দেশের জন্য কাজ করছেন নাকি আ’লীগকে পুনর্বাসনের অপেক্ষা
Published: 19th, April 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, আপনারা প্রায় নয় মাস ক্ষমতায় আছেন। মনে হচ্ছে, ক্ষমতা ভোগ করছেন। জনগণের সমস্যা নিরসনে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নেই। পাঁচই আগস্টের পর স্বৈরাচারের গুণ্ডাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনগণ যে মামলাগুলো করেছে, অভিযোগ দাখিল করেছে- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত উক্ত মামলাগুলোর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দৃশ্যত কারো বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত করে নাই। আপনারা কি দেশের জন্য কাজ করছেন নাকি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্য অপেক্ষা করছেন?
আজ শনিবার রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে আয়োজিত এক যোগদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন এলডিপি সভাপতি। এদিন লে.
কিছু কিছু জায়গায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে উল্লেখ করে এলডিপি সভাপতি বলেন, আমাদেরকে ভারতের দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া উচিত হবে না। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়াও সঠিক হবে না। আমি এখানে সাবধান ও হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, দেশ রক্তপাতের দিকে এগোচ্ছে। হয়ত আপনাদেরকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। পাপ কিন্তু বাপকেও ছাড়ে না। সুতরাং সময় থাকতেই সঠিক পদক্ষেপ নেন। জনগণকে শান্তিতে, স্বস্তিতে বসবাস করতে দিন। শুধু মিষ্টি কথায় ভাষণ দিয়ে, দেশ চালানো যাবে না। এসব দিয়ে জনগণের সমস্যার সমাধান হবে না।
বর্তমানে সমাজের কী অবস্থা তা উপদেষ্টাদের জানা উচিত জানিয়ে কর্নেল অলি বলেন, অনেকে অবৈধ টাকার কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছে। বিভিন্ন তদবিরের জন্য সারাদিন সচিবালয়ে সময় কাটাচ্ছে। রাজনীতিকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করেছে। অবৈধভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করছে। নিজেদের জন্য আলিশান অফিস ভাড়া নিচ্ছে। এই অবস্থায় জনগণ চুপ থাকলে দেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
জনগণকে এলডিপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, অনেকে ফেরেশতার মত কথা বলে, শয়তানের মত ধোঁকা দেয়। তাদের কাজ ও কর্মের মধ্যে মিল নাই। একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। জনগণকে ভালো ও মন্দের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হবে। সঠিক দলে যোগদান করতে হবে। সঠিক পার্টি ও ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে। অন্যথায় এই সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলে, জাতির কপালের দুঃখ আছে। এলডিপি হচ্ছে, এই জাতির মুক্তির সনদ, ন্যায় ও সমতা নিশ্চিত করার একটি পার্টি। সঠিক সিদ্ধান্ত নেন, দেশকে রক্ষা করেন। এ ব্যাপারে যুব সমাজকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।
ব্যবসায়ীদের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, সরকারের উচিত দেশপ্রেমিক ও জনবান্ধব ব্যবসায়ীদের সমস্যাগুলো শোনা এবং সমাধান দেওয়া। তাদেরকে বিভিন্নভাবে ন্যায়সঙ্গত সহযোগিতা করা। অহেতুক হয়রানি করা থেকে বিরত থাকতে হবে। স্বৈরাচারী হাসিনা অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে; অনেক নিরপরাধ ব্যবসায়ীকে হয়রানি করেছে। উপদেষ্টাদের উচিত বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একা একা বসে তাদের সমস্যাগুলো শুনে সমাধান দেওয়া। নয়টার মিটিং এগারোটায় করে তাদেরকে হয়রানি করা নয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলড প আওয় ম ল গ ব যবস য় দ র র সমস য র জন য করছ ন এলড প
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত পরিবর্তনের পথ তৈরির আহ্বান এনসিপির
রাষ্ট্র কাঠামো গুণগত পরিবর্তনের পথ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ শনিবার জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এ আহ্বান জানান নবগঠিত দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে যেসব সুপারিশ পাঠানো হয়েছিল তার অধিকাংশের সঙ্গেই এনসিপি একমত বলেও জানান তিনি।
গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা যেন ব্যর্থ না হয় সে আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ৯০–এর গণ-অভ্যুত্থানের কথা বইয়ে পড়েছি, কিন্তু যে আকাঙ্ক্ষায় জনগণের রাস্তায় নেমে আসা সে আকাঙ্ক্ষাগুলো বিভিন্ন সময় আমরা দেখেছি, ব্যর্থ হয়েছে। সেই ব্যর্থতার ফলেই ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদের শাসন ব্যবস্থার প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল। তাই আমরা চাই, এবারের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয়। জনগণের ভেতরে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এটা জাতির প্রতি আমাদের সবারই অঙ্গীকার।
২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থান আজকে বৈঠকে বসার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, যে গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য ১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসককে পলায়ন করতে বাধ্য করেছিল বাংলাদেশের জনগণ। হাজারো মানুষের শাহাদাত বরণ ও আহত হওয়ার বিনিময়েই আজকের এই প্রেক্ষাপট।
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে এনসিপি। যে দলের প্রধান শক্তি ও ভিত্তির জায়গাটা হচ্ছে এই দেশের তরুণেরা। সেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে আমাদের যে বক্তব্য ছিল আমরা ফ্যাসিবাদের বিলোপ ও একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করতে চাই।