Samakal:
2025-04-19@11:08:07 GMT

ছড়া কবিতা

Published: 18th, April 2025 GMT

ছড়া কবিতা

ফা রু ক  ন ও য়া জ 
বৃথাই খুঁজে ফেরা

চাঁদের বাটি উথলে পড়া আলোয় আমি 
জোছনারাতের চাঁদদিঘিটা খুঁজি
বুঝি আমি, ভালো করেই বুঝি
সেই দিঘিটা পাবো না আর যতোই খুঁজি তারে 
আলোর দিঘি হারিয়ে গেছে কালের অন্ধকারে।

জলথইথই ঢেউয়ের দোলা ছোট্টো নদী 
সাঁঝ-অবধি মন নাচাতো আমার
পাড়ের ওপর শস্যঝাড়া খামার
খামারঘেঁষা মৈঠালি পথ খুঁজে বেড়াই আমি
বৃথাই খোঁজা; খোঁজার নেশা মিছে এ পাগলামি! 

ক্যাঁচক্যাঁচানো গরুর গাড়ি মাটির পথে 
হাটের দিনে কড়কড়ানো দুপুর
মাঝ-আকাশে সূর্য তখন উপুড় 
পথের পাশে বটের ঝুড়ি দুলদুলুনি খেলা 
হারানো সেই গাঁয়ের ছবি খুঁজতে ফুরোয় বেলা।

হাঁটতে হাঁটতে থমকে যাওয়া দখিনবনের
ঘুঘুর ঘু-ঘু মনউচাটন ডাকে 
পরান কেমন উদাস হয়ে থাকে
হন্যে হয়ে সেই উদাসী দিনকে খুঁজি শুধু
বৃথাই খোঁজা; নিরাশ হয়ে মনটা করে ধু-ধু!   

 

অ ঞ্জ ন  মে হে দী  
বাবার ছবি

আকাশ পানে তাকিয়ে থাকি দূরের ছায়াপথে
দু’হাত তুলে ডাকি যখন বাবা তোমার নামে
দিদুন বলে বাবা নাকি দূরের কোনো তারা
সত্যি কি তাই? চিঠি পাঠাই জানতে সবুজ খামে! 

জোনাক জ্বলা রাতের বেলা যখন গোটা পাড়া- 
ঘুমিয়ে থাকে চুপটি করে পুতুল মণির মত
মায়ের চোখে সাগর-নদী-ঝর্ণা জলের ধারা
জায়নামাজের উদার জমিন ভিজছে অবিরত।

ছোট্টবেলায় হোঁচট খেলে কিংবা জ্বরের ঘোরে
যখন আমি ঘুমের দেশে ভীষণ কেঁপে উঠি
সেই দিনরাত মায়ের মতো আমার কপাল ভূমি
স্নেহমাখা তোমার আঙুল করতো লুটোপুটি!

তোমার কাছে প্রথম শিখি বর্ণমালা পড়া
চাঁদের দেশে চাঁদের বুড়ির গল্পটা ফিসফিস  
তোমার নামে রাত পোহালে আবার রূপোর ভোরে
সজনে ডালে দোয়েল পাখি আজও বাজায় শিস।

কোন দুয়ারে তোমায় ডাকি, কোন পথে যে খুঁজি?
বাবা ছাড়া বিশ্বভূবন সত্যি লাগে ফাঁকা
রইলো পড়ে তোমার সকল চশমা হাতের ঘড়ি
বুকের ভাঁজে সোনা রঙে তোমার ছবি আঁকা।

 

আ খ তা রু ল  ই স লা ম  
বিশাল আকাশ

আমাদের আছে বিশাল আকাশ আকাশের বুকে তারা 
তারারা আমার খুব প্রিয় তাই, হই আমি দিশেহারা।
আকাশের গায়ে নীলের চাদরে মেঘদের ছবি আঁকা
মেঘ মেদুরের ছবিগুলো কত রঙবেরঙের মাখা।

মেঘেরা আমার কবিতার কথা পৃথিবীটা যেন ঘুরে
সীমানা পেরিয়ে ছুটে চলে ওই হাওয়ার রোদ্দুরে।
আকাশটা কত ছায়া মায়া দেয়, দেয় ভালোবাসা সুখ
গ্রহ নক্ষত্র হাতছানি দেয় হই আমি উন্মুখ।

সাদা কালো কত স্বপ্নেরা ডাকে, ডাকে যে পাহাড় নদী
সময়ের স্রোতে ঘুরে ফিরে আসে হারায় নিরবধি।
মেঘে মেঘে আমি খুঁজি যেন ওই আকাশের বিশালতা
মনটা তখন মন থাকে না রে পাই কত স্বাধীনতা।

কখনো কখনো কালো মেঘে ছেয়ে নীরবে আকাশ কাঁদে
নীল কষ্টের বৃষ্টির জলে মাটিতে মিতালি বাঁধে।  
ঝলমলে রূপ সোনালি আকাশে মেঘরোদ্দুরে খেলা
আমাকে শেখায় দুখেতে হাসতে ঝরঝরে সারাবেলা।

আমার আকাশ পৃথিবী জুড়েই দিচ্ছে বিশাল ছাতা
ছাতার ভেতরে আমরা মানুষ রেখেছি সবার মাথা!
 

 

মা লে ক  মা হ মু দ 
আমের ছড়া 

রাত হলো নিঝুম 
চোখ জুড়ে আয় ঘুম
ঝড় নেই নেই ঝড়
গাছে আম পাকছে
পাখিরাও আম খেতে
একে ওকে ডাকছে
ধুপ ধুপ পড়ে আম
যেই কানে শুনছি
তাড়াতাড়ি ভোর হও
প্রহর তো গুনছি!


দুই.

আয় ঝড় আয় রে
মন ছুটে যায় রে
জোরে তুলি হাই রে
আম খেতে চাই রে
গাছতলা দাঁড়িয়ে
ভাবনাটা নাড়িয়ে 
আছি হাত বাড়িয়ে 
তাড়াতাড়ি আয় ঝড় 
আম পড় আম পড়!

 

প্র জী ৎ  ঘো ষ 
গাজার শিশু

আমরা যারা গাজার শিশু
কাঁদি অনাহারে;
বিশ্ব বিবেক আবেগ দিয়ে 
সইতে কি তা পারে?

আমরা যারা গাজার শিশু
উঠছি ভয়ে কেঁপে;
বিশ্ব বিবেক কম্পিত কি 
সেই তরঙ্গ মেপে?

আমরা যারা গাজার শিশু
হচ্ছি গুলিবিদ্ধ;
এই ঘটনায় কারো হৃদয়
হচ্ছে না কি ঋদ্ধ?

আমরা যারা গাজার শিশু
এতিম অভাজন;
কে দেখাবে পথ আমাদের 
কে বা ইশান কোণ? 

আমরা যারা গাজার শিশু
চিকিৎসাহীন প্রাণ;
কে শোনাবে মানবতার
সুস্থ করার গান?

আমরা যারা গাজার শিশু
বোমার সাথে খেলি;
চিনি না কি জুঁই চামেলী
চিনি না রোজ, বেলী।

আমরা যারা গাজার শিশু
নিরুপায় নির্বাক;
বিশ্ব বিবেক জাগ্রত হোক 
এ খেলা মুক্তিপাক।

কোন্ কারণে এই বলিদান 
কোন্ কারণে ধ্বংস;
কোন্ কারণে হৃদয় কাঁদে 
যায় উড়ে বুনো হংস।

আমরা যারা গাজার শিশু
হে খোদা! দয়াময়;
আমাদের তুমি রক্ষা করো
তোমারই হবে জয়।

আমরা যারা গাজার শিশু
অবুঝ কচি প্রাণ;
মাতৃভূমির তরে জীবন 
যাচ্ছি করে দান।

আমরা যারা গাজার শিশু
আর যতক্ষণ বাঁচি;
এই চিৎকার, এই হাহাকার
পৌঁছাক কাছাকাছি।
 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কুবিতে ভর্তি পরীক্ষায় ভুল প্রশ্ন সরবরাহ, আহ্বায়ককে অব্যাহতি 

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহের ঘটনা ঘটেছে। এতে ইউনিটটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা শেষে এ অভিযোগ ওঠে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, ‘সি’ ইউনিটে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদা প্রশ্নপত্র নির্ধারিত থাকলেও কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের একাধিক হলে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের হাতে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্নপত্র তুলে দেওয়া হয়। পরে ভুল বুঝতে পেরে প্রশ্নপত্র পরিবর্তন করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

কুবিতে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত 

যানজটে স্বপ্ন ভঙ্গ কুবির এক ভর্তিচ্ছুর

ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আমরা যারা বিভাগ পরিবর্তন করে মানবিক বিভাগ থেকে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম, আমাদের কেন্দ্র ছিল মূলত সেই বিভাগের জন্য নির্ধারিত। কিন্তু ওই ভবনের কয়েকটি কক্ষে ভুল করে আমাদের কাছে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন দেওয়া হয়। প্রায় ৪০ মিনিট পর বিষয়টি সংশোধন করা হয়।”

তিনি আরও বলেন, “প্রথমে খুব নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। পরে ১ ঘণ্টার পূর্ণ সময় দিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষা মোটামুটি ভালোই হয়েছে।”

চট্টগ্রাম থেকে পরীক্ষা দিতে আসা মোহাম্মদ আবু হানিফ বলেন, “ভুল প্রশ্ন দেওয়ার কারণে পরীক্ষার শুরুতে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। বিষয়টি কক্ষ পরিদর্শকদের জানালে সেটা ফিরিয়ে নিয়ে সঠিক প্রশ্ন দেওয়া হয়।”

এ বিষয়ে ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “মানবিক বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর কাছে ভুল করে ব্যবসায় শিক্ষার প্রশ্ন পৌঁছে যায়। রোল নম্বর যাচাই করে আমরা বিষয়টি শনাক্ত করি এবং তাৎক্ষণিকভাবে সঠিক প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ দেওয়া হয়।”

এদিকে, পরীক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্ন প্রদানের দায়ে ওই ইউনিটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহকে ভর্তি কমিটি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “ঘটনার পর আমি নিজে ওই কক্ষে গিয়েছিলাম। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তারপরও এমন ভুল অনাকাঙ্ক্ষিত এবং তা অপেশাদারিত্বের পরিচায়ক। দায়িত্বরতদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।”

তিনি বলেন, “এ ঘটনার জন্য ইতোমধ্যে উনাকে (আহ্বায়ক) ভর্তি পরীক্ষার সকল কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে উনাকে এ ঘটনার কারণ জানানোর জন্য শোকজ করা হয়েছে।”

ইউনিটের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হয়েছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিনকে এ দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি ফলাফলসহ বাকিসব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।”

অব্যাহতির বিষয়ে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, “আমি এ ধরনের কোনো লিখিত চিঠি পাইনি। লিখিত চিঠি পাওয়ার পর মন্তব্য করতে পারবো।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ