বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) আর্থিক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে তদন্ত চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মুজিব বর্ষ উদ্‌যাপন উপলক্ষে বিসিবির ব্যয়ে প্রায় ১৮ কোটি টাকার গরমিল, বিপিএলে টিকিট বিক্রিতে স্বচ্ছতার অভাব এবং তৃতীয় বিভাগের দল গঠনে অনিয়ম এসবই এখন দুদকের অনুসন্ধানে।

বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানালেন, এই তদন্তে বোর্ড সর্বাত্মক সহায়তা করবে এবং কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ মিললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শনিবার সকালে রাজধানীতে এক ক্রীড়া অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যেদিন দুদক বিসিবিতে অভিযান চালায়, সেদিনই আমি দেশে ফিরি। মনে হয়েছে, তারা নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে এসেছে। বোর্ড হিসেবে আমরা পূর্ণ সহযোগিতা করব। দুদকের যেসব নথি চাওয়া হয়েছে, সিইও তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে।’

ফারুক আরও বলেন, ‘তদন্তে কিছু বেরিয়ে এলে আমরা সেটিকে ধামাচাপা দেব না। বরং কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমি সিইওকে বলেছি, যেকোনো তথ্য তদন্ত কর্মকর্তারা চাইলে যেন সঙ্গে সঙ্গে দেওয়া হয়। সত্যি কিছু পাওয়া গেলে শাস্তির ব্যাপারে আমরা দ্বিধা করব না।’

দেশীয় ক্রিকেটে পাতানো খেলার প্রবণতা নিয়েও কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। তার মতে, এবার কিছুটা কমলেও পুরোপুরি বন্ধ হয়নি ফিক্সিং। ‘এবার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগে কিছুটা হলেও ফিক্সিং কমেছে। তবে কিছু ক্লাব বাছাইপর্বে দুটি করে দল তুলেছে, এটা কী উদ্দেশ্যে করেছে তা খতিয়ে দেখা দরকার। এখনো কিছু ম্যাচ বাকি আছে, সেগুলো নিয়েও তদন্ত চলছে’, বলেন ফারুক।

তিনি আরও যোগ করেন, ‘পাতানো খেলা থাকলে কখনোই ভালো ক্রিকেটার আসবে না। আপনি যদি সেরা ব্যাটারকে বলেন ‘ডাক’ মারতে, সেরা বোলারকে বলেন ‘নো’ বা ‘ওয়াইড’ দিতে, তাহলে সেটা খেলা নয়। আমরা এই সংস্কৃতি বন্ধ করতে চাই। যদিও সময় লাগবে, কিন্তু টেকনিক্যাল কমিটি কাজ শুরু করেছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ র ক আহম দ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ মিছিল

জুলাইয়ে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের দেশব্যাপী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্ত্বরে এ বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।

এ সময় ‘অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘জেগেছে রে, জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘খুনি লীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘আলি রায়হান মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেব রক্ত’, ‘আওয়ামীলীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে’, ‘আমার সোনার বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগানে দেন তারা।

আরো পড়ুন:

রাবির ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় সন্তোষজনক উপস্থিতি

রাবি ভর্তি পরীক্ষায় শহীদ আবু সাঈদ ও জেন-জি নিয়ে প্রশ্ন

বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, “দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানিতে নাৎসি পার্টি গণহত্যা চালানোর দায়ে নিষিদ্ধ হয়েছিল। তারা এখনো নিষিদ্ধ হয়ে আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশে গণহত্যা চালানোর পরেও নিষিদ্ধ হচ্ছে না। যে আওয়ামী লীগের গায়ে শাপলা হত্যাকাণ্ড, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রক্ত লেগে আছে, সেই আওয়ামী লীগকে কোন স্বার্থ বাস্তবায়ন করার জন্য তাদের নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না? অন্তর্বতী সরকারকে বলবো, আপানারা অতিদ্রুত গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করেন। সারা বাংলার ছাত্র জনতা আপনাদের সঙ্গে আছে।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “৫ আগস্টে আমরা আওয়ামী লীগকে দাফন করলেও আমাদের কাছে ডেথ সার্টিফিকেট নেই। আমরা আওয়ামী লীগের ডেথ সার্টিফিকেট চাই। যেসব রাজনৈতিক দল আজ আওয়ামী লীগের প্রতি নমনিয়তা দেখাচ্ছে, তাদের জানিয়ে দিতে চাই, ৫ আগস্ট না আসলে জামায়াত-বিএনপিকে ৫ আগস্টের দায় নিয়ে নিষিদ্ধ হতে হত।”

তিনি‌ বলেন, “হাজার হাজার ছাত্র আপনাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছে শুধু জুলাই গণহত্যাসহ সব গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য। আমরা ইন্টেরিমকে  জানাতে চাই, আপনারা অনতিবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে সংস্কার ও নির্বাচনের ব্যবস্থা করেন। তা না হলে আওয়ামিলীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে আবারো রাজপথে নামবে ছাত্র-জনতা।”

আরেক সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছেন, তারা রাজনীতি করেনি। তারা রাজনীতির নামে ফ্যাসিবাদের চর্চা করেছে। শেখ মুজিব ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে ধূলিসাৎ করে বাকশাল গঠন করেছে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাই নষ্ট করে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “পৃথিবীতে আমরা দেখেছি, যে দেশে কোনো রাজনৈতিক দল গণহত্যায় জরিয়েছে, তারা আর কখনো রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। এই আওয়ামী লীগ শুধু গণহত্যা করেছে, তা নয়। তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকেও বিনষ্ট করেছে। সুতরাং আওয়ামী লীগকে অনতিবিলম্বে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অথবা গণভোটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।”

সম্পর্কিত নিবন্ধ