পাটগ্রাম সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
Published: 19th, April 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা থেকে আজিনুর রহমান (২৪) নামের এক বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ। গতকাল শুক্রবার বেলা ২টা থেকে ৩টার মধ্যে বাউরা ইউনিয়নের জমগ্রাম (ডাঙ্গাটারী) সীমান্তের মেইন পিলার ৮০১-এর সাবপিলার ১০-১১–এর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
আটক আজিনুর রহমান একই গ্রামের বাসিন্দা নুর হোসেনের ছেলে। ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আশাদুল হক।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সীমান্তের ৮০১ নম্বর প্রধান পিলার ও ১০ থেকে ১১ নম্বর উপপিলার লাগোয়া এলাকার অংশের ভুট্টাখেত পেরিয়ে আজিনুর ভারতের ভেতরে চলে যান। এ সময় ভারতের কোচবিহার জেলার ৩০ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সরস্বতী ক্যাম্পের টহল দল তাঁকে চোরাকারবারি সন্দেহে আটক করে। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাঁকে বিএসএফ ক্যাম্পে নেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর ডাঙ্গাটারী বিজিবি ক্যাম্প থেকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়। বিএসএফ জানিয়েছে, আজ শনিবার পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
বিজিবির ৫১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আলদীন বলেন, আজিনুর অবৈধভাবে ভারতের ভেতরে প্রবেশ করেন। গরু নিয়ে ফেরার সময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে ধরে বিএসএফের হাতে তুলে দেন। বিএসএফ জানিয়েছে, তাদের কাছে ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও অন্যান্য প্রমাণ আছে। বর্তমানে আজিনুর ও গরুটি বিএসএফের বিআরবি কোম্পানি সদর ক্যাম্পে আছে। তাঁকে যেন কোনো ধরনের নির্যাতন করা না হয়, এ বিষয়ে বিএসএফকে অনুরোধ করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আইন ভেঙে বেড়া নির্মাণচেষ্টা, বাধায় পিছু হটল বিএসএফ
বিএসএফের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সীমানা আইন লঙ্ঘন করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। তবে বিজিবির বাধায় কাজ বন্ধ করে পিছু হটে বিএসএফ।
গতকাল বুধবার দুপুরে নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর সীমান্তে এই ঘটনা ঘটে। ভবানীপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা দেশের মাটি রক্ষায় এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে বলে জানিয়েছেন নেত্রকোনা-৩১ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএসএম কামরুজ্জামান (পিবিজিএম)।
জানা গেছে, বুধবার দুপুরে সীমান্তবর্তী ১১৫৬ নম্বর পিলারের কাছে সীমানা আইন লঙ্ঘন করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য কাজ শুরু করেন বিএসএফ সদস্যরা। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ওই স্থানে অবস্থান নিয়ে তাদের নিষেধ করেন। বিএসএফ ফের নিষেধ উপেক্ষা করে বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করলে বিজিবির সঙ্গে এলাকাবাসীও যোগ দিয়ে প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হন বিএসএফ সদস্যরা।
স্থানীয় কৃষক তোতা মিয়া বলেন, ‘এই পরিস্থিতির জন্য সীমান্তবর্তী রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কিছুটা দায়ী। প্রায় এক বছর ধরে রাস্তা নির্মাণকাজ নিয়ে গড়িমসি করছেন ঠিকাদার। আমাদের দেশের রাস্তায় ও ব্রিজের কাজ চলমান থাকায় ভারতের একটু রাস্তা ব্যবস্থার করতে হয় আমাদের। ওই চলাচল দেখে বিএসএফ প্রায় সময়ই গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে আসে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবি সদস্য জানান, বর্তমানে রাস্তার নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। বুধবার সকালে হঠাৎ বিএসএফের একটি দল ওই সীমান্ত এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য আসে। আইন অনুযায়ী দুই দেশের সীমান্ত পিলার থেকে দেড়শ গজের মধ্যে ফসল চাষ ছাড়া স্থায়ী কোনো স্থাপনা কিংবা বেড়া দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু বিএসএফ সদস্যরা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে বেড়া নির্মাণ করতে আসে। জানতে পেরে বাধা দেওয়া হয়। বাধার মুখে কাজ না করেই ফিরে যান বিএসএফ সদস্যরা।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাভিদ রেজওয়ানুল কবীর বলেন, বাংলাদেশ সীমান্তে রাস্তা নির্মাণ না হলে সহজে সমস্যার সমাধান হবে না। ওই এলাকায় রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণকাজে নদী থেকে বালু ব্যবহার নিয়ে একটু জটিলতা রয়েছে। সামনে বর্ষা মৌসুম, ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে মানুষের চলাচলের বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নেত্রকোনা-৩১ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এএসএম কামরুজ্জামানের ভাষ্য, বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক বিজিবির সদস্যদের প্রতিবাদের ফলে বেড়া স্থাপনের কাজ বন্ধ করেছে বিএসএফ। বাংলাদেশ সীমান্তে রাস্তা ও ব্রিজ নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় এখানকার মানুষ ভারত সীমান্ত দিয়ে চলাচল করে। দ্রুত রাস্তা নির্মাণকাজ শেষ না করা হলে এই সমস্যা থেকেই যাবে।