দ্বিতীয় শিফটের ভর্তি পরীক্ষা বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে তিনটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
ভর্তি পরীক্ষার সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে অঙ্কিত শিল্পকর্ম ‘উন্নত মম শির’-এর শিল্পী কে?’ উত্তর হিসেবে চারটি নাম ছিলÑ‘বীরেন সোম’, ‘কৌশিক সরকার’, ‘শহীদ কবির’, ‘চুনিলাল দেওয়ান’। উল্লেখ্য, আবু সাঈদের স্মরণে নির্মিত শিল্পকর্ম ‘উন্নত মম শির’ অঙ্কন করেছেন শিল্পী শহীদ কবির।
সাধারণ জ্ঞান অংশের আরেকটি প্রশ্নে এসেছে, ‘কোন সময়কালকে জেনারেশন-জি (জেন-জি)-এর ব্যাপ্তি ধরা হয়?’ উত্তর হিসেবে ছিলÑ ‘১৯৬০-১৯৮০’, ‘১৯৯৭-২০১২’, ‘২০০১-২০২০’ ‘২০১০-২০২৪’।
এ ছাড়া বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকান নিয়ে দুটি প্রশ্ন এসেছে। সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয় কত তারিখে?’ এ ছাড়া আরেকটি প্রশ্নে বলা হয়েছে, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কতটি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে?’
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল এড়াতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করণীয় ও সতর্কতা৪ ঘণ্টা আগেএকাধিক ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নএবারের ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষায় কয়েকটি ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্ন পাওয়া গেছে। সাধারণ জ্ঞান অংশে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘MNA কোন দেশের বার্তা সংস্থা?’ উত্তর হিসেবে চারটি অপশন ছিলÑ ‘নেপাল’, ‘মায়ানমার’, ‘ভুটান’, ‘মালদ্বীপ’। উল্লেখ্য, এমএনএ হচ্ছে মিডল্যান্ড নিউজ অ্যাসোসিয়েশন (এমএনএ মিডিয়া), যা ইংল্যান্ডভিত্তিক একটি সংবাদপত্র প্রকাশনা সংস্থা। এটি ১৮৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে বার্তা সংস্থার স্থলে বিমান সংস্থা হলে উত্তর হতো মিয়ানমার। এই অপশন উত্তরপত্রে ছিল। সে হিসেবে এমএনএর পূর্ণরূপ- ‘মিয়ানমার ন্যাশনাল এয়ারলাইনস’।
বাংলা অংশে একটি প্রশ্নে ভুল বানান দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘অমোঘ-মহাপ্রাণ ধ্বনিগুচ্ছ হলো-’। উল্লেখ্য, বাংলা বর্ণমালায় ‘অমোঘ’ শব্দের কোনো ধ্বনিগুচ্ছ নেই। এটি হবে অঘোষ।
আরও পড়ুনকুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন, সামান্য ত্রুটির তাৎক্ষণিক সমাধান ৮ মিনিট আগেএ ছাড়া আরেকটি প্রশ্ন করা হয়েছে ‘দিলদরিয়া কোন সমাস?’ সঠিক উত্তর রূপক কর্মধারয় সমাস তবে উত্তরের অপশনগুলোতে তা ছিল না। একই অংশে আরেকটি প্রশ্ন করা হয়েছে- ‘আন্না শব্দটির সন্ধি বিচ্ছেদ কোনটি?’ শব্দটির সঠিক সন্ধিবিচ্ছেদ হলো—আর+না। এই উত্তরও প্রদত্ত চারটি অপশনে পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন ও ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রধান সমন্বয়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ বেলাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশ্নপত্রে কিছু ভুল আছে বলে শুনেছি। তবে সেগুলো এখনো দেখিনি। তবে এতে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না। যেসব প্রশ্নে ভুল আছে, সেগুলোর পূর্ণ নম্বর সুবিধা সব শিক্ষার্থী পাবেন। এটি মূলত প্রিন্টিংজনিত সমস্যার কারণে হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ য় ট র ভর ত ইউন ট র সরক র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
‘মৃত্যুর দিন গুনতে থাক গুলি করুম ঠিক মাথায়’
আধিপত্য বিস্তার ও স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০২৪ সালের ৭ জুলাইয়ের এ ঘটনায় পদটি শূন্য হওয়ায় ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সিদ্দিক বেপারিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। কয়েক মাস যেতেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকেও গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়ে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে দেয়ালে দেয়ালে।
পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘মৃত্যুর দিন গুনতে থাক, মৃত্যু খুব কাছে তোর। এবার আমি তোরে গুলি করুম, ঠিক মাথায়। আইতাছি কিছুদিন পরে প্রস্তুতি নে মরার জন্য আপ্পু বেপারি।’ এমন হুমকি পেয়ে পাঁচগাঁও ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক বেপারি ওরফে আপ্পু বেপারি ইউএনওকে বিষয়টি জানান। তাঁর পরামর্শে টঙ্গিবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এতে কারা জড়িত, তা শনাক্ত করতে পারেনি।
এ পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকলেও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে হত্যার হুমকির পর আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই গত মঙ্গলবার রাতে কাপড় পেঁচিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বৈদ্যুতিক মিটারে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সকালে ইউপি সচিব এ দৃশ্য দেখে ইউএনওকে জানান। পরে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরিষদের নিরাপত্তার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এসব ঘটনায় কারা জড়িত, তা কেউ বলতে পারছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সচিব, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উদ্বেগে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক বেপারি বলেন, ‘আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দেওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের বৈদ্যুতিক মিটারে কাপড় পেঁচিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে মিটারের চারপাশ আগুনে
পুড়ে গেছে। বুধবার সকালে পরিষদে গিয়ে ইউপি সচিব আগুন দেওয়ার ঘটনা দেখতে পেয়ে আমাকেসহ উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। খবর পেয়ে ইউএনও মহোদয় সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৭ জুলাই বেলা দেড়টার দিকে আধিপত্য ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পাঁচগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম সুমন হালদারকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন ৮ জুলাই তাঁর ছোট ভাই ইমন হালদার বাদী হয়ে সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিলেনুর রহমান মিলনসহ সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় তিন-চারজনকে আসামি করে মামলা করেন। এ মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে।
টঙ্গিবাড়ী থানার ওসি মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, গুলি করে হত্যার হুমকির ঘটনায় করা জিডির তদন্ত করছে পুলিশ। মিটারে আগুন দেওয়ার ঘটনার বিষয়টিও জেনেছেন। ঘটনার নিবিড় তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বৈদ্যুতিক মিটারে আগুন এবং হত্যার হুমকির বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অবহিত করেছেন বলে জানান ইউএনও মো. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, থানায় সাধারণ ডায়েরির পাশাপাশি নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ইউনিয়ন পরিষদে দ্রুত সিসি ক্যামেরা স্থাপনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।