চুরির অভিযোগে যুবককে গাছে বেঁধে রাতভর নির্যাতন
Published: 18th, April 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙায় চোর সন্দেহে এক যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে সারারাত নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার হারদি ইউনিয়নের হারদি গ্রামের খালপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ওই যুবককে স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। যুবককে নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ পেলে স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হয়।
নির্যাতনের শিকার যুবকের নাম বজলু ফরাজী (৩৫)। তিনি উপজেলার কুমারী ইউনিয়নের ফারাজীপাড়ার পচা ফারাজীর ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার রাতে হারদি গ্রামের খালপাড়ার কালু হোসেনের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রীর ম্যাক্সি চুরি হয়। ওই কাপড় পরে বজলু ফরাজী বিভিন্ন বাড়ির জানালা দিয়ে উঁকি দেন। ওই দিন গভীর রাতে কালু প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘুম থেকে উঠে লক্ষ্য করেন, এক প্রতিবেশীর বসতবাড়ির জানালা দিয়ে ম্যাক্সি পরিহিত একজন উঁকি দিচ্ছে। এ সময় চোর সন্দেহে তিনি পেছন থেকে তাঁকে জাপটে ধরেন। তাঁর চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে এসে বজলুকে আটক করে কালুর বাড়ির পাশের একটি কাঁঠাল গাছে বেঁধে সারারাত নির্যাতন করে।
এ ঘটনায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মারধরের এক পর্যায়ে বজলুর পরিহিত ম্যাক্সিতে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি আগুন লাগানোর চেষ্টা করছেন। এ সময় বজলু প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করছিলেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে হারদি ইউনিয়নের খালপাড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম সমকালকে বলেন, রাতের আঁধারে চুরি করতে এলে বজলু নামে একজনকে আটক করে এলাকাবাসী। তাঁকে ধরে অনেকে মারধর করেছে। সকাল ৬টার দিকে তিনি বিষয়টি জানতে পেরে ফাঁড়ির পুলিশকে খবর দিয়ে ওই যুবককে প্রশাসনের জিম্মায় তুলে দিয়েছেন।
আলমডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুর রহমান সমকালকে জানান, চুরি করতে
গিয়ে জনতার হাতে আটক ও নির্যাতনের শিকার হওয়া যুবক বর্তমানে পুলিশের হেফাজতে
রয়েছেন। অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ র র অভ য গ য বকক
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে ধর্ষণে বাবার ফাঁসি
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবা আলতাপ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত আলতাপ হোসেন (৪৬) সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ গ্রামের মৃত সাদেক আলী মৃধার ছেলে। তিনি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা হুদাপাড়া গ্রামে শ্বশুর বাড়িতে বসবাস করতেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পার্শ্ববর্তী গাংনী ইউনিয়নে ভুক্তভোগী কিশোরীর বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকদিন পর পেটে ব্যথা ও বমি বমি ভাব হলে পরীক্ষা করা হয়। এতে ২-৩ মাসের অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি ধরা পড়ে।
ভুক্তভোগী জানায়, ২০২৩ সালের ৫ ডিসেম্বর তার মা বোনের বাড়িতে গেলে ওইদিন রাতে বাবা ঘরে একা পেয়ে তাকে ধর্ষণ করে। হত্যার ভয় দেখিয়ে পরবর্তী ২-৩ মাসে আরও ৭-৮ বার ধর্ষণ করে তার বাবা। ২০২৪ সালের ৭ মার্চ ভুক্তভোগী কিশোরীর মা বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০(সংশোধিত ২০২০)-এর ৯(১) ধারায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে আলমডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বাবর আলী গত ২০২৪ সালের ১১ ডিসেম্বর অভিযুক্ত আলতাপের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ৮ স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে মামলায় রায় ঘোষণা করেন আদালত।
চুয়াডাঙ্গা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (স্পেশাল পিপি) এম এম শাহজাহান মুকুল বলেন, কিশোরী ধর্ষণ মামলায় বাবা আলতাপ হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। জরিমানার আদেশ তার (দণ্ডিত ব্যক্তির) জীবদ্দশায় অথবা মৃত্যুর পরবর্তী পর্যায়ে প্রথম দায়-দেনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, আদালত এটা রায়ে উল্লেখ করেছেন।’