কারাবন্দীদের জন্য প্রথমবারের মতো অন্তরঙ্গ সময় (যৌন মিলন) কাটানোর কক্ষ চালু করেছে ইতালি। গতকাল শুক্রবার ইতালির মধ্যবর্তী উমব্রিয়া অঞ্চলের একটি কারাগারে বিশেষভাবে প্রস্তুত কক্ষে এক বন্দীকে তাঁর নারী সঙ্গীর সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে এ প্রকল্প চালু করা হয়েছে।

ইতালির সাংবিধানিক আদালতের একটি আদেশের পর কোনো কোনো বন্দীর জন্য সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে সাক্ষাতের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ওই আদেশে বলা হয়েছে, বন্দীদের কারাগারের বাইরে থেকে আসা সঙ্গীর সঙ্গে ‘অন্তরঙ্গ সাক্ষাতের’ অধিকার রয়েছে।

বন্দীদের অধিকারবিষয়ক উমব্রিয়ার ন্যায়পাল জিউসেপে কাফোরিও সংবাদ সংস্থা এএনএসএকে বলেন, ‘আমরা খুশি, কারণ সবকিছুই শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে যাঁরা সাক্ষাৎ করবেন, তাঁদের গোপনীয়তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’

টের্নি শহরের কারাগারে প্রথম অন্তরঙ্গ সাক্ষাতের ঘটনার পর জিউসেপে কাফোরি বলেন, ‘আমরা বলতে পারি, এটি একধরনের পরীক্ষামূলক উদ্যোগ ছিল। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও কিছু সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হবে।’

২০২৪ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত আদালতের ওই আদেশে বলা হয়, প্রহরীদের নজরদারি ছাড়া বন্দীদের তাঁদের স্বামী-স্ত্রী বা দীর্ঘমেয়াদি সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে দেখা করার অধিকার থাকা উচিত।

আদেশে উল্লেখ করা হয়, ইউরোপের অধিকাংশ দেশেই এ ধরনের দাম্পত্য সাক্ষাৎ অনুমোদিত। এ তালিকায় আছে ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন, নেদারল্যান্ডস ও সুইডেনসহ অন্যান্য দেশ।

গত সপ্তাহে ইতালির বিচার মন্ত্রণালয় একটি নির্দেশনা জারি করে। সেখানে বলা হয়, যেসব বন্দীকে এমন অন্তরঙ্গ সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হবে, তাদের একটি বিছানা ও টয়লেটসহ কক্ষে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত সময় কাটানোর সুযোগ থাকতে হবে।

তবে নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সেই কক্ষের দরজা বন্ধ করা যাবে না, যাতে প্রয়োজনে কারারক্ষীরা হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

ইউরোপের যেসব দেশের কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে বন্দীর সংখ্যা অনেক বেশি, সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম ইতালি। দেশটির কারাগারে সম্প্রতি আত্মহত্যার হারও বেড়েছে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইতালির কারাগারগুলোতে বর্তমানে ৬২ হাজারের বেশি বন্দী রয়েছে, যা সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার চেয়ে ২১ শতাংশ বেশি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন দ দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ