মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুন, প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩
Published: 19th, April 2025 GMT
রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় আকরাম আলী (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি ও তার আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১১টায় র্যাব-৫ এর সদর দপ্তরে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে, শুক্রবার দিবাগত রাতে নওগাঁ সদরের রামরায়পুরের আড়পাড়া থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মহানগরীর তলাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে নান্টু মিয়া (২৮) ও একই এলাকার মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে খোকন মিয়া (২৮)। এর মধ্যে, নান্টু মিয়া মামলার প্রধান আর খোকন মিয়া তিন নম্বর আসামি।
আরো পড়ুন:
নিজ ঘরে মিলল যুবদল নেতার অর্ধগলিত মরদেহ
মুন্সীগঞ্জে ভাড়া বাসায় মিলল শ্রমিকের ঝুলন্ত মরদেহ
র্যাব-৫ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘‘শনিবার সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’
এর আগে, শুক্রবার এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নগরীর তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকা থেকে রুমেল (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে বোয়ালিয়া থানা পুলিশ। রুমেল তালাইমারি এলাকার রেজাউল ইসলামের ছেলে। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ নিয়ে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল তিনে।
এর আগে, গত বুধবার মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বখাটেরা আকরাম আলীকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় সাত জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
ঢাকা/কেয়া/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
অন্তহীন দুঃস্বপ্নে বন্দি গাজার বাসিন্দারা
ইসরায়েলের বর্বর বোমা হামলায় বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে গাজা। আশ্রয়কেন্দ্র, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, মসজিদ কোনো কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটে চলেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ উপত্যকার বাসিন্দারা। যেখানেই তারা আশ্রয় নিচ্ছে, হামলা করে তা গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুলি ছোড়া হচ্ছে যাত্রাপথেও। যুদ্ধবিরতি ভেঙে আবারও হামলা শুরুর পর এক মাস ধরে গাজায় কোনো খাদ্য সহায়তা ঢুকতে দেয়নি দখলদার ইসরায়েল। খাবার, পানি, চিকিৎসার অভাব এবং চারদিকে বিস্ফোরণের মধ্যে গাজাবাসী যেন এক অন্তহীন দুঃস্বপ্নে বন্দি হয়ে পড়েছে। এ দুর্দশার কোনো শেষ নেই। আশা নিয়ে বেঁচে থাকা তাদের জন্য কঠিন হয়ে উঠছে।
১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় স্বাস্থ্যসেবা বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে। সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ২১টি আংশিকভাবে সেবা দিচ্ছে। চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ডা. উইসাম সুক্কার ও তাঁর দল উত্তর গাজার একটি অফিসকে ক্লিনিকে রূপান্তর করেছেন। তারও একটা অংশ বোমা হামলায় ধসে পড়েছে।
তিনি বলেন, খুব সীমিত সম্পদ নিয়ে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও আমরা উত্তর গাজায় থাকার চেষ্টা করছি। খাবার ও পানির অভাবের কারণে এখানে অপুষ্টি এবং বিভিন্ন রোগব্যাধি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। পেটেরপীড়া থেকে শুরু করে চর্মরোগ খুব সাধারণ হয়ে পড়েছে। আমরা অনেক শিশুকে পাই যারা শ্বাসনালির সংক্রমণ ও ডায়রিয়ায় ভুগছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় একই জায়গায় অনেক শিশু থাকে এবং ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। আমাদের চ্যালেঞ্জ ক্রমেই বাড়ছে। কারণ বিপুলসংখ্যক রোগীর বিপরীতে চিকিৎসা সরঞ্জাম খুবই কম। এ ছাড়া আমরা জটিল সমস্যা পাই এবং আমরা জানি না যে এই রোগীদের কোথায় পাঠাতে হবে। কারণ গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ক্লিনিক থেকে বের হওয়ার সময় সুক্কার তাঁর পরিবারকে ফোন করে, যারা গত দেড় বছরে তাঁর সঙ্গে ৯ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তিনি বলেন, গাজার অন্যদের মতো আমার শিশুদের জন্যও পরিষ্কার পানি ও খাবার নিশ্চিত করতে প্রতিদিন যুদ্ধ করতে হয়। আমাদের বিদ্যুৎ নেই, সব জায়গায় মোবাইল ফোনের ব্যাটারি চার্জ করার ব্যবস্থা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, কোনো আশা রাখা সত্যিই কঠিন। আমরা এমন এক দুঃস্বপ্নের মধ্যে বাস করছি, যা শেষ হচ্ছে না। এই যুদ্ধ কখন শেষ হবে?
গতকাল শনিবারও গাজাজুড়ে ভয়াবহ ইসরায়েলি হামলা চালানো হয়েছে। দক্ষিণে রাফাহ ও খান ইউনিস থেকে শুরু করে উপত্যকায় কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত নুসাইরাত শরণার্থী শিবির, উত্তরে বেইত লাহিয়া এবং বেইত হানুনে হামলা চালানো হয়েছে। বিশেষ করে খান ইউনিসের আশপাশের এলাকায় তিনটি পৃথক অভিযানে ১১ জন নিহত হয়েছেন। সবমিলিয়ে শুক্রবার ভোর থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৮ মাস ধরে ইসরায়েলের হামলায় উপত্যকায় কমপক্ষে ৫১ হাজার ৬৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৬ হাজার ৫০৫ জন আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) একটি জরুরি সতর্কতায় জানিয়েছে, গাজার এখনই খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। সেখানে লাখ লাখ মানুষ ক্ষুধায় মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে। ইসরায়েলি বোমা হামলা এবং অবরোধের কারণে সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে না পেরে মানুষ মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে।