সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মাদক কারবারিদের হাতে মারধরের শিকার হয়ে বিপুল সরকার (৩৫) নামে এক যুবদলকর্মী নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।  শাহজাদপুর পৌর সদরের রামবাড়ি এলাকার মৃত মাজেদ সরকারের ছেলে বিপুল সরকার। তার দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ তিন সন্তান রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে আহত অবস্থায় বিপুলকে প্রথমে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির করলে সেখানে অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে দ্রুত জেলার পার্শ্ববর্তী এনায়েতপুরের বেসরকারি খাজা ইউনুস আলী হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১১টার পর তার মৃত্যু হয়।

খবর পেয়ে রাতেই শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী সঙ্গীয় ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রাথমিক তদন্ত করেন। তিনি জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বর্তমানে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর এলাকায় পুলিশ গেলে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী-সেবনকারীরা পালিয়ে যায়।

বিপুলের বড় ভাই নুরুজ্জামানের অভিযোগ, এলাকায় মোকছেদ আলী বগা মেম্বারের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও তার সহযোগী সাদ্দাম হোসেন, রুবেল, কাউসার তরিকুল ও মফিজসহ এলাকার ২৫-৩০ জন মাদক কারবারি ও ইয়াবা সেবনের সঙ্গে জড়িত। বিপুল এলাকায় একজন প্রতিবাদী যুবক। সে বিএনপি-যুবদল নেতাকর্মীদের নিয়ে পাহারা দেওয়ার জন্য এলাকায় বাঁশের মাচাল তৈরির চেষ্টা করে। এতে বাঁধা দেয় কথিত ওই মাদক কারবারিরা। শুক্রবার রাতে ওই মাদক ব্যবসায়ীরা বিপুলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

সাবেক কাউন্সিলর আল মাহমুদ বলেন, এলাকায় কথিত সন্ত্রাসী ও উশৃঙ্খল কতিপয় যুবক আছে, যারা প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা ও সেবন করে। তারা একটি তাজা প্রাণকে পিটিয়ে এভাবে হত্যা করে। একজন নিরীহ মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হবে। এটি কি মগের মুল্লুক। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের উপযুক্ত বিচার চাই।

শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম আলী বলেন, খবর পেয়ে আমি নিজেই রাতে ঘটনাস্থলে যাই। আপাতত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুয়েকজনকে থানায় আনা হয়েছে। বিপুলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। এখনো এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। ভিকটিমের পরিবার থেকে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলেও জানা গেছে। রাতে ঘটনাস্থলে গেলে বিপুলের স্বজনরা ও স্থানীয়রা পুলিশকে জানান, এলাকায় একটি বাঁশের মাচাল তৈরি নিয়ে দ্বন্দ্বে কতিপয় চিহ্নিত মাদক কারবারি ও সেবনকারীরা বিপুলকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। হাসপাতালের নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

শাহজাদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফকে মুঠোফোনে ও হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করে শনিবার সকালে পাওয়া যায়নি। সংগঠনটির সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আলামিন হোসেন বলেন, নিহত বিপুল ও তার পরিবার বিএনপির সমর্থক বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি।

এদিকে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী ও সংঘর্ষকারীরা এলাকায় না থাকায় তাদের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন হত য বদল ন ত স র জগঞ জ উল ল প ড় এল ক য় র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের বন্ধুতালিকা ‘রিসেট’ করার ভাবনা ছিল জাকারবার্গের

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিযোগিতা নস্যাৎ করে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে মেটার বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত মামলার বিচার। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ সোমবার এই মামলায় সাক্ষ্য দেন। শুনানিতে আদালতে উপস্থাপন করা হয় মেটার অভ্যন্তরীণ কিছু ই–মেইল, যেখানে উঠে আসে এক সময় সবাইকে ফেসবুকে বন্ধু তালিকা ‘শূন্য’ থেকে শুরু করতে বাধ্য করার এক অভিনব প্রস্তাব।

২০২২ সালে পাঠানো একটি ই–মেইলে জাকারবার্গ লেখেন, বন্ধু তৈরিতে দ্বিগুণ জোর। সবাইকে তাঁদের বন্ধুতালিকা (গ্রাফ) মুছে দিয়ে নতুন করে শুরু করতে দেওয়ার কথা ভাবা যেতে পারে। বিশ্লেষকেরা বলছেন, কিশোর-তরুণ ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইনস্টাগ্রামের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ায় ফেসবুকের ব্যবহার কমছিল। এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকে ব্যবহারকারীদের সক্রিয়তা বাড়াতে নতুন কিছু ভাবনার অংশ হিসেবেই জাকারবার্গ ওই প্রস্তাব দেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তবে মেটার অভ্যন্তরেই প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি ওঠে। ফেসবুক বিভাগের প্রধান টম অ্যালিসন ই–মেইলের জবাবে লেখেন, আপনার প্রস্তাবিত প্রথম বিকল্পটি (বন্ধু সংযোগে জোর) আমার কাছে বাস্তবসম্মত বলে মনে হচ্ছে না। ইনস্টাগ্রামে বন্ধু সুবিধাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেটি অকার্যকর হলে ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

জাকারবার্গ আরও একটি বিকল্প প্রস্তাব করেছিলেন। ফেসবুককে বন্ধুভিত্তিক মাধ্যমের বদলে অনুসরণভিত্তিক (ফলোয়ার) মাধ্যমে রূপান্তর করার চিন্তা ছিল তাঁর। যদিও এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হয়নি, তবে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে উঠে আসা এসব ভাবনা থেকে প্রযুক্তি মাধ্যমটি ভবিষ্যতে কোন পথে হাঁটতে চায়, তার একটা ইঙ্গিত স্পষ্ট হয়।

মার্কিন ফেডারেল ট্রেড কমিশন (এফটিসি) ২০২০ সালে মেটার বিরুদ্ধে এই প্রতিযোগিতা-বিরোধী মামলা করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাজারে একচেটিয়া আধিপত্য বজায় রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে প্রতিযোগীদের ঠেকিয়ে দিয়েছে। এফটিসির ভাষ্য, সম্ভাবনাময় প্রতিযোগীরা যখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল, তখন মেটা তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতার বদলে কিনে নিয়ে সেই ‘হুমকি’ দূর করেছে। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি উদ্ভাবনশীল মাধ্যমগুলোকে হুমকিস্বরূপ মনে করে অধিগ্রহণের মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিরোধী একক আধিপত্য গড়ে তুলেছে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ