ভিন্নমতের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে, এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে আলী রীয়াজ
Published: 19th, April 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন আমাদের কাজ সবাই মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ফেরত না আসে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রায়ীজ আরও বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর পক্ষ থেকে যে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আপনাদের কিছু একমত, কিছু ভিন্নমত আছে। আমরা একমতের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি, সেগুলো নিয়ে অগ্রসর হব। যেসব জায়গায় আংশিকভাবে একমত বা ভিন্নমত সেগুলো নিয়ে আজ আলোচনা করব এবং প্রয়োজনে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কেননা আমরা চাই, জাতির আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে।
বৈঠকে এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা প্রাণবাজি রেখে লড়াই করে ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়ন করতে বাধ্য করেছেন। সেই বিজয়ের পাশাপাশি আপনারা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চান এবং আপনাদের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা উন্মত্ত হয়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, এ দেশের ইতিহাসে আমরা বারবার দেখেছি, গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে কীভাবে পর্যুদস্ত করা হয়, কী করে গণতন্ত্রের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়, সে বিজয়কে বিভিন্নভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। রাষ্ট্রকে কীভাবে এক ব্যক্তির করতলগত করে একটি শাসনব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন‘মৌলিক সংস্কার’ বলতে কী বোঝাতে চাইছে জাতীয় নাগরিক পার্টি৩ ঘণ্টা আগেএখন এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ সবাই মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ফেরত না আসে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী রূপ নেয় এবং যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সমস্ত নিপীড়ন মোকাবিলা করতে পারি। সেই ব্যবস্থাগুলোকে অপসারণ করতে পারি।’
সভায় কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এনসিপির ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন,
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রের মূলনীতি পরিবর্তনে জোর আপত্তি বিএনপির
সংবিধান সংস্কারে বিএনপি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে লিখিতভাবে যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছিল, গতকাল কমিশনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় নানা যুক্তি-ব্যাখ্যায় দলটি সে অবস্থানই প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি পরিবর্তনে কমিশনের করা সুপারিশগুলোতে বিএনপির জোরালো আপত্তি রয়েছে।
তবে দলটির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, কিছু কিছু বিষয়ে কমিশনের যুক্তিসংগত সুপারিশ গ্রহণের জন্য বিবেচনা করছে বিএনপি। সে বিষয়গুলো দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বৈঠকে জানানো হয়েছে।
সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে পাঁচটি কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার দিনভর দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হয়। তবে আলোচনা শেষ হয়নি। আগামী রোববার আবারও আলোচনা হবে বলে ঐকমত্য কমিশন ও বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গতকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাব (প্রজাতন্ত্র, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি, মৌলিক অধিকার, আইন বিভাগ) নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে