রাজশাহীতে ড্রেনে বড়শি ফেলে পাওয়া গেল ১০ কেজির মাগুর
Published: 19th, April 2025 GMT
রাজশাহীর সাগরপাড়া কাঁচাবাজারের ড্রেনে বড়শি ফেলে ১০ কেজি ওজনের একটি মাগুর মাছ ধরেছেন স্বাধীন (২২) নামের এক যুবক। তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধু শাকিব পেয়েছেন আরও একটি মাগুর মাছ, যার ওজন সাড়ে সাত কেজি। গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মাত্র আধা ঘণ্টার ব্যবধানে তাঁরা মাছ দুটি ধরেন।
স্বাধীন পেশায় একটি মোটরগাড়ির গ্যারেজের কর্মচারী। তিনি থাকেন নগরের সাগরপাড়া মাছুয়া এলাকায়। তাঁর বন্ধু শাকিব (২১) একটি মুরগির দোকানে কাজ করেন। ড্রেন থেকে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার সময় তাঁদের সঙ্গে আরও ১০-১২ জন তরুণ ছিলেন।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, কয়েক বছর আগে মাছের পোনাভর্তি একটি ভ্যান উল্টে যায়। পোনাগুলোর একাংশ পড়ে যায় কাছাকাছি ড্রেনের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে মুরগি ও মাছের দোকানগুলোর ড্রেনে ফেলা বর্জ্য খেয়ে এসব মাছ বড় হয়েছে বলে তাঁদের ধারণা।
সাগরপাড়া কাঁচাবাজার এলাকায় প্রতিদিন সকালে ড্রেনের ওপর বসে বাজার। এসব ড্রেন স্থায়ীভাবে নির্মিত এবং মাঝে মাঝে স্ল্যাব উঠিয়ে পরিষ্কারের ব্যবস্থা আছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দেখা যায়, বেশ কয়েকজন যুবক স্ল্যাব সরিয়ে উপুড় হয়ে বড়শি ফেলে মাছ ধরছেন।
স্বাধীন বলেন, মাছ ধরার সময় বড়শি টেনে তুলতে না পেরে একপর্যায়ে ড্রেনে নেমে পড়েন তিনি। এ সময় তাঁর হাত-পা ছিলে যায়। পরে মাছটি বাসায় নিয়ে রাখেন। তাঁর মাছুয়াপাড়ার বাড়িতে গিয়ে বড় পাতিলে রেখে দেওয়া মাছ দুটি দেখা যায়।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন শাকিবের মা সাইদা জিয়াসমিন সাগরী। ছেলের ধরা মাছ দেখে তিনি বলেন, ‘কী বুলবো, খুবই আনন্দ হইছে। এত আনন্দ হইতেছে যে বুইলতে পারতেছি না।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ড্রেনের পানির স্তর কমে যাওয়ায় কয়েক দিন ধরে ড্রেনের ভেতর নড়াচড়ার শব্দ শোনা যাচ্ছিল। গত বুধবার প্রথমবার স্ল্যাব সরিয়ে কয়েকটি বড় মাগুর মাছ দেখা যায় এবং বড়শি ফেলে চারটি মাছ ধরা পড়ে। এরপর বৃহস্পতিবার আরও তিনটি মাছ ধরা হয়। শুক্রবার রাতে বড় মাছ পাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে আরও অনেকেই ড্রেনে বড়শি ফেলে মাছ ধরতে ভিড় করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।
২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস