Samakal:
2025-04-19@11:09:57 GMT

বিশ্ববাণিজ্যে এগিয়ে কারা

Published: 18th, April 2025 GMT

বিশ্ববাণিজ্যে এগিয়ে কারা

বিশ্বের এক নম্বর রপ্তানিকারক দেশ চীন গত বছর ৩ হাজার ৫৭৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের পণ্য রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের এক বছরের রপ্তানি আয়ের তুলনায় যা প্রায় ৮০ গুণ। বাংলাদেশ গত অর্থবছরে মাত্র ৪৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। চীনের রপ্তানি আয় বিশ্বের মোট রপ্তানি আয়ের ১৪ দশমিক ৬ শতাংশ। বাংলাদেশের অংশ মাত্র শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ। 
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সম্প্রতি বিশ্ববাণিজ্যের হালনাগাদ পরিসংখ্যান এবং ভবিষ্যতের গতিপথ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান রয়েছে। ডব্লিউটিও মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রভাবে বিশ্ববাণিজ্যের আকার গত বছরের চেয়ে ২০২৫ সালে কমে যাবে। এর ফলে রপ্তানিমুখী স্বল্পোন্নত দেশগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। 
ডব্লিউটিওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের। তারা রপ্তানি করেছে ২ হাজার ৬৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এত রপ্তানির পর যুক্তরাষ্ট্র বিশেষত ডোলাল্ড ট্রাম্প নাখোশ কেন? এ কারণে যে, তারা রপ্তানি যা করে, তার চেয়ে অনেক বেশি আমদানি করে। ২০২৪ সালে বিশ্বের শীর্ষ আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্র। আমদানিতে দ্বিতীয় চীন। 
চীনের সুবিধা হলো, তারা আমদানির চেয়ে রপ্তানি বেশি করে। চীন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আমদানিকারক দেশ। তারা গত বছর আমদানি যা করেছে, তার চেয়ে রপ্তানি বেশি করেছে ৯৯০ বিলিয়ন ডলার। চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির দ্বিগুণেরও বেশি। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপির আকার ছিল ৪৫০ বিলিয়ন ডলার। 
চীন বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র রয়েছে ঘাটতিতে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষেপে গিয়ে চীনসহ সব বাণিজ্য অংশীদারের ওপর বাড়তি যে শুল্ক আরোপ করেছেন, তার পেছনে এই বাণিজ্য ঘাটতি। যুক্তরাষ্ট্র গত বছর আমদানি করেছে ৩ হাজার ৩৫৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। তাদের ঘাটতি ১ হাজার ২৯৪ বিলিয়ন ডলার। এই ঘাটতি কমাতেই যুক্তরাষ্ট্র চায় রপ্তানি বাড়াতে এবং আমদানি কমাতে। 
আমদানি কমানোর কৌশল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক ধার্য করেছে। সবার ওপর বাড়তি ১০ শতাংশ ইতোমধ্যে কার্যকর হয়েছে। চীন বাদে বাকিদের ওপর দেশভিত্তিক বিভিন্ন হারে বর্ধিত শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত রেখেছে। তবে চীনের ওপর বাড়াতে বাড়াতে সর্বশেষ ২৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যদিকে চীন যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ ধার্য করেছে। 
বাণিজ্যে আরও যারা এগিয়ে 
ডব্লিউটিওর পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৪ সালে রপ্তানিতে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে জার্মানি, যার পরিমাণ ১ হাজার ৬৮৩ কোটি ডলার। রপ্তানির পরিমাণ অনুযায়ী শীর্ষ দশে আরও রয়েছে–নেদারল্যান্ডস, জাপান, কোরিয়া, ইতালি, হংকং, ফ্রান্স এবং মেক্সিকো। রপ্তানির মতো আমদানিতে তৃতীয় অবস্থানে জার্মানি। দেশটি গত 
বছর আমদানি করেছে ১ হাজার ৪২৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এর পরে আমদানিতে শীর্ষ দশে রয়েছে যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, জাপান, হংকং, ভারত ও মেক্সিকো। দেখা যাচ্ছে, আমদানি এবং রপ্তানিতে শীর্ষ দশে থাকা দেশগুলো দু-একটি ব্যতিক্রম বাদে একই। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স খ য ন ২০২৪ স ল আমদ ন ত গত বছর অবস থ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

বাজেট ২০২৫-২৬: বেশি জোর থাকবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে ১ নম্বর অগ্রাধিকারে রেখে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট সাজাচ্ছে সরকার। বাজেটে সুযোগ তৈরি করা হবে গ্রামীণ পর্যায়ে কর্মসংস্থানের। এ জন্য উজ্জীবিত করা হবে রাস্তাঘাট নির্মাণ, সংস্কারসহ গ্রামীণ অবকাঠামো খাতের কর্মযজ্ঞকে। তবে বড় তেমন কোনো প্রকল্প নেওয়া হবে না। করা হবে না ঢাউস আকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিও (এডিপি)।

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতায় ভাতা কিছুটা বাড়ানো হবে। এমনকি বাড়ানো হবে ভাতাভোগীর সংখ্যা। সবই করা হবে সীমিত সাধ্যের মধ্যে থেকেও।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট তৈরির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ ধারণা পাওয়া গেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের এটি হবে প্রথম বাজেট।

আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। টেলিভিশনের পর্দায় অর্থ উপদেষ্টা বাজেট ঘোষণা করবেন ২ জুন।

বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজস্ব সংগ্রহের বড় কোনো উৎসের সন্ধান না পাওয়ায় আগামী বাজেট তেমন বড় করা হচ্ছে না। এ কারণেই চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় আগামী অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার কমানো হচ্ছে অন্তত সাত হাজার কোটি টাকা। অহেতুক উচ্চাভিলাষী নয়; বরং একটি বাস্তবভিত্তিক বাজেটের দিকেই এগোচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার।

দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে, যা ৯–১০ শতাংশের ঘরে থাকছে। সূত্রগুলো জানায়, নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা থাকবে। সরকার প্রথমে আগামী অর্থবছর শেষে এ হার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনবে বলে ঠিক করেছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়ায় এ হার আরও কমবে বলে সরকার আত্মবিশ্বাসী।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ২ জুন সোমবার। প্রতি অর্থবছরে জুন মাসের কোনো বৃহস্পতিবারকে বাজেট ঘোষণার জন্য বেছে নেওয়া হয়। এবারই তার ব্যতিক্রম হচ্ছে। তবে বাজেট ঘোষণার পরদিন রেওয়াজ অনুযায়ী অন্য উপদেষ্টাদের সঙ্গে নিয়ে বাজেট-উত্তর সংবাদ সম্মেলন ঠিকই করবেন অর্থ উপদেষ্টা।

বাজেট মোটামুটি চূড়ান্ত করার জন্য সচিবালয়ে গত মঙ্গলবার অনলাইনে আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিল ও সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট দেওয়া হতে পারে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

রাজনৈতিক সরকারের অর্থমন্ত্রীরা বাজেট উপস্থাপন করে থাকেন জাতীয় সংসদে। সংসদ না থাকায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট উপস্থাপন করবেন টেলিভিশনের পর্দায়। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে এ বাজেট ঘোষণা করা হবে। সর্বশেষ ২০০৭-০৮ সালে টেলিভিশনে ভাষণের মাধ্যমে দুটি বাজেট ঘোষণা করেছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম।

অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি (নিয়ন্ত্রণকে) প্রথম অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট করতে যাচ্ছি। এ ছাড়া নজর থাকবে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জ্বালানি সাশ্রয় ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দক্ষতা উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে বাজেটে। চাইব মানুষের জীবনযাত্রা যেন সহজ হয়।’

এত কিছু কীভাবে করবেন, রাজস্ব তো বেশি পাওয়ার সম্ভাবনা কম—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আগামী অর্থবছরে রাজস্ব বাড়বে। তবে মানুষের ওপর অহেতুক করের বোঝা বাড়াব না।’

সূত্রগুলো জানায়, চলতি অর্থবছরের মতো আগামী অর্থবছরেও বাজেট–ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে রাখা হবে। আগামী অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হারের লক্ষ্য ধরা হচ্ছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কিছুটা কমিয়ে ইতিমধ্যে ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বলছে, চলতি অর্থবছরের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশের নিচে থাকবে।

জানা গেছে, এডিপিতে বরাদ্দ রাখা হবে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার মতো। বরাদ্দের দিক থেকে আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা এবং শ্বেতপত্র কমিটি ও টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনের সুপারিশের প্রতিফলন থাকবে বাজেটে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) আগামী অর্থবছরে ৫ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হতে পারে, যা চলতি বাজেটে ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। এরই মধ্যে চলতি অর্থবছরের লক্ষ্য কমিয়ে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব আদায় হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার ৮১৭ টাকা, কিন্তু আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব–ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ ২১ শতাংশ।

বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রাজস্ব আয় চার লাখ কোটি টাকা করতেই ঘাম ছুটে যায়। সে বিবেচনায় আগামী বাজেটও উচ্চাভিলাষী হবে। এতে ঘাটতি বড় হবে। এটা কোনোভাবেই ছোট বাজেট হবে না, মূল্যস্ফীতি কমার বাজেটও হবে না, এমনকি বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ভালো হওয়ার বাজেটও হবে না। তিনি বলেন, সাত হাজার কোটি টাকা কমানোর কথা বলা মানে হচ্ছে, কল্পনার সঙ্গে কল্পনার তুলনা করা। অনেকটা এ রকম—আগের সরকার চাঁদে যাওয়ার কথা বলেছিল, এখন বলা হবে মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার কথা।

উল্লেখ্য, আগের সরকার যে বাজেট ঘোষণা করত, তার অনেকটাই অবাস্তবায়িত থাকত। বর্তমান সরকার সেই ঘোষিত বাজেটের চেয়ে মোট ব্যয় সাত হাজার কোটি টাকা কমানোর কথা বলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছোট বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে গতি কম
  • সমঝোতায় বাধা যেখানে
  • এপারের সিমেন্টে নজর আরাকান আর্মির
  • জুলাই-মার্চ মেয়াদে তৈরি পোশাক রপ্তানি ১০.৮৪% বেড়েছে
  • এডিপির ব্যয় আগের চেয়ে ২৫ হাজার কোটি টাকা কম
  • চলতি অর্থবছরের জুলাই–মার্চে পাঁচ বছরের সর্বনিম্ন এডিপি বাস্তবায়ন
  • বাজেট ২০২৫-২৬: বেশি জোর থাকবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে
  • বন্দর থেকে ১০০ কোটি টাকা গৃহকর পেল চসিক
  • নতুন বাজেট ঘোষণা হতে পারে ২ জুন, ছোট হচ্ছে আকার