ভারতীয় কোচ সঞ্জয় বাঙ্গারের সন্তান অনন্যা বাঙ্গার। গত বছর হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি ও লিঙ্গ নিশ্চিতকরণের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আরিয়ান থেকে অনন্যা হয়েছেন সঞ্জয়ের এই সন্তান। অবশ্য এর আগে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটও খেলেছেন। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাল্লানটপকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গুরুতর অভিযোগ করেছেন অনন্যা। বলেছেন, ক্রিকেটাররা একসময় তাকে নগ্ন ছবি পাঠাতেন।

লালানটপ পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ২৩ বছর বয়সী অনন্যা জানান, ছোটবেলা থেকেই নিজেকে মেয়ে হিসেবে অনুভব করতেন। তার ভাষায়, ‘আমি আট-নয় বছর বয়সেই জানতাম, আমি একজন মেয়ে। মায়ের কাপড় পরতাম, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে কল্পনা করতাম নারীরূপে।’  

ক্রিকেট ক্যারিয়ারে নানাভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন বলেও জানান অনন্যা। তিনি বলেন, ‘অনেক ক্রিকেটারই আমাকে নগ্ন ছবি পাঠিয়েছে। কেউ কেউ সামনাসামনি অপমান করলেও পরে ছবি তুলতে চেয়েছে, এমনকি অশালীন প্রস্তাবও দিয়েছে।’

এক প্রবীণ ক্রিকেটারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি যখন নিজের পরিস্থিতি বোঝাতে চাই, সে বলে, ‘চলো গাড়িতে যাই, আমি তোমার সঙ্গে রাত কাটাতে চাই।’

সাক্ষাৎকারে অনন্যা ভারতীয় ক্রিকেট–কাঠামো নিয়ে গুরুতর কিছু অভিযোগ তোলেন, ‘আমি মুশির খান, সরফরাজ খান, যশস্বী জয়সোয়ালের মতো নামকরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে খেলেছি। আমাকে তখন নিজের বিষয়ে গোপনীয়তা বজায় রাখতে হয়েছে; কারণ, আমার বাবা ছিলেন পরিচিতমুখ। ক্রিকেটজগৎটা নিরাপত্তাহীনতা আর বিষাক্ত পুরুষতান্ত্রিকতায় ভরা।’

বর্তমানে অনন্যা যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারে বসবাস করছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডার অধিকার নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অনন য

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের ভিন্ন ভাষ্য

কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার একটি মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে এক শিক্ষার্থীর (১৩) মৃত্যু হয়েছে। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, বাড়ি যেতে না পারায় মেয়েটি লাফ দেয়। তবে স্বজনেরা দাবি করেছেন, এখানে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতি থাকতে পারে।

গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বিষয়টি রাতেই জানাজানি হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মাদ্রাসার পাঁচতলার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয় সে।

মাদ্রাসার মুহতামিমের ভাষ্য, ঈদের ছুটির পর সপ্তাহখানেক আগে ওই শিক্ষার্থীর নিয়মিত ক্লাস শুরু হয়। তবে মাদ্রাসার আবাসিকে থাকতে সে অনাগ্রহী ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে সে তার মাকে ফোন করে বাড়ি যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। পরে রাতে মাদ্রাসার একটি জানালার ফাঁক দিয়ে নিচে লাফিয়ে পড়ে।

স্থানীয় লোকজন বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তাঁরা কুমিল্লার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করতে না পেরে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়েটিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ওই শিক্ষার্থীর মামা বলেন, তাঁরা চেয়েছিলেন ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করতে, তবে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। তাঁরা থানায় অভিযোগ করবেন। পুরো ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের দাবি জানান।

মেয়েটির এক স্বজন দাবি করেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। জানালার একটি বড় ফাঁক দিয়ে মেয়েটি নিচে পড়ে যায়। যদি গ্রিল সঠিকভাবে থাকত, এমনটা না–ও হতে পারত।

মাদ্রাসার মুহতামিম বলেন, ‘দিবাগত রাত তিনটার দিকে স্থানীয় এক ব্যক্তি রাস্তায় মেয়েটিকে পড়ে থাকতে দেখে আমাকে ফোন করেন। পরে আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই। জানালার ওই অংশে ফাঁক ছিল, তবে সেটি আগে তেমনভাবে আমাদের নজরে আসেনি।’

এ বিষয়ে লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। জানালার একটি অংশে রডের ফাঁক আছে, সেটি বেশ বড়। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান দিয়েই মেয়েটি পড়েছে। তবে তদন্ত চলছে। মেয়েটির লাশের ময়নাতদন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হবে। যৌন নিপীড়নের কোনো অভিযোগ থাকলে, সেটিও পরীক্ষা করা হবে। এখন পর্যন্ত মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বা পরিবারের কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ