রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি ও তাঁর আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গতকাল শুক্রবার নওগাঁ সদর থানার রামরায়পুর এলাকার আড়ারাপাড়া গ্রাম থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মামলার প্রধান আসামি রাজশাহী নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার বাসিন্দা মো.

নান্টু (২৮) এবং তাঁর সহযোগী একই এলাকার বাসিন্দা খোকন মিয়া।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুনের মামলায় প্রধান আসামির সহযোগী গ্রেপ্তার১৩ ঘণ্টা আগে

এর আগে গতকাল বিকেলে রুমেল (২৫) নামে নান্টুর আরেক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়াল তিনে।

নান্টু ও খোকনকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আজ শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহী র‍্যাবের সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করেন র‍্যাব-৫–এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, ঘটনার পরই নান্টু ও খোকন একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেখান থেকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের বোয়ালিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

আরও পড়ুনরাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করা বাবা খুন, বিচার চেয়ে লাশ নিয়ে মানববন্ধন১৭ এপ্রিল ২০২৫

এর আগে বুধবার রাতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা আকরাম আলীকে (৪৫) মারধর করা হয়। এ সময় মারধরের শিকার হন মেয়েটির ভাই মো. ইমাম হাসান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর আকরাম মারা যান। বাসচালক আকরাম রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। তাঁর মেয়ে রাফিয়া আলফি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বাবার লাশ রেখে গত বৃহস্পতিবার সে পরীক্ষায় বসে।

আরও পড়ুনউত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে মেয়ে১৭ এপ্রিল ২০২৫

এ ঘটনায় আকরামের ছেলে হাসান ইমাম বৃহস্পতিবার নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার মো. নান্টু (২৮), মো. বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২০), মো. নাহিদ (২৫) ও মো. শিশির (২০)।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এল ক র সহয গ আকর ম

এছাড়াও পড়ুন:

হামাগুড়ি দিয়ে কেন্দ্রে এসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে ইউনুস

এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে পরীক্ষার্থীদের ভিড়। ইউনিফর্ম পরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আলাদাভাবে চোখে পড়ছিল শারীরিক প্রতিবন্ধী এক কিশোরকে। একটি ইজিবাইক থেকে নামার পর কিশোরটি হামাগুড়ি দিয়ে প্রবেশ করে কেন্দ্রে। গায়ের ইউনিফর্ম দেখে বোঝা যায় সেও পরীক্ষার্থীদের একজন।

গত বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের টেকনাফ এজাহার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এসএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা মেলে মো. ইউনুস নামের এই কিশোরের। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে ইউনুস। কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা আবদুস শুক্কুর ও নুরুজ্জামান দম্পতির সন্তান সে। চার ভাই, দুই বোনের মধ্যে সে পঞ্চম।

পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থী মো. ইউনুসের সঙ্গে কথা হয়। সে বলে, ‘আল্লাহ আমাকে যেভাবে দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন, তাতে আমি সন্তুষ্ট। বর্ষাকালে স্কুলে যাওয়া-আসা করতে খুবই কষ্ট হতো। সহপাঠী বন্ধুরা সাহায্য করত নানা সময়। ক্লাসে গিয়ে বসার সময়ও বন্ধুরা আমাকে পছন্দমতো জায়গায় বসতে দিত। আমি লেখাপড়া করে ভালো একজন ব্যবসায়ী হতে চাই।’ সে আরও বলে, ‘আমার বাবা নৈশপ্রহরীর চাকরি করেন। আটজনের সংসার বাবার একার রোজগারে চলে। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা এগিয়ে আসলে অবশ্যই আমার শিক্ষার এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’

ইউনুসের মা নুরুজ্জামান বলেন, জন্মগতভাবে ইউনুস প্রতিবন্ধী। দুই হাঁটুর পাশাপাশি দুই হাতের ওপর ভর করে সে চলাফেরা করে। জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে টেকনাফ মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। লেখাপড়ার প্রতি তার আগ্রহ থাকায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ দিয়েছে। সে প্রতিনিয়ত লেখাপড়া করে যাচ্ছে।

শুধু ইউনুস নয়, আবদুল হামিদ নামের আরও এক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে এজাহার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে। বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ওই পরীক্ষার্থী ইউনুসের খালাতো ভাই। কেন্দ্রের সচিব ও এজাহার সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাব্বির আহমদ বলেন, দুই প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীই দুটি কক্ষে অন্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে পরীক্ষা দিচ্ছে। কেন্দ্রের পরিদর্শকসহ সবাই তাদের প্রতি খেয়াল রাখছেন।

কেন্দ্রের পরিদর্শক সৈয়দা তাহমিনা খানম বলেন, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। তারা ভালোভাবেই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। খাতা জমা দেওয়ার সময় রোল নম্বর ঠিকমতো লিখেছে কি না, যাচাই-বাছাই করা হয়।

মো. ইউনুস ও আবদুল হামিদের বিষয়ে টেকনাফ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ইউনুস ও হামিদ পরস্পর খালাতো ভাই। দুজন শিক্ষার্থী খুবই ভদ্র। তাদের পড়াশোনা দেখে অন্যরা অনুপ্রাণিত হবে, এমনটা আশা করি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি প্রতিষ্ঠানে ৬৪ পদে নিয়োগ, বেতনের সঙ্গে নানা সুবিধা
  • শরীয়তপুরে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত, ২ যুবককে কারাদণ্ড
  • হামাগুড়ি দিয়ে কেন্দ্রে এসে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে ইউনুস
  • বিভিন্ন স্থানে কারিগরি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ চলছে
  • এসএসসি পরীক্ষা খারাপ হওয়ায়..
  • ফেনীতে কালবৈশাখীতে লন্ডভন্ড লোকজ মেলার মাঠ
  • দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে দৃষ্টিহীন মহির
  • উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে মেয়ে
  • এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পরীক্ষার্থী কম, অনুপস্থিতিও বেশি, কারণ কী