গাজীপুরে শ্রমিকের আত্মহত্যা: দুই কর্মকর্তাকে অব্যাহতি, কারখানা কর্তৃপক্ষের শোক
Published: 19th, April 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় মনট্রিমস্ কারখানায় শ্রমিকের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার সকালে কারখানার সামনে অব্যাহতির নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কারখানা যথারীতি চালু হয়েছে। শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় শোক জানিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে কারখানাতেই মো.
মারা যাওয়া মো. ইদ্রিস আলী উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় সপরিবার ভাড়া বাসায় থেকে মনট্রিমস্ লিমিটেড কারখানার কার্টন সেকশনে কাজ করতেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকেরা বলেন, ইদ্রিস আলী বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ফেসবুক আইডিতে কারখানায় অনিয়মের অভিযোগ ও সহকারী ব্যবস্থাপক (প্ল্যানিং) কামরুল ইসলাম ও উপব্যবস্থাপক (কার্টন সেকশন) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তিনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর রাসায়নিক দ্রব্যজাতীয় কিছু পান করে আত্মহত্যা করেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে আসার পর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ ওই দুই কর্মকর্তাকে গতকাল রাতেই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়। এ ছাড়া সকালে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে একটি নোটিশ সাঁটিয়ে দেওয়া হয় যাতে লেখা আছে, ‘আমাদের সহকর্মী মো. ইদ্রিস আলীর অকাল মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত।’
শোক প্রকাশ করে ও দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে মনট্রিমস্ কারখানা কর্তৃপক্ষের নোটিশ। আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকায় কারখানার সামনেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।
২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।
মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস