Samakal:
2025-04-19@11:08:53 GMT

বেলা শেষের যাত্রী

Published: 18th, April 2025 GMT

বেলা শেষের যাত্রী

বয়স একসময় প্রবীণে নিয়ে যায় মানুষকে। সেই প্রবীণ মানেই কি সমাজে অবহেলিত, মূল্যহীন? কেনই বা নিজেকে মনে করেন এমন? আবার অন্যদিকে দেখা যায়, প্রবীণদের এড়িয়ে চলতে চায় নবীনরা। অনেক সময় তাদের কথা বা পরিকল্পনাকে অবমূল্যায়ন করার প্রবণতা দেখা যায়। প্রকাশ পায়, তারা যেন কিছুই বোঝেন না বা কিছুই জানেন না! অথচ তারা সারাজীবনের অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করে একটা বাস্তবতায় এসে দাঁড়ায়। তাতে আবেগের চেয়ে বিবেকই বেশি কার্যকর হয়ে ওঠে। আমাদের সমাজে সেই প্রবীণরা অসহায়ের মতো নীরবে অবস্থান করেন। তারা নিজেরা সরে আসেন নবীনের আসর থেকে। তাদের জন্য আছে কি তেমন আয়োজন? না, নেই। 
তাই তো নিজ থেকে বসার জায়গা বানিয়ে নিয়েছেন সুন্দরগঞ্জের তারাপুর ইউনিয়নের প্রবীণরা। জীবন নিয়ে নতুন ভাবনার দ্বার খুলে দেয় তাদের সংগঠন ‘বেলা শেষের যাত্রী’। জীবনের পড়ন্ত বেলায় নিজেরা মিলিত হয়ে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার এক অপরিসীম ভ্রাতৃত্ববোধের দৃষ্টান্ত দেখা গেল এ প্রবীণ-হিতৈষী সংগঠনে।
বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বিআরডিবির উপপরিচালকের পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর অনুভব করতে থাকেন নবীন সমাজে তিনি যেন আলগা আলগা; তখন একাকিত্বের ভাবনাটাও সামনে আসে তাঁর। সে কারণে নিজেদের জন্য কিছু করতে উদ্যোগী হয়ে চৈতন্য বাজারে একটা ঘর নেন। তাঁর বয়সীদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংযোগ ঘটাতে থাকেন। ধীরে ধীরে এর সুফল পেতে থাকেন।  এখন বিকেল হতেই বাড়তে থাকে বয়সীর আগমন। হাসিঠাট্টা, গল্পগুজব, ভালো লাগা-মন্দ লাগা শেয়ার করা, পত্রিকা পড়াসহ আড্ডার আয়োজন বেশ জমে ওঠে নিত্য। কখনও চানাচুর ঝাল, মুড়িমাখার মতো মুখরোচক খাবারের আয়োজন হয়;  কখনও বা চায়ের কাপের চুমুকে চুমুকে জমে ওঠে গল্পের আসর। জমে থাকা কথা, ভাবনারা যেন ডানা পেয়ে বসে। উৎসাহী বা কৌতূহলী যারা শুনেছেন তারা কখনও-সখনও আসেন। কুশল বিনিময়, ভাব বিনিময় করেন তাদের সঙ্গে। নবীনরাও উঁকি মেরে উপভোগ করেন কখনও কখনও। এ সংগঠনের উদ্যোক্তা বিনয় কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘এ আয়োজনে একাকিত্ব আর অবহেলা যেন দূরে সরে যায়। বেঁচে থাকার জন্য পাই নবউদ্যম। মনে হয়, আছি তো আমরাও। আনন্দ পাই, মনে বল পাই, ভালো লাগা আসে বুকের ভেতর।’ তারা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন, এই প্রবীণরা সমাজে যা দেওয়ার দিয়েছেন ও দিচ্ছেন; এখনও তাদের বেলা শেষ হয়নি; তারা বেলা শেষের যাত্রী। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব ণ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্ধুগো শোনো...

শ্রোতা প্রাণ খুলে গাইছে, কখনও ফেটে পড়ছে উল্লাসে– এমন দৃশ্যের সাক্ষী হতে চান প্রায় সব শিল্পী। দিলশাদ নাহার কনা এর ব্যতিক্রম নন। নন্দিত এই শিল্পীর চাওয়া পূরণ হয়েছে বহু বছর আগেই; বরং তাঁর গাওয়া গানগুলোর সঙ্গে অনুরাগীদের উল্লাসে মেতে ওঠার দৃশ্য প্রতিনিয়ত দেখা যায়। শুধু তাই নয়, এমন অনেক গান আছে, যা  দীর্ঘ সময় শ্রোতামনে অনুরণন তুলে যাচ্ছে। যার সুবাদে কনা নিজেও রপ্ত করে ফেলেছেন উৎসব আয়োজনগুলো জমকালো করে তোলার মন্ত্র। বেশি দূরের নয়, সদ্য পেরিয়ে আসা ঈদ আর বৈশাখী আয়োজনের দিকে যদি নজর দিই। তাহলে দেখা যাবে এই দুই উৎসবের জনপ্রিয় গানগুলোর বেশির ভাগই কনার গাওয়া। শ্রোতার মুখে মুখে ফিরছে ‘জ্বীন-৩’ সিনেমায় ইমরানের সঙ্গে গাওয়া তাঁর ‘কন্যা’ গানটি। পাশাপাশি ঈদের সিনেমা ‘জংলি’-তে নন্দিত সুরকার প্রিন্স মাহমুদের কথা-সুর ও সংগীতায়োজনে গাওয়া ‘বন্ধুগো শোনো’ গানটিও প্রশংসা কুড়িয়ে নিচ্ছে। এই গানেও কনার সহশিল্পী ইমরান। এর বাইরেও আসিফ আকবরের সঙ্গে দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া অডিও গান ‘ভীষণরকম ভালোবাসি’, আরিটিভির ‘আর মিউজিকে’ অনুষ্ঠানে গাওয়া ফিউশন গান ‘বাউলা কে বানাইলো রে’, ‘মন দিতে চাই’ নাটকে ইমরানের সঙ্গে গাওয়া ‘ভালোবাসা এমনই হয়’, ‘পায়েল’ নাটকে সালমান জাইমের সঙ্গে গাওয়া ‘বুকে লাগে টান’, ‘মন দুয়ারী’ নাটকে নাজির মাহমুদের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার ব্যথায় আমি’ এবং ‘হৃদয়ে রেখেছি গোপনে’ নাটকে ইমরানের সঙ্গে গাওয়া ‘তুই আমার ভালোবাসা’সহ আর বেশ কিছু গান শ্রোতার মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে। তাই সময়টা যে এখনও কনার দখলে, তা নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। প্রায় দুই দশক ধরে গানের ভুবনে কনার বিচরণ। দীর্ঘ সংগীত সফরে শিশুশিল্পী থেকে হয়ে উঠেছেন একজন পরিণত ভার্সেটাইল শিল্পী। তা সম্ভব হয়েছে গানের প্রতি অগাধ ভালোবাসা আর নিরলস সংগীতচর্চার মধ্য দিয়ে। শ্রোতার কাছে তার সব নিবেদন। সে কারণে আমরা তাঁকে দেখি, দিনমান দেশ-বিদেশের মঞ্চে ছুটে বেড়াতে। গানে গানে সিনেমা, নাটক, অ্যালবাম, বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেল থেকে শুরু করে রেডিও, টিভি আয়োজনসহ সব মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাঁর কণ্ঠ। খ্যাতির মোহে নাকি সাত সুরের মায়াজালে বাঁধা পড়েছেন বলে এই ব্যস্ততা? সে প্রশ্ন করলে কনা হেসে বলেন, ‘খ্যাতির মোহে না, শিল্পী পরিচয় ভালোবাসি বলেই সংগীতে ডুবে আছি। শ্রোতার ভালোবাসা পেয়েছি বলে তাদের প্রত্যাশা পূরণের দায় অনুভব করি। তাই শ্রোতা যতদিন নতুন কিছু চাইবেন এবং চেষ্টা করে যাব তাদের নতুন কিছু দেওয়ার।’ প্রত্যাশা পূরণ করতে গিয়ে এসব মাধ্যমে সরব থাকার চেষ্টা, তা কি মনের মধ্যে বাড়তি কোনো চাপ তৈরি করে না? ‘একদমই না। কারণ যখন যা করি, তা আনন্দ নিয়েই করি। তাই কোনো কাজে আলাদা কোনো চাপ অনুভব করি না। তা ছাড়া জনপ্রিয়তার মোহে যে কোনো কাজ করার ইচ্ছা কখনও ছিল না। তাই প্রতিটি কাজে থাকে যত্ন ও ভালোবাসার ছাপ।’ কনার এ কথায় বোঝা গেল, সংগীতের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা নিবিড় ভালোবাসার। তাই দিনরাত গানের আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে ভালোবাসেন। এ কারণে গায়কীতে বারবার নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে উপস্থাপন করে চলেছেন। সে কারণে আধুনিক মেলো-রোমান্টিক গান থেকে শুরু করে রক, পপ, টোকনো, ফোক ফিউশনসহ বিভিন্ন ধাঁচের গান তাঁর কণ্ঠে শোনার সুযোগ পান সংগীতপ্রেমীরা। আগামীতেও সেই সুযোগ পাবেন– সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কনা নিজে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাথা ঘোরার সমস্যা হলে কেন চেকআপ করা জরুরি
  • বিমুখতা নয়, সচেতনতা
  • মন ভালো করার জাপানি উপায় ‘রুইকাতসু’
  • রাজনৈতিক উপন্যাসের স্মরণীয় কণ্ঠস্বর
  • হালদায় ডুবলেন মঞ্জু সঙ্গে পরিবারের স্বপ্নও
  • শিল্পী পরিচয় ভালোবাসি বলেই সংগীতে ডুবে আছি: কনা
  • বন্ধুগো শোনো...