মালিহা আক্তার (৬) ও আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (৩) ভাইবোন। গতকাল শুক্রবার দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মেঝেতে দু’জনের রক্তাক্ত লাশ পাওয়া যায়। এ সময় পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তাদের মা। গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুরের রূপবানের টেক এলাকার ঘটনা এটি।

গতকাল শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে দু’জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তাতুয়াকান্দি গ্রামের আব্দুল বাতেনের সন্তান।
পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানান, দীর্ঘ প্রবাসজীবন শেষে বছরখানেক আগে দেশে ফেরেন বাতেন। পিকআপের ব্যবসা করেন। পরিবার নিয়ে রূপবানের টেক এলাকার একটি আটতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ভাড়া থাকেন।

আব্দুল বাতেন জানান, প্রায় ১৭ বছর মালয়েশিয়ায় ছিলেন। সেখানে ব্যবসা করতেন। দেশে ফিরে পিকআপ ব্যবসা করছেন। বেলা ২টা ৪০ মিনিটে বাসা থেকে পিকআপ স্ট্যান্ডে যান। স্ত্রী ও তিন সন্তানকে বাসায় রেখে যান। যাওয়ার সময় দেখেন, মালিহা ও আব্দুল্লাহ ঘুমাচ্ছে। বড় মেয়েটা সজাগ। সে পাশে চাচার বাসায় চলে যায়। ৪টা ৩৫ মিনিটে বাসা থেকে বাতেনকে কল করে খবর জানানো হয়। দৌড়ে এসে দেখেন বাসাভর্তি মানুষ। এর বাইরে আর কিছু বলতে পারেন না। কে বা কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মনে করছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ ভালো জানেন। তবে কেউ না কেউ তো আমার অবুঝ সন্তান দুটিকে হত্যা করেছে। আমি তাদের বিচার চাই।’

প্রতিবেশীরা জানান, শুক্রবার দুপুরে মা সালেহা বেগম মাথাব্যথার ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখতে পান, ঘরের মঝেতে পড়ে আছে দুই শিশুর রক্তাক্ত লাশ।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের টঙ্গী অঞ্চলের উপকমিশনার এন এম নাসির উদ্দির জানান, দুপুরে খেয়ে শিশু দুটি ঘুমিয়ে পড়ে। পাশের ঘরে তাদের মা ঘুমিয়ে ছিল। এ সময় দরজা খোলা ছিল। তিনি বলেন, ‘মায়ের মানসিক বা নিউরো সমস্যা ছিল, ওষুধও খায়। কিন্তু দুই সন্তানকে হত্যা করেছেন–এমনটা আমরা মনে করছি না।’
এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শিশুর মা ও বাবাকে আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে বলে জানান টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদুল ইসলাম। ওসি বলেন, শিশু দুটির মাথা, বুক ও মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো.

জাহিদুল হাসান সমকালকে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর কলহে দুটি শিশু হত্যার শিকার হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি। ঘটনাটি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য

এছাড়াও পড়ুন:

গুলশানে ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে সমাবেশ

রাজধানীর গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে মিছিল–সমাবেশ করেছেন রিকশাচালকেরা। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুলশানের কালাচাঁদপুর ও বনানী ১১ নম্বর সড়কে সমাবেশ করেন তাঁরা।

সমাবেশে অংশ নেওয়া রিকশাচালকেরা অভিযোগ করেন, গুলশান সোসাইটির নিবন্ধিত রিকশা ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা গুলশান এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। এতে তাঁরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। রিকশাচালক কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, গুলশান সোসাইটির নিবন্ধন নেই, এমন অটোরিকশা গুলশান এলাকায় গেলে রিকশার ক্ষতি করা হচ্ছে। গুলশান এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, কালাচাঁদপুরে সমাবেশের সময় রিকশাচালকদের কেউ কেউ সড়কে শুয়ে পড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সড়কে যান চলাচল বন্ধ না করতে তাঁদের অনুরোধ করে। তবে পুলিশের অনুরোধে সাড়া না দিয়ে বেশ কয়েকজন রিকশাচালক সড়কে শুয়েই থাকেন। পরে পুলিশ সদস্যরা তাঁদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানোর দাবিতে গুলশান এলাকার সড়কে শুয়ে পড়েন রিকশাচালকেরা। পরে পুলিশ তাঁদের সেখান থেকে উঠিয়ে দেয়। ঢাকা, ১৯ এপ্রিল

সম্পর্কিত নিবন্ধ